দুবাই: পাকিস্তান-আফগানিস্তান বর্ডার খাইবার পাসে বড় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ছ’ফুট ছ’ইঞ্চির বাঁ হাতি পেসারের দাদা রিয়াজও ছিলেন পেসার। পাকিস্তানের হয়ে একটা টেস্টও খেলেছিলেন। কিন্তু তিনি কেরিয়ারে খুব বেশি দূর এগোতে না পারলেও ভাইয়ের মধ্যে ক্রিকেটের খিদেটা জাগিয়ে তুলেছিলেন। টেনিস বলে টেপ লাগিয়ে ছেলেবেলায় বোলিং করতেন শাহিন আফ্রিদি (Shaheen Shah Afridi)। সেই তিনিই এখন বিশ্ব ক্রিকেটের ত্রাস। ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলিকে আউট করে রীতিমতো সুপারস্টার হয়ে উঠেছেন তিনি। প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন ওয়াসিম আক্রম থেকে বিরাট কোহলি।
২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলার পরই চোখে পড়ে যান শাহিন। পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে একটা ম্যাচে সেই সময় ৩৯ রান দিয়ে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁ হাতি পেসার। ওই বছরই লাহোর কালান্দর্সের হয়ে পাকিস্তান সুপার লিগ খেলার সুযোগ পেয়ে যান শাহিন।
আইসিসিকে (ICC) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাহিন বলেছেন, ‘দাদা রিয়াজই আমাকে পেস বোলার তৈরি করেছিল। দেশের হয়ে কোনও সফরে গেলেও দাদার সঙ্গে আমার টেলিফোনে ঠিক যোগাযোগ থাকে। ওই তো আমার প্রথম কোচ।’
লাহোর কালান্দর্সের হয়ে খেলার সময় সইদ আফ্রিদিকে বল করার অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর। কী হয়েছিল ওই ম্যাচে? শাহিন বলেছেন, ‘আফ্রিদিভাই আমার প্রথম বলটাতেই ছয় মেরেছিলেন। কিন্তু পরের বলটাতেই আমি ওকে আউট করেছিলাম। ওর উইকেট পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম।’
২০১৮ সালেই পাকিস্তানের হয়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয় শাহিনের। ইতিমধ্যে ১৯টা টেস্ট খেলে ফেলেছেন তিনি। নিয়েছেন ৭৬টা উইকেট। এই বছরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সেরা বোলিং ছিল ১০-৯৪। শুধু তাই নয়, সাদা বলের ক্রিকেটেও যথেষ্ট সফল তিনি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। মিডলসেক্সের বিরুদ্ধে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৯ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। যার মধ্যে চার বলে পর পর চারটে উইকেটও রয়েছে তাঁর।
ভারতের বিরুদ্ধে দারুণ সাফল্য নিয়ে শাহিন বলেছেন, ‘এই প্রথম আমি পাওয়ার প্লে-তে টানা ৩ ওভার বল করলাম। বল সামান্য মুভ করছিল। পিচ থেকে কিছুটা সাহায্য পাচ্ছিলাম। আর সেই কারণেই শুরুতেই ভারতের উইকেট ফেলতে চেয়েছিলাম। সেটাই হয়েছে।’
রোহিতকে ইয়র্কারে আউট করেছিলেন। রাহুলকে আউট সুইংয়ে। শাহিন বলেছেন, ‘ইয়র্কারটাই আমার বোলিংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। তাই ভারতীয় ওপেনারদের বিরুদ্ধে ইয়র্কার করাটাই ছিল পরিকল্পনা। ওদের যে আউট করতে পারব, সেটা জানতাম।’
বিরাট কোহলির উইকেটটাকেই সবচেয়ে মূল্যবান বাছছেন শাহিন। ‘বিরাটকে আউট করার পরিকল্পনা নিয়েই নেমেছিলাম। কিন্তু ও ভারতের এক নম্বর ব্যাটসম্যান। আমাদের যেমন বাবর আজম। বাবরকে নেটে যে ভাবে বল করি, ঠিক সে ভাবেই বিরাটকে বল করেছিলাম। দ্বিতীয় স্পেলে যখন বল করতে এসেছিলাম, তেমন সুইং পাচ্ছিলাম না। সঠিক লেন্থে একটা স্লো কাটার রাখার চেষ্টা করেছিলাম।’