Vishwakarma Puja 2022: পুরোহিত ছাড়াই বাড়িতে করুন বিশ্বকর্মা পুজো! জেনে নিন তিথি, শুভ সময় ও পুজোবিধি
Date And Time: বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান বিশ্বকর্মা সত্যযুগের স্বর্গ, শ্রেতাযুগের লঙ্কা, দ্বাপরের লঙ্কা, দ্বাপরের দ্বারকা এবং কলিযুগের হস্তিনাপুর সৃষ্টি করেছিলেন। এমনকি সুদামাপুরীও ভগবান বিশ্বকর্মা নির্মাণ করেছিলেন।
বিশ্বকর্মা পূজা ( Vishwakarma Puja) মানেই দুর্গা পুজো (Durga Puja 2022) একেবারে দোরগোড়ায়। কারণ তিনি হলেন দেবতাদের কর্মকার অর্থাৎ বিশ্বের নির্মাণকর্তা। সেই কারণেই তাকে বিশ্বকর্মা (Lord Vishwakarma) বলা হয়। তাছাড়া অনেকের কাছে বিশ্বকর্মাকে স্বর্গের কারিগর হিসেবেও পরিচিত। শিল্পী ও নির্মাতাদের দেবতা হলেন বিশ্বকর্মা। কথিত আছে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নকশা তৈরি করেছিলেন বিশ্বকর্মা। এইদিন কলকারখানায় যন্ত্রের পূজা করা হয়। মহাভারত অনুযায়ী বিশ্বকর্মা হলেন শিল্পকলার দেবতা। সকল দেবতার প্রাসাদ তৈরি করা থেকে সকল প্রকার অলংকারের নির্মাতাও তিনিই ছিলেন। বিশ্বকর্মার চারটি বাহু, মাথায় রাজার মুকুট, হাতে জলের কলস, বই, দড়ির ফাঁস ও অপর হাতে একটি যন্ত্র। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, বিশ্বকর্মা হলেন দেবতাদের শিল্পী। তিনি দেব শিল্পী নামেও পরিচিত। বৃহস্পতির ভগিনী যোগসিদ্ধা তার মাতা এবং অষ্টম বসু প্রভাস হলেন তার পিতা। বিশ্বকর্মার বাহন হল হাতি।
বিশ্বকর্মা বিশ্বভুবন নির্মাণ করেন। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিবের ত্রিশূল, কুবেরের অস্ত্র, ইন্দ্রের বর্জ্য, কার্তিকের শক্তি, প্রভৃতি তিনিই তৈরি করেছেন। শ্রী ক্ষেত্রর প্রসিদ্ধ জগন্নাথ মূর্তিও কিন্তু নির্মাণ করেছিলেন বিশ্বকর্মা। এক কথায় বলা যেতে পারে তিনি হলেন দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার। বিশ্বকর্মা পূজা হিন্দুদের একটি ধর্মীয় উৎসব। দেব শিল্পী বিশ্বকর্মার আশীর্বাদ কামনা করে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বিভিন্ন জায়গায়।
তারিখ এবং শুভ সময়
ভগবান বিশ্বকর্মা প্রতি বছর কন্যা সংক্রান্তির দিনে সঞ্চালিত হয় এবং এই বছর এই পূজা আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার পালিত হবে। পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, এদিন পূজার শুভ সময় সকাল ৭টা ৩৬ মিনিটে শুরু হয়ে রাত ৯টা ৩৮ মিনিট পর্যন্ত চলবে। বিশ্বকর্মা পূজার দিন সকাল ১১.৫১ মিনিট থেকে ১২.৪০ মিনিট পর্যন্ত অভিজিৎ মুহুর্ত থাকবে।
বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি
বিশ্বকর্মা পূজার দিনে দেবতাদের শিল্পী বিশ্বকর্মাকে পূজা করা হয় । হিন্দুদের এমন একজন দেবতা যাকে বলা হয় বিশ্বের প্রথম ইঞ্জিনিয়ার। এই দিনে কলকারখানার মেশিনগুলি পরিষ্কার করা হয় এবং লোহার তৈরি সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় না। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে ভগবান বিষ্ণু ও বিশ্বকর্মার মূর্তি পূজা করা হয়।
– সবার প্রথমে স্নান সেরে পরিষ্কার এবং শুদ্ধ কাপড় পড়ে ঠাকুর ঘরে ঢুকতে হবে, তারপর বিশ্বকর্মা পূজার উপকরণগুলি একে একে সাজিয়ে নিতে হবে।
– যেমন, গঙ্গা জল দিয়ে ঘট ভরার পর ঘটের উপরে আমের পাতা সহ শীষ যুক্ত ডাব রাখতে হবে, তারপর ঘট পাত্রটি যদি মাটির হয় তবে ঘট পাত্রটিকে পাটের দড়ির বোড় এর উপর ঘর রাখতে হবে।
– এরপর খড়ি মাটি দিয়ে পুজোর স্থানে আলপনা আঁকতে হবে।
– তারপরে আতপ চালের নৈবেদ্য সাজিয়ে রাখুন। এরপর ফুল, বেলপাতা দিয়ে বিশ্বকর্মা পূজার বই পড়ে পুজো শুরু করতে হবে।
– বিষ্ণু ও বিশ্বকর্মা, উভয়কেই পুজো করলে পঞ্চমেব, পঞ্চামৃত এবং মিষ্টি নিবেদন করুন।
– বিশ্বকর্মা পূজার নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকর্মা পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র উচ্চারণ জানতে হবে।
– হোম যজ্ঞ করার পর আরতি করতে হয়। ধূপ-দীপ জ্বালিয়ে আরতি করুন। পুজো সম্পন্ন হলে পূজার প্রসাদ বিতরণ করতে পারেন।
বিশ্বকর্মা পূজার গুরুত্ব
বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান বিশ্বকর্মা সত্যযুগের স্বর্গ, শ্রেতাযুগের লঙ্কা, দ্বাপরের লঙ্কা, দ্বাপরের দ্বারকা এবং কলিযুগের হস্তিনাপুর সৃষ্টি করেছিলেন। এমনকি সুদামাপুরীও ভগবান বিশ্বকর্মা নির্মাণ করেছিলেন। এজন্য তারা শিল্পী, তাঁতি, কারিগর ও ব্যবসায়ী হিসেবে বিবেচিত হয়। ভগবান বিশ্বকর্মাকে বিশ্বের প্রথম প্রকৌশলী এবং স্থপতি হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং এই কারণেই বিশ্বকর্মা পূজার দিনে শিল্প-কারখানায় মেশিনের পূজা করা হয়। বিশ্বকর্মা সেই সম্প্রদায়ের আদিম সভ্য পুরুষ। বিশ্বকর্মা পিছিয়ে পড়া একজন জনজাতির ঐতিহাসিক এবং অপ্রতিরোধ্য প্রতিভার বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত।