হিন্দুধর্মে (Hinduism) ঈশ্বরের আরাধনার নানা পদ্ধতির কথা শাস্ত্রে বর্ণনা করা হয়েছে। ভিন্ন দেবদেবীর পূজার রীতিও আলাদা। আলাদা দেবদেবীর আরাধনার উপাচারও আলাদা। একটি উপাদানও অমিল হলে পুজো সম্পূর্ণ হয় না। আজ আমরা এমনই একটি পূজা সামগ্রীর কথা বলব যা না থাকলে হিন্দুধর্মের দেবদেবীর পুজো (Bell in Worship) প্রায় অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ‘ঘণ্টা’ (Ringing the Bell)। অসংখ্য ভক্ত ঘণ্টার সম্পর্কে জানেন। অনেকেই পূজার সময় ঘণ্টার ব্যবহারও করেন। তবে সম্ভবত অনেকেই জানেন না, কেন পূজার সময় ঘণ্টা ব্যবহার করা হয়? ঘণ্টা বাজানোর অর্থই বা কী?— অনেকেই এই ব্যাপারে অজ্ঞাত। অতএব, আসুন দেখা যাক, ঘণ্টা বাজানোর সঙ্গে পূজার সম্পর্ক কোথায়? বাস্তুশাস্ত্রই বা ঘণ্টা বাজিয়ে পূজা করার পক্ষে সওয়াল করছে কেন? ঘণ্টা বাজানোর সময় কোন কোন বিষয়েই বা খেয়াল রাখা দরকার একজন ভক্তের? আসুন, দেখা যাক।
বাস্তুশাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন, পূজার সময় ঘণ্টা বাজানো অত্যন্ত পবিত্র কর্ম। সেই কোন প্রাচীন কাল থেকে, মন্দিরের প্রবেশপথের মাথায় ঘণ্টা স্থাপন করার ঐতিহ্য চলে আসছে। শাস্ত্র অনুসারে, ঘণ্টা না বাজিয়ে আরতি করলে সেই আরতি কিন্তু অসম্পূর্ণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। বস্তুত, ঘণ্টা বাজালে এক বিশেষ ধরনের ধ্বনি তৈরি হয় বলে মনে করা হয়। এই ধ্বনি তৈরি করে বিশেষ ধরনের প্রতিধ্বনি। ধ্বনি ও প্রতিধ্বনি মিলে আশপাশের পরিবেশে তৈরি করে এক ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ। এই প্রবাহ আনে শান্তি এবং শুদ্ধতার ভাব। ভক্ত এবং চারপাশের প্রত্যেক জীবন্ত বস্তুর প্রাণ ভরে যায় এক অনাবিল আনন্দে।
শাস্ত্রে এও বলা হয়েছে যে, ঘণ্টাধ্বনি ঈশ্বরের অস্তিত্বের অনুভূতি প্রদান করে। ঈশ্বরের মূর্তিতে ফুটে ওঠে প্রাণ! ফলে ঈশ্বরের আরাধনা সফল হয়। পূজার ফল পায় ভক্ত।
এও বিশ্বাস করা হয় যে, ঘণ্টারধ্বনির কারণে যে ইতিবাচক শক্তি তৈরি হয় তা আশপাশের পরিবেশ থেকে নেতিবাচক শক্তিকে দূরে হঠিয়ে দেয়। ফলে মানব মনে সকল উদ্বেগের নাশ হয়। দেহমনে প্রশান্তি লাভ করা সম্ভব হয়। এমনকী গৃহে কোনও অশান্তির কারণ তৈরি হলেও তা দূরে সরে যায়।
বাস্তু এবং জ্যোতিষীদের মতে, ঘণ্টাধ্বনিতে ঈশ্বরও প্রসন্ন হন। শাস্ত্র অনুসারে, প্রত্যেক দেবদেবীর ঘণ্টার মধুস্রাবী ধ্বনি অত্যন্ত প্রিয়। একইরকম প্রিয় শঙ্খধ্বনি এবং গঙ্গাজল। পূজার সময় এই উপাদানগুলির ব্যবহারে দেবদেবীরা অত্যন্ত প্রসন্ন হন ও ভক্তের প্রতি আশীর্বাদ বর্ষণ করেন।
এছাড়া, পূজার সময় প্রত্যেক ভক্তের আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত যেমন ঈশ্বরের মূর্তির পূজার সঙ্গে ঘণ্টারও পূজা করতে হবে ধূপ, রঙিন চাল এবং ফুল দিয়ে। পাঠ করতে হবে ॐ ভূর্ভূঃ স্বাঃ গরুড়ায় নমঃ মন্ত্রটি।
(Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)