জীবনের পুরনো পাপকে ধুয়ে মুছে ফেলার অন্যতম উপায় হল যোগিনী একাদশীর ব্রত (Yogini Ekadashi Vrat) পালন করা। সাধারণত দশমী তিথির রাত থেকে দ্বাদশী তিথির সকাল পর্যন্ত স্থায়ী থাকে এই ব্রতের তিথি। বিষ্ণুর (Lord Vishnu) ভক্তরা এদিন স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ব্রত পালন করেন। এই ব্রতটি দ্বি-মাসিকভাবে পালন করা হয়। দুটি চান্দ্র পাক্ষিক মিলিয়ে একটি হিন্দুমাস তৈরি হয়। প্রতিটি একাদশী তিথির একটি নির্দিষ্ট নাম ও তাত্পর্য রয়েছে। যেমন আষাঢ় একাদশী, কৃষ্ণপক্ষ বা জ্যৈষ্ঠ কৃষ্ণপক্ষ, যোগিনী একাদশী। ব্রত পালন করার আগে অবশ্যই স্বাস্থ্যের উপর নজর দিন। উপবাসের আগে শরীর অসুস্থ থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। বিশেষ করে যদি আপনি রোজ কোনও ওষুধ খান বা চিকিত্সাধীন থাকেন তাহলে অবশ্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
এদিন ব্রত পালনের নিয়মগুলি জেনে নিন একনজরে…
– একাদশী তিথিতে ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে। ব্রহ্ম মুহূর্ত অর্থাত্ সূর্যোদয়ের দুই ঘন্টা আগে ঘুম থেকে উঠলে সবচেয়ে ভাল হয়।
– স্নান সেরে পরিস্কার পোশাক পরার নিয়ম আছে।
– ব্রতের নিয়ম অনুসারে, পুজোর ঘরে বা শান্ত নিরিবিলি জায়গায় ধ্যান করুন। দশম তিথিতে ব্রত শুরু করার সময় ব্রহ্মচর্য বজায় রাখুন। এদিন ব্রত করার জন্য উপবাস করা জরুরি। তাই পেঁয়াজ, রসুন, মাংস, চাল, গম, মসুর ডাল খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
– এদিন অ্যালকোহল ও তামক-জাত সেবন করবেন না।
– এদিন উপবাসের সময় ফল, দুধ, সাবুদানার খিচুড়ি, পুরি,ও নিরামিষ জাতীয় খাবার খেতে পারেন।
– দুঃস্থ ও গরিবদের এদিন কিছু দান করলে পূণ্যলাভ করতে পারেন।
– মন ও শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে যোগ-ব্যায়াম করুন। ব্রতের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়া।
– ‘ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায়’ মন্ত্র জপ করতে থাকুন।
– ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করে শ্রী বিষ্ণু সহস্রনাম এবং অন্যান্য স্তোত্র পাঠ করুন।
পূজা বিধি
– এক বালতি জলে কয়েক ফোঁটা গঙ্গা জল যোগ করে স্নান করতে পারেন। যদি বাড়ির কাছেই গঙ্গা নদী প্রবাহিত হয়, তাহলে গঙ্গা স্নান সেরে পরিস্কার পোশাক পরিধান করুন।
– এরপর বাড়িতে পুজোর বেদিতে একটি প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখুন। তাতে সময়ে সময়ে সরষের তেল বা ঘি দিতে থাকুন।
– ভগবান বিষ্ণুর আশীর্বাদ পেতে প্রার্থনা করুন।
– ভগবান বিষ্ণুকে জল (জল), পুষ্পম (ফুল), গন্ধম (প্রাকৃতিক সুগন্ধি), দীপ (তেল প্রদীপ), ধূপ (ধূপ) এবং নৈবেধ (যে কোনও ফল বা রান্না করা খাবার) দেওয়ার সময় ‘ওম নমো ভগবতে বাসুদেবায়’ জপ করুন। পায়সাম বা পায়েস বা ক্ষীর বা হালুয়া বা কোনও নিরামিষ মিষ্টি নৈবেদ্য দিতে পারেন। এমনকি ফলও যোগ করতে পারেন।
– তারপর পান, সুপারি, একটি নারকেল দু-ভাগ করে, কলা বা অন্যান্য ফল, চন্দন, কুমকুম, হলদি, অক্ষত এবং দক্ষিণা অর্পণ করুন।
– যোগিনী একাদশী ব্রতকথা পড়ুন
– এদিন দুঃস্থদের মধ্যে খাদ্য, অর্থ বা প্রয়োজনীয় জিনিস দান করুন।
– সূর্যাস্তের সময় বা পরে একটি তেলের প্রদীপ এবং ধূপকাঠি জ্বালান এবং ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রার্থনা করুন। ফুল (ঐচ্ছিক), জল, এবং ভোগ (যেকোনও মিষ্টি) বা ফল বা শুকনো ফল দিন।
– আরতি করে পূজা শেষ করুন।
Disclaimer: এখানে উপলব্ধ তথ্য শুধুমাত্র বিশ্বাস এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। এখানে উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে টিভিনাইন বাংলা কোনও বিশ্বাস বা তথ্য নিশ্চিত করে না। কোনও তথ্য বা বিশ্বাস অনুশীলন করার আগে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।