IPL 2025, Ashwani Kumar: তিরিশ টাকা থেকে তিরিশ লাখ; নতুন প্রজন্মের প্রেরণা অশ্বিনীর পরিশ্রম…

IPL 2025, Mumbai Indians vs Kolkata Knight Riders: ছেলেবেলা থেকে অশ্বিনী স্বপ্ন দেখতেন, এক আলোকোজ্জল স্টেডিয়ামে খেলতে নামবেন। তাঁর জার্সির পিঠে লেখা থাকবে নাম। নাম তো অনেকেরই পিঠে লেখা থাকে, রাতারাতি নাম করে ক'জন? অশ্বিনীর মতো?

IPL 2025, Ashwani Kumar: তিরিশ টাকা থেকে তিরিশ লাখ; নতুন প্রজন্মের প্রেরণা অশ্বিনীর পরিশ্রম...
Image Credit source: INSTAGRAM/BCCI

| Edited By: দীপঙ্কর ঘোষাল

Apr 02, 2025 | 2:30 AM

শূন্য না থাকলে ১০০-র মজা থাকে না। অন্ধকার না থাকলে যেমন মেলে না আলো। তেমনই ব্যর্থতা না থাকলে উপভোগ করা যায় না সাফল্য। বারবার ‘না’ শোনেন যাঁরা, তাঁদের ভিতরে কি জেদের খরস্রোতা নদী জন্ম নেয়? এই গল্পের নায়ক যিনি, তাঁর বয়স হয়তো ২৩। কিন্তু ব্যর্থতা গুণতে বসলে রাত কাবাড় হয়ে যেতে পারে। মাত্র তিরিশ টাকা সমতল থেকে এভারেস্টের মাথায় তুলে দিয়েছে তাঁকে। এমন একটা সময় ছিল, অটোর জন্য ধার করতে হত ৩০ টাকা। সেই তিনিই কিনা ৩০ লাখ টাকার মালিক। তাঁর পারফরম্যান্স গ্রাফ শেয়ার মার্কেটকেও হার মানাবে!

সোম-রাতটা জীবনে নামবে কিনা, ধন্দ ছিল না তাঁর মনে। এমন রাতের আকাঙ্খাতেই তো দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়িয়েছেন একটা সময়। পঞ্জাব ফিরিয়ে দিয়েছে। কলকাতা দায় নিতে চায়নি। রাজস্থানও ফিরিয়ে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বানিজ্য নগরী দু’হাত বাড়িয়ে স্বাগত জানিয়েছিল তাঁকে। মুম্বই স্বপ্ননগরী। সেখানেই স্বপ্নপূরণ হল অশ্বিনী কুমারের। কেকেআরকে উল্টো দিকে দেখেই কি জেদ বেড়ে গিয়েছিল? জসপ্রীত বুমরা তাঁর আইডল। সেই বুমরাকেই এ বার পায়নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কী আশ্চর্য, বুমরার অভাব কিনা ঢেকে দিলেন এক তরুণ। যাঁর আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। সোমবার বিকেল পর্যন্ত যাঁর পরিচিত ছিল স্রেফ নেট বোলার। সেই অশ্বিনী কিনা ওয়াংখেড়েতে খেলতে নেমে ৪ উইকেট তুললেন। আন্দ্রে রাসেল, অজিঙ্ক রাহানের মতো নরম-গরম উইকেট তাঁর ঝুলিতে। অভিষেকেই ৪ উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মোহালির ছেলে।

বাবা হরকেশ কুমার সোম-রাতটা ভুলতেই পারছেন না। প্রাচুর্য নেই পরিবারে। ছেলের খেলার জন্য তাই অর্থের জোগান দিতেও পারেননি। ছেলের অবাক উত্থান দেখে বাবা হতবাক হরকেশ পর্যন্ত বলেছেন, ‘আমার কাছে ৩০ টাকা চেয়ে রোজ প্র্যাক্টিসে যেত। শেয়ার অটো করে মোহালি স্টেডিয়ামে গিয়ে প্র্যাক্টিস করবে বলে। বৃষ্টি হোক আর প্রবল রোদ, কোনওদিন কামাই করেনি। ওকে যেদিন নিলাম থেকে কিনেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, আমি জানতাম, প্রতিটা টাকার মূল্য ও জানে। হারিয়ে যাবে না ছেলেটা।’

বয়স যতই কম হোক, অশ্বিনীর মানবিক মুখ দেখে ফেলেছে মোহালি। একের পর এক আইপিএল টিমে ট্রায়াল দিয়ে যখন ব্যর্থ, বন্ধুরা পাশে থেকেছেন। ওই বন্ধুরাই চাঁদা তুলে বল কিনে দিতেন অশ্বিনীকে। তাঁদের নিরাশ করেননি ২৩ বছরের ছেলে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তাই কেনার পর এলাকার সব ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ক্রিকেট কিটস আর বল বিলি করেছেন অশ্বিনী। তাঁর মতো কেউ যেন উঠে আসতে পারেন আইপিএলের মঞ্চে।

ছেলেবেলা থেকে অশ্বিনী স্বপ্ন দেখতেন, এক আলোকোজ্জল স্টেডিয়ামে খেলতে নামবেন। তাঁর জার্সির পিঠে লেখা থাকবে নাম। নাম তো অনেকেরই পিঠে লেখা থাকে, রাতারাতি নাম করে ক’জন? অশ্বিনীর মতো?