হিন্দু পূজা-পার্বণের রীতি অনুসারে দেবতার চরণামৃত অত্যন্ত পবিত্র এবং একপ্রকার প্রসাদ হিসেবেই গ্রহণ করেন ভক্তরা। এই চরণামৃতকেই অনেক সময় পঞ্চামৃতও বলা হয়ে থাকে। পঞ্চামৃত অর্থাত্ পাঁচটি উপাদানে তৈরি একটি মিশ্রণ। মধু, তরল গুড়, গরুর দুধ, দই ও ঘি, প্রধানত এই পাঁচটি উপাদান দিয়েই পঞ্চামৃত তৈরি হয়। তবে অঞ্চল ভেদে উপাদানের হেরফের লক্ষণীয়। অনেক ক্ষেত্রে পঞ্চামৃততে পাকা কলাও ব্যবহার করা হয়।
শাস্ত্রমতে পঞ্চামৃত মানব শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী। দেবতাদের প্রতি উত্সর্গীকৃত পঞ্চামৃত পানে শরীরে ইতিবাচক অনুভূতি আসে। শাস্ত্রের এই নিদানই সত্য বলে দাবি করছে আয়ুর্বেদ। বারাণসীর এসএএস আয়ুর্বেদ মেডিকেল কলেজের মেডিকেল অফিসার বৈদ্য প্রশান্ত মিশ্র জানাচ্ছেন পঞ্চামৃতের ঔষধি গুণ রয়েছে।
এটি শরীরের সাতটি উপাদান বৃদ্ধি করে। পঞ্চামৃত পানে দেহে রক্ত, রস, মাংস, চর্বি, হাড়, মজ্জা, শুক্র বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত এটি পানে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং এটি যে কোনো সংক্রামককে প্রতিহত করতে পারে। তবে তিনি জানিয়েছেন, পঞ্চামৃত তৈরীর সময় সকল উপাদান একটি নির্দিষ্ট পরিমাণেই ব্যবহার করা উচিত। তিনি আরো জানিয়েছেন, পঞ্চামৃত সবসময় কাঁচের অথবা রুপোর পাত্রেই রাখা উচিত।
পঞ্চামৃতের মধ্যে যদি তুলসী পাতা রাখা হয়, তাহলে তা এর গুণগত মান আরও উন্নত করে। পঞ্চামৃত পানে যেমন বহু রোগ প্রতিহত হয় তেমন এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও অত্যন্ত কার্যকরী হয়। একসঙ্গে কখনোই ১-৩ চামচের বেশি চরণামৃত পান করা উচিত নয়, এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ। অল্প পরিমাণে পান করলেই ভালো ফল মিলবে। সর্বদা ডান হাতে চরণামৃত গ্রহণ করুন, বাম হাতটি তার নিচে রাখুন। যেদিন চরণামৃত তৈরি হচ্ছে, তার ঠিক কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা শেষ করে ফেলা উচিত।