বিদ্যা ও সঙ্গীতের আরাধ্যা দেবী সরস্বতী আরাধনাকে কেন্দ্র করে আগামী ২৬ জানুযারি ধুমধাম করে সরস্বতী পুজো পালিত হবে। করোনার আতঙ্কে ভুলে সকল পড়ুয়া সরস্বতী পুজোর জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করা হয়। সরস্বতী পুজোর দিনকে শ্রীপঞ্চমী, মাঘ পঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। শুধু গ্রামবাংলাতে নয়, বিহার, ওড়িশা, উত্তর ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলংকাতেও সরস্বতী পুজো পালন করা হয়। এদিন ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এই দিন শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণের প্রথাও প্রচলিত। পূজার পরের দিনটি শীতলাষষ্ঠী নামে পরিচিত। কোনও কোনও হিন্দু পরিবারে সরস্বতী পূজার পরদিন অরন্ধন পালনের প্রথা রয়েছে।
সরস্বতী পুজো বাংলার ঘরে ঘরে, পাড়ায়, পাড়া, স্কুলে-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও সরস্বতী পুজো পালন করা হয়। বাগদেবীর আরাধনায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে পুরোহিতের। এবছরের পুষ্পাঞ্জলি দেওযার সময়ও কম। মাত্র ৫ ঘণ্টা। তার মধ্যেই পুজোর সব আয়োজন সেরে ফেলতে হবে। পুরোহিত ছাড়াও আপনি সরস্বতী পুজো করতে পারেন। কীভাবে করবেন পুজোর আয়োজন, জেনে নিন এখানে…
পুজোয় কী কী লাগবে
সরস্বতী পুজোর আগের দিন প্রস্তুতিতে কোনও ত্রুটি থেকে গেল কিনা, তাও দেখে নিন। সরস্বতী পুজোতে প্রথমেই লাগবে বাগদেবীর মূর্তি, পলাশ ফুল, আমপাতা, বেলপাতা, কাঁচা হলুদ, সিঁদুর, আতপ চাল, দুর্বা, পাঁচ রকমের ফল, সাদা কাপড়, কলস, সুপুরি, পান পাতা, ধুপকাঠি, প্রদীপ, দুধ, দোয়াত,খাগের কলম।
সকালে উঠেই কী করবেন?
সরস্বতী পুজোর দিন ভোরবেলায় উঠে স্নান সেরে নেওয়া উচিত। কোনও কোনও জায়গায় নিম ও হলুদ বেটে স্নান করারও নিয়ম। এছাড়া পুষ্পাঞ্জসী দেওয়ার আগে স্নান অবশ্যই করা উচিত। স্নান জলে নিমপাতা ও তুলসী পাতা দেওয়ারও নিয়ম রয়েছে। স্নান সেরে হলুদ , সাদা বা সোনালি রঙের পোশাক পরিধান করতে পারেন।
মূর্তি ও কলস স্থাপন ও পুজো
যে জায়গায় পুজো হবে, সেইজায়গাটি অত্যন্ত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর একটি ছোট জলচৌকি বা চৌকো করে ইঁটের মঞ্চ স্থাপন করে তারউপর সাদা রঙের কাপড় পেতে দিতে হবে। এরপর দেবীর মূর্তি স্থাপন করুন। খুব সুন্দর করে ও যত্নের সঙ্গে ফুলের মালা, কাগজের মালা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন। এরপর সিঁদুর, চাল ও হলুদ দিয়ে আলপনা দিতে পারেন। পুজোর স্থানটিকে ফুল দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলুন। কালির দোয়াতগুলি দুধ দিয়ে পূরণ করে নিন। দেবীর পায়ের কাছে বই, খাতা, পেন, পেন্সিল, বাদ্যযন্ত্র রেখে দিতে পারেন। সেখানেও ফুল দিয়ে সাজিয়ে রাখুন। এরপর একটি কলসে গঙ্গাজল দিয়ে তার উপর আম্রপল্লব, সুপুরি দিয়ে রাখতে হবে। পুজোর স্থানে ফুল ও দুর্বা রাখতে হবে। পুজোর সময় বিগ্রহের সামনে ধূপ, প্রদীপ জেলে , ফল, ফুল, নৈবেদ্য অর্পন করুন। পুরোহিত ছাড়াই সরস্বতীর বন্দনা করতে পারবেন। সবশেষে পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র পড়ে পুজো শেষ করতে হবে।
(Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)