মহাভারতে উল্লেখিত গান্ধাররাজ সুবলের জ্যৈষ্ঠপুত্র ও গান্ধারীর জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন এই শকুনিমামা। কূটবুদ্ধিসম্পন্ন শকুনি মামাকে মহাভারতের প্রধান খলনায়ক চরিত্র তো বটেই, অনেকে প্রধান চরিত্র হিসেবেও ব্যাখ্যা করেন। মহাভারতে বলা আছে, সুবলের কোনও এক পাপের কারণে দেবতাদের অভিশাপে তাঁর বংশে শকুনির জন্ম হয়। শকুনির জন্ম কলির অংশে, তাই তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধূর্ত ও কপট। নানারকম কুটিলতায় ভরপুর এই শকুনি মামর বাবার্থ তাই বাগধারায় কূটবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে আখ্যা করা হয়েছে।
গান্ধারীর বিবাহের পর থেকে শকুনি ধৃতরাষ্ট্রের সংসারেই থাকতেন এবং ভাগ্নে দুর্যোধনের সঙ্গে শকুনি মামার ছিল বিশেষ বন্ধুত্ব। তাঁর কারণেই মহাভারতের বিচিত্র ঘটনাগুলো আবর্তিত হয়েছে।সনাতন ধর্মের অন্যতম শাস্ত্রে শকুনি মামার কূটবুদ্ধির কারণে পুরো মহাভারত দীর্ঘ সম্প্রসারিত রূপ্ ধারণ করেছে। মহাভারতে রচিত কাহিনি অনুসারে শ্রীকৃষ্ণের লীলা বিশেষে ভারতের বিভিন্ন অংশে মহাতীর্থ হিসেবে শোভা পায়। পূজিত হন শকুনিমামাও। মহাভারতে উল্লিখিত শকুনি মামার রাজ্য ছিল এখনকার আফগানিস্তানে।
আরও পড়ুন: এ বছরও ভক্ত ছাড়াই রথযাত্রা পালিত হবে পুরীতে, সাধারণের জন্য মন্দিরের দরজা খুলবে জুলাই মাসে!
আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরে শকুনি মামার রাজ্য ছিল। প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানে এখনও পর্যন্ত মহাভারত সমসাময়িক অনেক প্রাচীন হিন্দু মন্দির অবস্থিত। প্রাচীন ইতিহাস ঘেঁটে জানা গিয়েছে, বহু যুগ আগে, আফগানিস্তানে শাসন করতেন হিন্দু শাহী রাজারা। দশম শতাব্দী পর্যন্ত এই সনাতন ধর্মকে টিকিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। তার পরবর্তী সময়ে ইসলামের অভ্যত্থানের সঙ্গে সঙ্গে এই দেশের প্রধান ধর্ম হিসেবে ইসলাম ধর্ম স্বীকৃত লাভ করে। প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও হিন্দুদের বাস রয়েছে। যাঁরা বংশ পরম্পরায় এখনও পর্যন্ত টিকে তাকা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: জীবনে উন্নতি করতে গীতার এই ৫ উপদেশ অবশ্য়ই মেনে চলুন
ইসলাম ধর্মে প্রাধান্য থাকলেও আফগানিস্তানের কান্দাহার ও কাবুলে এখনও অধিকাংশ হিন্দু পরিবারের বাস রয়েছে। জানা যায়, হিন্দু শাহী রাজাদের আমলে কাবুল ছিল তখনকার দিনে রাজধানী। বৈদিক সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে সাহী রাজারা হিন্দু দেব-দেবীদের প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ছিল। শাহী রাজা কিংগাবের আমলে শ্রী গণেশের মূর্তি স্থাপন করেছিল, যা আফগানিস্তানের গার্ডেজে সেটি দেখতে পাওয়া যেত। তবে বর্তমানে, সেই মূর্তি কাবুলের দার্গ পীররঞ্জন নাথ নামক স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মূর্তির বিভিন্ন অংশ প্রায় বিলুপ্ত , এখানে অনেক হিন্দু মন্দির রয়েছে।