সম্প্রতি সাত পাকে বাধা (7 Pheras)পড়েছেন বলিউডের অত্যন্ত জনপ্রিয় দুই অভিনেতা ও অভিনেত্রী। আপাতত মিসেস অ্যান্ড মিস্টার হয়ে গিয়েছেন আলিয়া (Alia Bhatt) ও রণবীর (Ranbir Kapoor)। ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে খুব জাঁকজমকভাবেই বিয়ে করেছেন দুজনে। রূপকথা বিয়ে নিয়ে এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে আলিয়া-রণবীরের বিয়ের খবর।
বহু প্রচলিত ধারাকে ভেঙে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলি সম্পন্ন করেছেন আলিয়া ও রণবীর। তবে এখানে জানিয়ে রাখা ভাল, ভারতীয় বিয়ের রীতিতে রয়েছে ৭টি ফেরা বা সাত পাকে বাধা পড়া। এই ঐতিহ্যকেও ভেঙে ফেলেছেন এই তারকা দম্পতি। সাতের বদলে চার পাকে বাধা পড়েছেন তাঁরা। তবে এব্যাপারে আলিয়া ভাটের দাদা রাহুল ভাট জানিয়েছেন, কাপুরদের একজন বিশেষ পণ্ডিত ছিলেন, যিনি নাকি এর তাত্পর্য ব্যাখ্যা করেছিলেন।
তাঁর কথায়, আশ্চর্যের বিষয় হল, বিয়েতে সাত নয় চারটি পাক ঘোরা হয়েছিল। এক পণ্ডিত ছিলেন, তিনি জানিয়েছেন, বিয়েতে ভাইয়ের উপস্থিতি প্রয়োজন। আমিও ঠিলাম সেই অনুষ্ঠানে। ওই পণ্ডিত,বহু বছর ধরে কাপুর পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। তিনি সেই চার ফেরার তাত্পর্য ব্যাখ্যা করেছেন।
ওই পণ্ডিতের মতে, এক হোতা হ্যায় ধর্ম কে লিয়ে, এক হোতা হ্যায় সন্তানকে লিয়ে। তাই এই বিষয়টি ছিল বিয়ের অন্যতম আকর্ষণীয়। রাহুল একাধিক জাতি ও সম্প্রদায়ের পরিবারে জন্ম। আমরা আগে কখনও এটা দেখিনি। আমি এমন একটা পরিবারের সন্তান, সেখানে সব ধর্মের মানুষজন রয়েছে। আমার কাছে এটা অন্যরমক। যদিও কী কারণে চার পাক ঘোরবার সিদ্ধান্ত, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি রাহুল।
এক একটা পাকের এক একটা আলাদা তাৎপর্য, সব নাকি বর কনেকে ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছেন বিয়ের আসরে উপস্থিত চারজন পুরোহিত। এটাই নাকি কাপুর পরিবারের রীতি। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, বিয়েতে সাত পাকে ঘোরার রীতি রয়েছে। বিয়ে মানেই হল একটি লৌকিক আচার। বাঙালি হিন্দু বিবাহের লৌকিক আচার বহুবিধ। হিন্দু বিবাহের একটি অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হলে সাত পাকে ঘোরা। বিয়েতে আগুণের কুন্ডলীর চারপাশে বর-কনেকে ঘুরতে দেখা যায়। একেই বলে সাত পাকে বাঁধা পড়া। মূলত এর মাধ্যমেই অগ্নি দেবতাকে সাক্ষী করা হয়। এই সময় একে-অপরকে সাতটি প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়।
প্রথম পাক : পাত্র ও পাত্রী দুজনেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। পাত্র যেমন তার সন্তান ও স্ত্রীর সমস্ত দায়িত্বের প্রতিজ্ঞা নেন, তেমনই পাত্রী দায়িত্ব নেন তার পরিবারকে ভালো রাখার। এ ছাড়া তিনি নতুন সংসারের সব দায়িত্ব নেওয়ার জন্যও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।
দ্বিতীয় পাক : পাত্র প্রতিজ্ঞা করেন একসঙ্গে তারা পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করবে। পাত্রী প্রতিজ্ঞা করেন সুখ-দুঃখে সবসময় স্বামীর পাশে থাকার। পরিবর্তে থাকবে স্বামীর থেকে সারাটা জীবন আন্তরিকভাবে ভালোবাসার দাবি।
তৃতীয় পাক : এই পাকে পাত্র ভবিষ্যতের সন্তান-সন্ততিদের দীর্ঘজীবনের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি সমৃদ্ধশালী হয়ে ওঠার আশাও রাখেন। অন্যদিকে পাত্রী প্রতিজ্ঞা করে বলেন, যে আমার কাছে স্বামীই সব। তাঁকেই সারাজীবন ভালোবাসব।
চতুর্থ পাক : একে অপরকে সারাজীবন আনন্দে ভরিয়ে রাখার প্রতিজ্ঞা নেয় পাত্র-পাত্রী। পাশাপাশি সারাজীবন একে অপরকে সব দিক থেকে পরিপূর্ণতা দেওয়া ও একে ওপরের পাশে থাকার প্রতিজ্ঞাও করে।
পঞ্চম পাক : দুজনেই দুজনকে অপার ভালোবাসা দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নেন। যাতে তারা সারাজীবন দুজনের সন্মান বজায় রাখতে পারেন।
ষষ্ঠ পাক : দুজনে দুজনের পাশে থেকে ভালোবাসা ভাগ করে নেওয়ার অঙ্গিকার জানায়। তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন যে, কেউ কাউকে ছেড়ে কখনোই যাবেন না। একসঙ্গে সারা জীবন সুখে-দুঃখে কাটিয়ে দেবেন।
সপ্তম পাক : এই পাকে তারা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে স্বীকার করে নেন। তারা প্রতিজ্ঞা করেন এখন থেকে আমরা একই সুত্রে বাঁধা। আমাদের একে অপরের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা একে অপরকে সম্মান করব। আর নিজেদের সম্পর্কটাকে সততা, দায়িত্ব ও বিশ্বাস দিয়ে পরিপূর্ণ রাখব।
আরও পড়ুন: Vastu Tips: ভোগ নিবেদনের সময় এই ভুলগুলি এড়িয়ে চলুন! নইলে হতে পারে চরম বিপদ