অষ্টমীর সন্ধি পুজো হওয়া মানেই নবমী শুরু হয়ে যাওয়া। নবরাত্রির শেষ দিনে অর্থাৎ নবম দিনে দেবী দুর্গাকে সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করা হয়। নবমীর সন্ধের আরতির পর বিষাদের সুর বাজে সর্বত্র। দেবী দুর্গা এদিন সিদ্ধিদাত্রী রূপে পদ্মফুলের উপর উপবিষ্ট হয়ে হাতে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম ধারণ করেন। যক্ষ, গন্ধর্ব, কিন্নর, সাপ, দেব-দেবী এবং মানুষ সকলেই তাঁর কৃপায় সিদ্ধি লাভ করেন। আবার অনেকে এইদিন সরস্বতীর রূপও মনে করা হয়। কথিত আছে যে, নিয়মানুযায়ী দুর্গা পূজা করলে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা লাভ হয়। নবমীর সন্ধ্যেবেলায় দেবীর মহা আরতি, বলিদান করা হয়।
পৌরাণিক কাহিনি
শাস্ত্র মতে মহিষাসুরকে বধ করার জন্য দেবী পার্বতী দুর্গার রূপ ধারণ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়। মহিষাসুর ছিল এক ভয়ংকর অত্যাচারী ও শক্তিশালী অসুর। যার সঙ্গে যুদ্ধ করা সমস্ত দেবতার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল একটা সময়। অসুর রাজ ও দৈত্যসেনাদের বিশ্বাস হয়ে গিয়েছিল যে তারা এতটাই ক্ষমতাশালী যে স্বর্গরাজ্য জয় করে মর্তবাসীদের রাজ করতে সক্ষম। স্বর্গরাজ্যে হানা দিলে সব দেবতারা মহাদিদেবের কাছে ছুটে যান ও এই সমস্যা থেকে প্রতিকার চেয়ে প্রার্থনা করেন। সেইসময় মহাদেব জানিয়েছিলেন, অসুরকূলকে বিনাস করতে পারবেন একমাত্র মহিষমর্দিনী। তাই আদিশক্তি দুর্গার রূপ ধারণ করে মহিষাসুরের সঙ্গে টানা ৮ দিন যুদ্ধ করে নবম দিনে মহিষাসুরকে বধ করেন। সেই থেকে দুর্গাপূজা শুরু হয়।
গুরুত্ব
মহানবমীর দিন নিয়ম মেনে দেবীর পুজো করলে সাফল্য, শক্তি ও সম্পদ আসে। সিদ্ধিদাত্রী দেবী মহাবিদ্যার আটটি সিদ্ধি দান করেন। সেইকারণে এদিন সমস্ত ভক্তরা আন্তরিক চিত্তে তাঁর পূজা করেন। হিন্দুদের বিশ্বাস যে, সমস্ত দেব-দেবীরাও দেবী সিদ্ধিদাত্রীর কাছ থেকে সিদ্ধি লাভ করেছেন।
সিদ্ধিদাত্রী মন্ত্র
সিদ্ধ গন্ধর্ব যক্ষ্যাদিরসুরৈরমরপি।
সেবামনা সর্বদা ভূয়াত সিদ্ধিদা সিদ্ধিদায়িনী।
তাৎপর্য
এই দিনে দেবী সিদ্ধিদাত্রীর আরাধনা করলে ভক্তরা দুর্গাপুজোর শুভ ফল লাভ করেন। মহানবমীও এই কারণে পুজো করা হয়। তাতে জীবনে সাফল্য লাভ হয় অতিসহজে। এইদিনে বিশেষ আরতি করা হয়। সেই আরতি করলে জীবনের সব ইচ্ছা পূরণও হয়।