নয়াদিল্লি : উপেন্দ্রর সহযোগিতা না পেলে? ভাবছেন তো কে এই উপেন্দ্র! অন্নু রানির (Annu Rani) দাদা। আর কে এই অন্নু রানি! কমনওয়লেথ গেমসে মহিলাদের জ্যাভলিনে (javelin) ভারতের প্রথম পদক এনে দিলেন। এদিন ব্রোঞ্জ পেলেন অন্নু। এই অবধি রাস্তাটা একেবারেই মসৃণ ছিল না। মেয়েদের জন্য খেলাধুলোর রাস্তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অমসৃণ হয়। অন্নুরও তাই ছিল। রাস্তাটা তৈরি করে দিয়েছিলেন উপেন্দ্র, লক্ষ্যে পৌঁছলেন অন্নু। ভারতের হয়ে এর আগে কমনওয়েলথ গেমস (Commonwealth Games 2022) জ্যাভলিনে দু জনই পদক এনেছিলেন। অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন নীরজ চোপড়া সোনা জেতেন এবং কাশীনাথ নায়েক ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন।
কৃষক পরিবারের মেয়ে অন্নু। উত্তরপ্রদেশের মিরাটের বাহাদুরপুর গ্রাম। তাঁর মধ্যে জ্যাভলিনের সম্ভাবনা দেখেছিলেন দাদা উপেন্দ্র। তাও আবার ক্রিকেট ম্যাচ থেকে। গ্রামে ক্রিকেটের ম্যাচ চলছিল। বাউন্ডারি লাইন থেকে বল ছুড়ে উইকেট ভেঙে দেন অন্নু। বোনের শরীরের উপরের অংশের শক্তি সম্পর্কে অবাক হন উপেন্দ্র। সেটাকে কীভাবে ভালো কাজে লাগানো যায়! বোনের হাতে আখ গাছ তুলে দেন। সেটাকে ছুড়তে বলেন। উপেন্দ্র বুঝতে পারেন, জ্যাভলিনে ভালো কিছু সম্ভব। আখ গাছ দিয়ে হাতেখড়ি। জ্যাভলিনের দাম অনেক বেশি। তাই বাঁশ দিয়ে জ্যাভলিন বানিয়ে দেন। সেই দিয়েই প্রস্তুতি শুরু। বাবা অবশ্য মেনে নেননি মেয়ে খেলাধুলা করুক। দাদা উপেন্দ্রই তাঁর ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেন। প্রশিক্ষণের খরচ থেকে জ্যভলিন কিনে দেওয়া, সব।
অন্নুর প্রথম কোচ কাশীনাথ নায়েক। ২০১০ দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন কাশীনাথ। পরবর্তীতে বলজিৎ সিংয়ের থেকে কোচিং নেন অন্নু। ২০১৪ সালে জাতীয় রেকর্ড গড়ার পর অন্নুর প্যাশনকে সমর্থন করেন তাঁর বাবা। ২০১৪ এসিনা গেমসে ব্রোঞ্জ, ২০১৭ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ, ২০১৯ এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো, ২০১৬ সাউথ এশিয়ান গেমসে রুপো। এদিন নিজের চতুর্থ চেষ্টা ৬০ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে ব্রোঞ্জ পদক নিশ্চিত করেন অন্নু। সোনার পদক জেতেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কেলসি-লি বার্বার। অস্ট্রেলিয়ান এই জ্যাভলিন থ্রোয়ার ৬৪.৪৩ মিটার ছোড়েন। ৬৪.২৭ মিটার ছুড়ে রুপো পান ম্যাকেঞ্জি লিটল। অন্নুর কেরিয়ারে বাকি রইল অলিম্পিক পদক। টোকিও অলিম্পিকে নামলেও পদক আনতে পারেননি।