আসন্ন সপ্তাহেই পালিত হবে বাঙালির অন্যতম জনপ্রিয় উত্সব, সরস্বতী পুজো। আর সেদিন থেকেই শুরু হবে বসন্তের আগমন। হিন্দু ধর্মমতে, দেবী সরস্বতীকে জ্ঞান ও বিদ্যার দেবী বলা হয়। ক্যালেন্ডার অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়। একে বসন্ত পঞ্চমীও বলা হয়। ধর্মীয় গুরুত্ব তো রয়েছেই, এছাড়া বসন্ত পঞ্চমী আবহাওয়া পরিবর্তনেরও আভাস দেয়। টানা ২ মাস ঠাণ্ডা থাকার পর বসন্তের আগমনে আবহাওয়ার পরিবর্তন শুরু হয়, চারিদিকে ফুলের সমারোহ ঘটে। সাহিত্য, শিক্ষাও শিল্পের সাথে জড়িতরা বসন্ত পঞ্চমীতে দেবী সরস্বতীর পূজা করে আশীর্বাদ কামনা করে। এই বিশেষ দিন থেকে, শিশুরা বর্ণমালার সঙ্গেও পরিচিত হয়।
বসন্ত পঞ্চমী
একটি পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, বসন্ত পঞ্চমীর দিনে জ্ঞানের দেবী সরস্বতী আবির্ভূত হয়েছিলেন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের স্রষ্টা ব্রহ্মাদেব যখন পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তিনি অনুভব করেছিলেন কোনও কিছু অনুপস্থিত রয়েছে। শব্দ সঞ্চারের জন্য তিনি তাঁর কমণ্ডলু থেকে পৃথিবীতে জল ছিটিয়ে দেন। আর ঠিক সেই সময়ই পৃথিবী কাঁপিয়ে আবির্ভূতা হয়েছিলেন দেবী সরস্বতী। তাঁর হাতে ছিল বীণা, জপমালা ও বই। দেবী সরস্বতী তার বীণার সাথে বসন্তের রাগ বাজিয়েছিলেন। সৃষ্টি তার বীণার ধ্বনি থেকে বাক ও সঙ্গীত লাভ করে। দেবী জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়েছেন, যা থেকে বিশ্বকে জ্ঞানের আলো প্রসারিত হয়েছে। তাই বসন্ত পঞ্চমীর দিন সরস্বতীর বিশেষ পূজা করা হয়।
প্রতিবছর কেন সরস্বতী পুজো পালিত হয়?
বসন্ত পঞ্চমী জীবনের নতুন শুরুর প্রতীক। বসন্ত মৌসুমে ফসল পাকতে শুরু করে। ঠাণ্ডা শেষ হওয়ায় আবহাওয়া মনোরম হওয়ায় প্রকৃতি রঙে ভরে ওঠে, চারিদিক যেন রঙিন ফুলে ঢেকে যায়। গাছে গাছে নতুন পাতা, রঙিন ফুল ও ফল ধারণ করে। পাখিরাও যেন কোনও এক মন্ত্রবলে প্রাণের খুশিতে নেচে বেড়ায়। বলতে গেলে প্রকৃতি যেন নিজছন্দে ফিরে আসে। পাশাপাশি, এই দিনটি নতুন জিনিস শুরু করার জন্য শুভ বলে মনে করা হয়।