Bhoot Chaturdashi 2023: ভূত-চতুদর্শীতে ১৪ রকম শাক কেন খাওয়া হয়, রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি
Mythology: নিয়মিত পরিষ্কার করা তো দূর, নোংরা বাড়তে বাড়তে ঘরের মধ্য়ে নোংরা জমতে থাকে। ধীরে ধীরে গোটা বাড়িই আস্ত ভূতুরে হয়ে ওঠে। ভৌতিক বাড়ি দেখে সকলেই ভয় পেতে শুরু করে। সাধারণত কোনও নোংরা স্থানে লক্ষ্মীর বাস করেন না। অপরিচ্ছ্ন্ন জায়গা দেখলেই রুষ্ট হন লক্ষ্মীদেবী।

ভূত চতুর্দশীর দিন ১৪ রকম শাক ও ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম রয়েছে। প্রথা অনুসারে এই নিয়ম চলে আসছে বহু যুগ যুগ ধরে। পুরাণমতেও এদিন ১৪ রকম শাকসবজি খাওয়ার উল্লেখ রয়েছে। পুরাণের তথ্য অনুযায়ী, ঋকবেদের বাস্কল বা শাকদ্বীপের ব্রাহ্মণরা প্রথম এই ১৪ শাক খাওয়ার রীতি প্রচলন করেছিলেন। সেই কাহিনি অনুসারে, ব্রাহ্মণ ও তাঁর স্ত্রী, নিজের বাড়ি অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা করে রাখতেন। নিয়মিত পরিষ্কার করা তো দূর, নোংরা বাড়তে বাড়তে ঘরের মধ্য়ে নোংরা জমতে থাকে। ধীরে ধীরে গোটা বাড়িই আস্ত ভূতুরে হয়ে ওঠে। ভৌতিক বাড়ি দেখে সকলেই ভয় পেতে শুরু করে। সাধারণত কোনও নোংরা স্থানে লক্ষ্মীর বাস করেন না। অপরিচ্ছ্ন্ন জায়গা দেখলেই রুষ্ট হন লক্ষ্মীদেবী।
ফলে সেই জায়গায় আত্মা, ভূত-প্রেত ও অশুভ শক্তি ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। একদিন ব্রাহ্মণের নজরে আসে বাড়ির নোংরা জায়গায় বাসা বাধা ভূতেদের তাণ্ডব। বাড়িঘর অপরিষ্কার দেখে চোখ কপালে ওঠে। নজরে আসতেই বাড়িঘর পরিষ্কার শুরু করেন। ১৪ ধরনের গাছের পাতা দিয়ে পুরো বাড়িতে গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করার চেষ্টা করেন। এই কাহিনি স্মরণ করেই বাড়ি থেকে অশুভ শক্তিকে নাশ করা জন্য এখনও বাড়ি পরিষ্কার করে , প্রদীপ জ্বালিয়ে ১৪ ধরনের শাক রান্না করে খাওয়া হয়।
এই ১৪ শাক হল মৃত ১৪ পুরুষের উদ্দেশ্যে উত্সর্গ করা। নিয়ম অনুযায়ী, এই ১৪ শাক রান্না করার রীতি চলে আসছে। এছাড়া রান্না করার আগে শাক ধুয়ে জল ছিটিয়ে বাডির প্রতিটি কোণে কোণে গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করা হয়। মনে করা হয় এতে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটে। অশুভ আত্মা, ভূত-প্রেতাত্মাকে দূর হয় এতেই। পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন করে বাড়ি শুদ্ধ করা হয় এদিন। তবে এই ১৪ শাকের রীতি আদতে প্রকৃতির সঙ্গে মিলিত। কারণ এই এই সময় আবহাওয়ার বদল ঘটে। বাতাসে শীতের আমেজ অনুভূত হয়। তাতে বহু মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে নানা রকম রোগের শিকার হন। ঋতু পরিবর্তনের সময় এই প্রথা অনুযায়ী, ১৪ শাক খাওয়া হয়। প্রতিটি শাকের ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ। সব মিলিয়ে স্বাদ হয় বেশ তেতো। শীতের মরসুমে এই ১৪ শাক রান্না করে খাওয়া হয়। তাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় থাকে।
গীতা অনুসারে, মৃত্যুর পর শরীর পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে যায়। পঞ্চভূত অর্থাত্ মাটি, জল, বাতাস, অগ্নি ও আকাশ। মনে করা হয়, মাটি থেকে তুলে আনা সমস্ত রকম শাক-সবজি খেলে অতৃপ্ত আত্মা ঘরে প্রবেশ ঘটে না। অশুভ শক্তি দূর হয়ে সব বাধা বিপদ কেটে যায়।
