কথিত আছে, যে বাড়িতে বেল গাছ (থাকে, সেই গৃহের উপর এবং ওই বাড়ির বাসিন্দাদের প্রতি মহাদেবের কৃপা থাকে। সেই সঙ্গে বাড়িতে দেবী লক্ষ্মীর অধিষ্ঠানও নিশ্চিত হয়ে যায় বলে মনে করা হয়। বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, যেখানে সেখানে নয়, বরং বাড়ির নির্দিষ্ট জায়গায় বেল গাছ লাগালে অনেক সমস্যার সমাধান হয়। শিবপুরাণ অনুসারে, যে স্থানে বেল গাছ লাগানো হয়, সেই স্থানটি তীর্থস্থানের মতো পবিত্র ও পূজার স্থানে পরিণত হয়। বেলপাতার পাতা কখনো বাসি হয় না। আসুন জেনে নিই ভগবান শিবের আরাধনায় বেলপাতার গুরুত্ব এবং ঘরে লাগানোর সঠিক দিক সম্পর্কে।
বিল্বপত্রের গুরুত্ব
শিবপুরাণ অনুসারে শিবলিঙ্গে বেলপাতা নিবেদন করলে এক কোটি কন্যাদানের সমান পুণ্য পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে দূর হয় দারিদ্র্য। ভগবান শিব এবং হনুমানজিও বেলপাতার পূজায় সন্তুষ্ট হন। বাড়িতে বেল গাছ গাছ লাগালে ওই পরিবার পাপের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়।
দারিদ্র্য বিমোচন
দারিদ্র্য দূর করতে গৃহে বেল গাছ লাগান। এর ফলে দেবী লক্ষ্মী প্রসন্ন হন। আপনার ঘরেও সম্পদ রাখার জায়গায় বেল পাতা রাখতে পারেন। এই পাতা গৃহে সুখ এবং আশীর্বাদ নিয়ে আসে। তাই আর্থিক সচ্ছলতার জন্য উত্তর-দক্ষিণ দিকে বেল গাছের চারা রোপণ করুন।
অলসতা দূর হয়
বেল গাছের শিকড়ে গিরিজা মাতা বাস করেন বলে বিশ্বাস করা হয়। কাণ্ডে মহেশ্বর, শাখায় মাতা দক্ষিণী, পাতায় পার্বতী, ফুলে গৌরী এবং ফলের মধ্যে দেবী কাত্যায়নী বাস করেন। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, বাড়ির উত্তর-পশ্চিম দিকে বেল গাছ লাগালে বাড়ির সদস্যরা অলসতা ত্যাগ করে সক্রিয় এবং শক্তিমান হয়।
কালা জাদু অসাড়
বাস্তুশাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই গাছটি বাড়ির আঙিনায় থাকলে কোনও অশুভ শক্তি গৃহে প্রবেশের সাহস করে না। এই পবিত্র গাছ পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করে। গাছটি সর্বদা গৃহে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ বজায় রাখে।
বেলপত্র চন্দ্র দোষ থেকে মুক্তি পেতে পারে
বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে বাড়ির প্রাঙ্গণে বেল গাছ লাগালে ওই বাড়িতে বসবাসকারীদের কখনওই চন্দ্রদোষের নেতিবাচক প্রভাব এবং অন্যান্য ধরনের ত্রুটির সম্মুখীন হতে হয় না। তবে খেয়াল রাখতে হবে গাছ থেকে পড়ে যাওয়া পাতা যেন পায়ে না লাগে।
কোন তিথিতে বেলপাতা ভাঙা যায় না?
হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্র অনুসারে, চতুর্থী, অষ্টমী, নবমী, চতুর্দশী এবং অমাবস্যা তিথিতে বেলপাত্র তোলা যায় না। এই বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। অন্যদিকে, সংক্রান্তির সময় এবং সোমবার বেল গাছ থেকে পাতা ভাঙবেন না। বেল পাতা ডাল বরাবর উপড়ে ফেলা উচিত নয়। নিবেদনের সময় তিনটি পাতার ডাঁটা ভেঙে মহাদেবকে নিবেদন করুন।