Vastushastra: বাস্তু মেনে চলেন, কিন্তু জানেন কি বাস্তুশাস্ত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান কোনটি?
Brahmsthan: সভ্যতার শুরু থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে শিল্পচর্চার প্রাধান্য রয়েছে। তাই স্থাপত্যশিল্প ভারতীয়দের রক্তে রক্তে। শুধু তাই নয়, স্থাপত্য উপবেদের উল্লেখ রয়েছে অর্থববেদেও।

বাস্তুশাস্ত্র হল ভারতের বহু প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় পদ্ধতি। বাস্তুশাস্ত্র হিন্দু পরম্পরা ও ভারতে সৃষ্ট স্থাপত্যের একটি পদ্ধতি। শুধু হিন্দুদের মধ্যেই নয়, বৌদ্ধরাও বাড়ি তৈরির সময় বাস্তু নিয়ম মেনে চলেন। অনেকেই হয়তো জানেন না, বাস্তু কথাটা এসেছে সংস্কৃত শব্দ বস্তু থেকে। যার কথার মূল অর্থ হলো, যে কোনও সৃষ্টিই হল বাস্তু। অন্যদিক বস্তু হল ভূ। যার মানে পৃথিবী। এই পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি হওয়া সমস্ত কিছুই হল বাস্তু। এটি শুধু ধর্মীয় দর্শন বা আধ্যাত্মিকতা নয়। সকল নশ্বর ও অবিনশ্বরের আবাসস্থলই হল বাস্তুশাস্ত্র। ভারতীয় স্থাপত্য বিজ্ঞানকে বাস্তু বলা হয়। ভাস্কর্য, চিত্রকলা, স্থাপত্য সব কিছুই বাস্তুর অন্তর্গত।
এই স্থাপত্যবিদ্যা কিন্তু স্থাপত্য উপবেদ বা স্থাপত্যশাস্ত্রে চারটি উপবেদের অন্যতম। সভ্যতার শুরু থেকেই ভারতীয় উপমহাদেশে শিল্পচর্চার প্রাধান্য রয়েছে। তাই স্থাপত্যশিল্প ভারতীয়দের রক্তে রক্তে। শুধু তাই নয়, স্থাপত্য উপবেদের উল্লেখ রয়েছে অর্থববেদেও। আনুমানিক পাঁচ হাজারেরও বেশি সময় ধরে বাস্তুবিদ্যা বিদ্যমান। প্রাচীনযুগে স্থপতি শুধু রাজমিস্ত্রির ভূমিকাকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হত। আধুনিককালে এই বাস্তু সম্পর্কে অনেকটাই ধারণা বদলে গিয়েছে।
বাস্তু শুধু বাড়ির অন্তর্বর্তী স্থাপতি নয়, জমির উপরও রয়েছে কিছু নিয়ম। জমির মধ্য বিভাজন স্থানকে ব্রহ্মস্থান বলে। ৮১টি পরিভাষা, ৯টি বর্গ যেখানে বাস্তুপুরুষের নাভিস্থানের পারদিকে অবস্থান করলে সেটি ব্রহ্মস্থান বলে। ‘ময়মতম্’ অনুসারে যে সব গুরুত্বপূর্ণ স্থান আছে সেগুলিকে ‘মর্ম’ বলে। এগুলি আক্রকম রেখা যা উত্তর থেকে দক্ষিণ জুড়ে থাকে ও পূর্ব থেকে পশ্চিম জুড়ে রয়েছে। উত্তর-দক্ষিণ রেখাকে বলা হয় নাড়ি, ও ‘পূর্ব-পশ্চিম’ রেখাকে ‘বংশ’ বলে। ব্রহ্মস্থানের কোনাকুনি সরলরেখা টানলে সেটি হবে ‘কোণসূত্র’। এই স্থানটি বাস্তুশাস্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। বাড়ি তৈরির সময় এর গুরুত্ব বুঝে তৈরি করা উচিত।
বৃহদসংহিতা অনুসারে লম্বা কোনাকুনি সরলরেখা মিলিত হচ্ছে যেখানে ও বর্গগুলির মধ্যস্থল হল এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এই স্থানটিকে যেন কোনওভাবেই নষ্ট করা হয় না। বাসস্থানের জায়গায় ব্রহ্মস্থান রাখার রয়েছে আলাদা নিয়ম ও কারখানা -কর্মস্থলে ব্রহ্মস্থানটিকে বিশেষ গুরুত্বে রাখার পৃথক নিয়ম রয়েছে।
