চেন্নাই সুপার কিংস বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
(২০ ওভারে-১৫৬/৬) (২০ ওভারে-১৩৬/৮)
২০ রানে জয়ী চেন্নাই সুপার কিংস
দুবাই: মরুশহরে এ বার সত্যিই গতবারের রিপ্লে চান না ধোনিরা। আর মাহিব্রিগেড তার প্রমাণ দেখাল প্রথম ম্যাচেই। আরব দেশে এই মরসুমে চেন্নাই কি ফের বিপর্যস্ত হবে? আইপিএলের (IPL) দ্বিতীয় পর্বের প্রথম ম্যাচে শুরুর দিকে এমনটাই মনে হচ্ছিল। অন্তত সিএসকের পাওয়ার প্লে-তে যেভাবে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল চেন্নাই (Chennai Super Kings) তাতে মনে হচ্ছিল ইয়েলোব্রিগেডের ভদ্রস্থ রান করাটাও কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা তো ট্রেলার ছিল। আসল ছবি তো বাকি ছিল। রবিরাতে সিএসকের হিরো ঋতুরাজ গায়কোয়াড়।
টসে জিতে দুবাইয়ের মাঠে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সিএসকে ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুবাইয়ের ছোট মাঠে প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৬ রান তোলে সিএসকে। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) টার্গেট ছিল ১৫৭। ২০ রানে ম্যাচ জিতল সিএসকে। ম্যাচের আগে আশঙ্কা ছিল চোটের কারণে ফাফ ডু প্লেসিকে পাবে না তারা। তবে তা আদতে হয়নি। ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন ডু প্লেসি। কিন্তু বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। প্রথম ওভারেই ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ডু প্লেসি। দ্বিতীয় ওভারে সিএসকেকে দ্বিতীয় ঝটকা দেয় অ্যাডাম মিলনে। মইন আলিকে শূন্যতেই প্যাভিলিয়নে পাঠান মিলনে। তারপর ক্রিজে আসেন অম্বাতি রায়ডু। খেলেছিলেন মাত্র ৩টি বল। তাতেই ঘটে গেল বিপত্তি। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে কনুইতে চোট পান রায়ডু। বাঁ-কনুই সঙ্গে সঙ্গেই ফুলে যায়। যন্ত্রণা নিয়ে রায়াড়ু ফিজিওর সঙ্গে দ্রুত মাঠ ছাড়েন। তাঁর পরিবর্তে ব্যাট করতে নামেন সুরেশ রায়না। কিন্তু রায়না ম্যাজিকও প্রথম ম্যাচে ফিকে। মাত্র ৪ রান করে বোল্টের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। রায়নার পরই দলকে বাঁচাতে মাঠে নামেন মাহি। কিন্তু কোথায় কী! মাত্র ৫টি বল খেলেই ভক্তদের হতাশ করে ফিরে যান ধোনি। পাওয়ার প্লে-তে মুম্বইকে মাহির গুরুত্বপূর্ণ উইকেট এনে দেন অ্যাডাম মিলনে।
পাওয়ার প্লে-তেই চার উইকেট হারিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছিল চেন্নাই। তবে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে টিকে ছিলেন সিএসকের তরুণ ক্রিকেটার ঋতুরাজ গায়কোয়াড়। ৮৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি। ঋতুরাজের ব্যাটে ভর করে একপ্রকার ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছয় ইয়েলোব্রিগেড। ঋতুরাজ ৮৮ রানের দুরন্ত ইনিংস সাজিয়েছিলেন ৯টি চার ও ৪টি ছয় দিয়ে। ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জাডেজার সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ঋতুরাজ। বড় পার্টনারশিপ ভাঙেন জসপ্রীত বুমরা। তিনি আজ চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে নিজের আইপিএল কেরিয়ারের শততম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন। নিজের রেকর্ড ম্যাচে খালি হাতে ফেরেননি বুম বুম বুমরা। জাড্ডুর পর ব্র্যাভোর উইকেট তুলে নেন বুমরা।
রোহিত-হার্দিকের না থাকাটা ছাপ ফেলল মুম্বইয়ের প্রথম ম্যাচে। প্রথমে মনে হচ্ছিল মুম্বই আজ গুছিয়ে শুরু করবে। কিন্তু তা হয়নি। পাওয়ার প্লে-তে চেন্নাই চার উইকেট হারিয়েছিল। মুম্বই তাদের থেকে একটি কম উইকেট হারায়। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আজ অভিষেক হয়েছে আনমোলপ্রীত সিংয়ের। রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন তিনি। ১৪ বলে মাত্র ১৬ রান করলেও তাতে ছিল ২টি চার ও ১টি ছয়। কিন্তু ধোনির অন্যতম সেরা অস্ত্র দীপক চাহারের নকল বল ঠাহর করতে না পেরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। সূর্যকুমার যাদব ও ঈশান কিষাণ মুম্বইকে ম্যাচে ফেরাতে পারতেন। কিন্তু শার্দূল ঠাকুর উইকেট তুলে নেন স্কাইয়ের। তারপরই ঈশান কিষাণের তারপর কায়রন পোলার্ড জস হ্যাজেলউডের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তার পর তিন উইকেট নিয়েছেন বুমরার মতো নিজের আইপিএলের শততম ম্যাচে খেলা ব্র্যাভো। তবে দলকে ম্যাচে ধরে রাখার জন্য লড়াই করেছিলেন মুম্বইকর সৌরভ তিওয়ারি। নিজে হাফসেঞ্চুরিও করেছিলেন। (৫০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন সৌরভ)। কিন্তু আজ তো মুম্বইয়ের দিন ছিল না। ফলে মরুশহরে আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম ম্যাতে মুম্বইকে আটকে দিল চেন্নাই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: চেন্নাই সুপার কিংস:-ঋতুরাজ গায়কোয়াড় (৮৮*), রবীন্দ্র জাডেজা (২৬), ব্র্যাভো (২৩), সুরেশ রায়না (৪), মহেন্দ্র সিং ধোনি (৩)।
ট্রেন্ট বোল্ট (৩৫/২), অ্যাডাম মিলনে (২১/২), জসপ্রীত বুমরা (৩৩/২)।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স:- সৌরভ তিওয়ারি (৫০*), কুইন্টন ডি কক (১৭), আনমোলপ্রীত সিং (১৬), ঈশান কিষাণ (১১), কায়রন পোলার্ড (১৫), অ্যাডাম মিলনে (১৫)।
ব্র্যাভো (২৫/৩), দীপক চাহার (১৯/২), শার্দূল ঠাকুর (২৯/১), জস হ্যাজেলউড (৩৪/১)