কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়
পঞ্জাব কিংস- ১০৬/৮ (২০ ওভার)
চেন্নাই সুপার কিংস- ১০৭/৪ (১৫.৪)
দুই দলে তারকার ছড়াছড়ি। একদিকে ধোনি-ডুপ্লেসি-রায়না, অপরদিকে গেইল-রাহুল-পুরান। বিগ হিটারদের বিগ ম্যাচ। চার-ছক্কার বন্যা বইবে ওয়াংখেড়েতে। এমনটাই আশা করেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কিন্তু কোথায় কি! সব লাইমলাইট কেড়ে নিয়ে গেলেন দীপক চাহার। প্রথম হাফেই খেলা শেষ করে দিলেন। গতি, সুইং, লাইন লেন্থে ধরাসায়ী পঞ্জাবের হেভিওয়েট ব্যাটিং লাইনআপ। চাহারের বোলিং ফিগার ৪-১-১৩-৪। একটা স্পেলেই চাহারকে দিয়ে বল করিয়ে গেলেন ধোনি। আর সেই স্পেলেই ম্যাচের ভাগ্য লিখে দিলেন চাহার। এক একটা ডেলিভারি এক এক রকমের। দু’দদিকেই বল সুইং করালেন। যা দেখে ভারতীয় দলের কোচ রবি শাস্ত্রীও বলে উঠলেন, ‘সুপার ভ্যারিয়েশনস’।
Make way for Deepak Chaaar! 4️⃣#PBKSvsCSK #WhistlePodu #Yellove ?? pic.twitter.com/LDZy2q4Ez8
— Chennai Super Kings – Mask P?du Whistle P?du! (@ChennaiIPL) April 16, 2021
গত আইপিএলে (IPL) করোনায় (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছিলেন দীপক চাহার (Deepak Chahar)। ২৮ দিন কোয়ারান্টিনে থাকার পর ৪ দিনের প্রস্তুতিতে মাঠে নেমেছিলেন। দুবাই আইপিএলটা ভালো যায়নি। টি-২০ বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে এই আইপিএলে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে চান ২৮ বছরের এই পেসার।
সুইংয়ে গেইল, মায়াঙ্কদের ঘায়েল করে চাহারের বক্তব্য, ‘সুইংয়ের থেকেও সিমের উপর জোর দিয়েছি। সঠিক জায়গায় বল করেছি।’ পঞ্জাবের স্কোরবোর্ডে রান তখন ৫ উইকেটে ২৬। মায়াঙ্ক আগারওয়াল, গেইল, পুরান, হুডারা ফিরলেন চাহারের আগুনে পেসে। লোকেশ রাহুলকে রান আউট করলেন রবীন্দ্র জাদেজা। ভারতীয় দল হোক কিংবা সিএসকে ফিল্ডার জাড্ডু এখনও সম্পদ। গেইলের ক্যাচও ধরলেন ঝাঁপিয়ে।
That’s that from Match 8.@ChennaiIPL chase down the target in 15.4 overs and win by 6 wickets.
Scorecard – https://t.co/L0gFzXxDzS #VIVOIPL #PBKSvCSK pic.twitter.com/RgC75BEw1a
— IndianPremierLeague (@IPL) April 16, 2021
পঞ্জাব কিংসের টপ অর্ডারে যত গালভরা নাম, মিডল অর্ডারে ততই আনকোরাদের ছড়াছড়ি। টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ১০০ পেরোবে না প্রীতির দলের স্কোর। জারার খারাপ দিনে দলের সম্মান বাঁচালেন অন্য শাহরুখ খান। একাই লড়াই চালালেন চেন্নাইয়ের হেভিওয়েট বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে। ৩৬ বলে ৪৭ রান করলেন শাহরুখ। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১০৬ রান তোলে পঞ্জাব।চাহারের ৪ উইকেটের পাশাপাশি ১টা করে উইকেট নিলেন সাম কারান, ব্র্যাভো আর মঈন আলি।
চলতি আইপিএলে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান পঞ্জাব কিংসের। আবার সবচেয়ে কম রানের পাশেও সেই প্রীতির দলের নাম। এ বারের আইপিএল যেন অনেকটাই আলাদা। এখানে ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে বোলাররা পাল্টা লড়াই চালাচ্ছেন। অধিকাংশ ম্যাচেই ব্যর্থ হচ্ছে বিভিন্ন দলের টপ অর্ডার। কখনও পেসাররা, কখনও স্পিনাররা ফায়দা তুলছেন। ওয়াংখেড়ের মতো উইকেটেও প্রথমে ব্যাটিং করে রান উঠছে না। ব্যাটসম্যানদের ভুল শট নির্বাচন নাকি বোলারদের বিধ্বংসী রূপ? কোনটা বেশি কার্যকর হচ্ছে তা নিয়ে দুই ভাগ ক্রিকেটমহলও।
অল্প পুঁজি নিয়ে ধোনির সিএসকে-কে থামানো যে কঠিন তা বুঝতেই পেরেছিলেন কেএল রাহুল। হলোও তাই-ই। ওভারেই প্রয়োজনীয় রান তুলে নিল সিএসকে। ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে ফিরিয়ে একটা ধাক্কা দেন আর্শদীপ সিং। তবে তিনে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেন মঈন আলি।
সামি, মেরেডিথ কাউকে রেহাই দিলেন না। ৩১ বলে ৪৬ করে ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। ডু প্লেসি । ধোনির আগে না নামা নিয়ে অনেক সমালোচনার ঝড় বইছে ক’দিন ধরে। প্রথম ম্যাচে হারের পরই ধোনিকে উদ্দেশ্য করে একের পর এক বাউন্সার ছুঁড়ে দেন সমালোচকরা। চেন্নাই সুপার কিংসের যেমন শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ, তাতে নিশ্চিন্ত থাকতেই পারেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’। দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্রিকেট কেরিয়ারে নিন্দুকদের কত সমালোচনাই তো হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন মাহি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: পঞ্জাব কিংস- ১০৬/৮(শাহরুখ খান ৪৭, রিচার্ডসন ১৫, দীপক চাহার ৪/১৩), চেন্নাই সুপার কিংস- ১০৭/৪ (মঈন আলি ৪৬, ডুপ্লেসি ৩৬ অপরাজিত, সামি ২/২১)। চেন্নাই সুপার কিংস জয়ী ৬ উইকেটে।