Asian Games 2023: শুটিংয়ের পর ক্রিকেটেও, এশিয়ান গেমস থেকে সোনা আনলেন তিতাস-রিচা
Asian Games, Cricket: সকালে সোনা এসেছিল শুটিং থেকে। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই ফের সোনা ভারতের ঝুলিতে। মেয়েদের ক্রিকেটে সোনা জিতল হরমনপ্রীত কৌরের টিম। ভারত ১১৬-৭ করেছিল। জবাবে ৯৭-৮এ শেষ শ্রীলঙ্কা। বাংলার তিতাস সাধু বল তাতে নিয়েছেন ৩ উইকেট। সফল বাংলার উইকেট কিপার রিচা ঘোষ। এই প্রথম মেয়েদের ক্রিকেটে অংশ নিয়েছে ভারত। আর নেমেই সোনা পেলেন স্মৃতি, শেফালি ভার্মারা।
প্রথম বার এশিয়ান গেমসে (Asian Games) নেমেই সোনা ফলালেন ভারতের মেয়েরা। আর এশিয়াডে মেয়েদের ক্রিকেটের ফাইনালে ভারতের সোনা জয়ের পিছনে বড় অবদান রাখলেন বাংলার তিতাস সাধু। এর আগে ২০১০ ও ২০১৪ সালের এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট থাকলেও ভারত তাতে অংশ নেয়নি। প্রথম বার এশিয়ান গেমসে নেমেই ফাইনালে খেলল ভারতের মেয়েরা। এশিয়াডে মেয়েদের ক্রিকেটের সোনার পদকের ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর। টসও জেতে ভারত, শেষ অবধি ম্যাচও জিতল ভারত। শুটিংয়ের পর এশিয়াডের দ্বিতীয় দিন ক্রিকেট থেকে দ্বিতীয় সোনা এল ভারতে। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
এশিয়ান গেমসে মেয়েদের ক্রিকেটের ফাইনালে চতুর্থ ওভারে ওপেনার শেফালি ভার্মার উইকেট তুলে নেন সুগন্ধিকা কুমারি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন স্মৃতি মান্ধানা ও জেমাইমা রডরিগজ। এই জুটিতে ওঠে ৭৩ রান। ১৫তম ওভারে স্মৃতির উইকেট হারায় ভারত। এরপর অবশ্য পরপর উইকেট হারাতে থাকে ভারত। স্মৃতি যখন আউট হন তখন ভারতের স্কোর ৮৯/২। তখনও হাতে ৮ উইকেট। সেখান থেকে ভারতকে চাপে ফেলেন লঙ্কান বোলাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান তোলে। সোনার পদকের ম্যাচে স্মৃতি (৪৬) ও জেমাইমা (৪২) ছাড়া বাকিদের ব্যাট চলেনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২ ম্যাচে নির্বাসিত থাকার পর এই ম্যাচে হরমনপ্রীত ফিরলেও রান পাননি। মাত্র ২ করে ফেরেন তিনি।
১২০ বলে ১১৭ রানের টার্গেট খুব একটা কঠিন নয়। এরপর তাই শ্রীলঙ্কাকে এই অল্প রানের পুঁজিতে আটকানোর দায়িত্ব বর্তায় ভারতের বোলারদের উপর। প্রথম ওভারেই ১২ রান তুলে ফেলে শ্রীলঙ্কা। দীপ্তি শর্মার পর বোলিংয়ে আসেন পূজা বস্ত্রকার। তাঁর স্পেলের প্রথম ওভারে শ্রীলঙ্কা মাত্র ১ রান তোলে। এরপর তৃতীয় ওভারে কোনও রান না দিয়ে শ্রীলঙ্কার জোড়া উইকেট তুলে নেন বাংলার মেয়ে তিতাস সাধু। এরপর চতুর্থ ওভারে ফের আসেন পূজা। দিয়ে যান মাত্র ১ রান। ভারতীয় বোলাররা জানতেন যেহেতু এত অল্প রানের টার্গেট, তাই আটোঁসাটো বোলিং প্রয়োজন। সেটাই করেছেন পূজা-তিতাসরা। পঞ্চম ওভারে তিতাস এসে ১ রান দিয়ে ফের আরও একটি উইকেট নিয়ে যান। পাওয়ার প্লের মধ্যে ২৩ রান তুলে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা।
চতুর্থ উইকেট আসে ১০ম ওভারে, রাজেশ্বরী গায়কোয়ড়ের হাত ধরে। এরপর ওসাদি রনসিংহে ও নীলাক্ষী ডি সিলভা জুটি বাঁধেন। এই জুটি দীর্ঘক্ষণ ক্রিজে টিকে থাকে এবং ভারতের অস্বস্তি বাড়তে থাকে। ১৭তম ওভারে পূজা এসে তুলে নেন নীলাক্ষীর (২৩) উইকেট। এরপর ১৮তম ওভারে দীপ্তি ফেরান ওশাদি রণসিংহেকে (১৯)। ফাইনালে ভারতের বোলারদের দাপট দেখা গেল। বাংলার মেয়ে তিতাস ৪ ওভারে ১টি মেডেন সহ ৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন। ২টি উইকেট নেন রাজেশ্বরী। আর ১টি করে উইকেট পেয়েছেন দীপ্তি, পূজা ও দেবিকা বৈদ্য। শেষ অবধি নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৯৭ রানে আটকে যায় শ্রীলঙ্কা। ১৯ রানে ম্যাচ জিতে হানঝাউ গেমস থেকে ভারতকে দ্বিতীয় সোনা এনে দিলেন স্মৃতি মান্ধানারা।
আইসিসি ব়্যাঙ্কিংয়ে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট টিম উপরে থাকার কারণে এশিয়ান গেমসে শীর্ষ বাছাই হিসেবেই খেলতে নেমেছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে নেমেছিল ভারত। বৃষ্টিতে সেই ম্যাচ ভেস্তে যায়। প্রথমে ওই ম্যাচে ২০ ওভারের জায়গায় ১৫ ওভারে কমানো হয়। ভারত প্রথমে ব্যাটিং করে। মালয়েশিয়া রান তাড়া করতে নামার পর মাত্র ২ বল খেলে। বৃষ্টির কারণে এরপর ম্যাচ বাতিল করে দিতে হয়। আইসিসি ব়্যাঙ্কিংয়ে উপরে থাকার কারণে সহজেই সেমিফাইনালে ওঠে ভারত। এরপর সেমিফাইনালে ভারতীয় বোলারদের দাপটে বাংলাদেশ আটকে যায় ৫১ রানে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটে জেতে ভারত। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা কোয়ার্টার ফাইনালে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট পায়। এরপর সেমিফাইনালে লঙ্কানরা হারায় এশিয়ান গেমসের ২ বারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে। এরপর ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে নামে শ্রীলঙ্কা। অবশ্য রানার্স হয়ে রুপো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল শ্রীলঙ্কাকে। উল্লেখ্য, আজকের ফাইনাল দেখতে গিয়ে অনেকের মনে পড়তে পারে ২০২২ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালের কথা। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচ জিতে সপ্তম বার এশিয়া সেরা হয়েছিল ভারতের মেয়েরা।
এশিয়ান গেমসে মেয়েদের ক্রিকেটে ব্রোঞ্জ পদক ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ২ বারের এশিয়াডজয়ী পাকিস্তান এবং ২ বারের রানার্স বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে নিগার সুলতানার বাংলাদেশ।