আশ্বিনের শারদপ্রাতে , মহা সপ্তমীতে দুর্গার সপ্তম রূপ কালরাত্রির আরাধনা করা হয়। দেবীর এই ভয়ংকর রূপের কারণেই কালরাত্রি বলা হয়। কারণ দেবীর গায়ের রং অন্ধকারের মত কালোষ সপ্তমী তিথির পুজো দুর্গাপুজোর অন্যান্য দিনের মত সকালেই পুজো করা হয়। তবে পাত্রে বিশেষ পুজো আচারের সঙ্গে দশভুজার আরাধনা করা হয়। দেবীর এই রূপের পূজকরা কালের হাত থেকে রক্ষা পান। তার মানে যাঁরা কালরাত্রির পুজো করেন, তাঁদের অকাল মৃত্যু হয় না।
দেবী কালরাত্রি
দেবীর এই রূপের প্রচণ্ড ভীতিপ্রদ রূপ। নামের সঙ্গে দেবীর গায়ের রঙ অন্ধকারের মত ঘোর কালো। পুরাণ অনুসারে দুই রাক্ষস শুম্ভ ও নিশুম্ভর দৈত্যসেনাকে দেখে প্রচণ্ড রেগে গিয়ে এই ভয়ংকর রূপ ধারন করেন দেবী। শ্যামলা রূপ থেকেই কালরাত্রি দেবীর আর্বিভাব।
দেবী কালরাত্রির চুল বিক্ষপ্ত, গলায় মালা বিদ্যুতের মত উজ্জ্বল। সকল অসুর শক্তির বিনাসকারীও বলা হয়। এই দেবীর পুজো করা হয় সাধারণত রাতে। ‘ওম হ্রীম ক্লেইন চামুন্ডায়াই বিচাই ওম কালরাত্রি দৈব্যে নমঃ এই মন্ত্র জপ করলে দেবীর আশীর্বাদ পাওয়া যায় বলে ধারনা।
কালরাত্রি দেবী সিদ্ধমন্ত্র জপের মাধ্যমেই অশুভ শক্তির বিনাস হয়। এই ভয়ংকর রূপ ভক্তদের কাছে মাতৃরূপ বলে বোঝানো হয়, তাই দেবীকে শুভংকরীও বলা হয়। এছাড়া কালরাত্রিকে সকল সিদ্ধির দেবী হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তন্ত্রশাস্ত্র মতে, তন্ত্রসাধকরা সিদ্ধমন্ত্র জপ করে বিশেষ পুজো করেন। ভূত, প্রেত, প্রেতাত্মা, রাক্ষস ও সমস্ত পৈশাচিক শক্তির বিনাস হয়।
দেবী কালরাত্রির চারটি হাত। এক হাতে অসুরের ঘাড় ধরে থাকে, অন্যহাতে তরবারি দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে ভয়ংকর রূপ নিয়ে ধ্বংস করে। কালিকার বাহন হল গাধা বা গর্ধভ। যে প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রমী ও নির্ভীক।
এদিন দেবীকে লেবু ও লাল জবা ফুলের মালা ও তেলের প্রদীপ দিয়ে পুজো করুন। আরতি করার সময় সিদ্ধ পঞ্জিকা স্ত্রোত, কালী পুরাণ, কালী চালিসা, অর্গলা স্ত্রোতম পাঠ করার নিয়ম। এদিনের পুজোয় নৈবেদ্য় হিসেবে গুড় ও গুড়ের তৈরি উপাদেয় খাবার নিবেদন করা উচিত।