যে ভয় ছিল, সেটাই যেন হল। আফগানিস্তানের ভয়ঙ্কর ওপেনিং জুটি ভারতের বিরুদ্ধেও বিধ্বংসী হয়ে উঠল। সিদ্দিকুল্লা অটল ও জুবেইদ আকবরি ১৩৭ রান যোগ করেন। জুবেইদ ৪১ বলে ৬৪ এবং অটল ৫২ বলে ৮৩ রান করেন। তিনে নামা অভিজ্ঞ করিম জানাত করেন ২০ বলে ৪১। জয়ের হ্যাটট্রিক করে সেমিফাইনালে উঠেছিল ভারত এ দল। কিন্তু নকআউটের মতো ম্যাচে ২০৭ রান তাড়া করা সহজ ছিল না। পাওয়ার প্লে-তেই তিন উইকেট হারিয়ে ভারতের চাপ বাড়ে। শেষ দিকে রমনদীপ লড়াই চালালেও যথেষ্ট ছিল না।
পিচ আরও স্লো হয়ে আসছিল। শট খেলতে সমস্যায় পড়েন ভারতীয় ব্যাটাররা। তবে দশম ওভারে কোয়েস আহমেদের বলে নেহাল পরপর ডেলিভারিতে ছয় এবং জোড়া বাউন্ডারি মারতেই একটু হলেও স্বস্তি ফেরে ভারতীয় শিবিরে। কিন্তু ওভারের শেষ বলে বড় বুল করে বসেন নেহাল ওয়াদেরা। শর্ট থার্ডে ফিল্ডার খেয়াল করেননি। বল ঠেলেই রান নিতে দৌড়েছিলেন। সঠিক সময়ে ক্রিজে ফিরতে পারেননি। রান আউট হয়ে ফেরেন নেহাল। ইনিংসের মাঝপথে বোর্ডে ভারত এ-দলের স্কোর দাঁড়ায় ৮০-৪।
আয়ুষ বাদোনির সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন কেকেআরের অলরাউন্ডার রমনদীপ সিং। ধীর গতিতে লক্ষ্যে এগচ্ছিল ভারত। আয়ুষের হাই-ক্যাচে জোড়া ফিল্ডার তাড়া করেন। শেষ অবধি দারউইশ ক্যাচ নেন। আয়ুষ ফিরতেই ভারতের জয়ের আশা কার্যত শেষ হয়ে যায়। তবে ক্রিজে রমনদীপ থাকায় তখনও স্বপ্ন দেখছিল ভারত। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে বেশ কিছু ভালো ইনিংস রয়েছে তাঁর। রমনদীপের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দেন অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ খেলা অলরাউন্ডার নিশান্ত সিন্ধু। রমনদীপ মূলত দ্রুত রান তোলায় নজর দিয়েছিলেন। অ্যাঙ্কর করছিলেন নিশান্ত।
শেষ তিন ওভারে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫৩। নিশান্ত সিন্ধু হঠাৎই গিয়ার শিফ্ট করেন। ১৮তম ওভারে বাউন্ডারির হ্যাটট্রিক। চাপ অনেকটা হালকা হয়। কিন্তু ৬৭ রানের পার্টনারশিপ ভাঙতেই ফের চাপে ভারত। রমনদীপের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে নিশান্ত রান আউট। শেষ ২ ওভারে ৩৮ রানের টার্গেট দাঁড়ায়। স্ট্রাইকের অপেক্ষায় ছিলেন রমনদীপ। দ্বিতীয় বলেই রমনদীপকে স্ট্রাইক দেন অংশুল কম্বোজ। সঙ্গী বোলার। ফলে রমনদীপকেই দায়িত্ব নিতে হত। অভিজ্ঞ করিম জানাতের বিরুদ্ধে ১৯তম ওভারে লড়াইটা সহজ ছিল না। ২৬ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন রমনদীপ। শেষ বলে সিঙ্গল নিয়ে স্ট্রাইক রাখেন রমনদীপ।
চূড়ান্ত নাটকীয় মোড় নেয় ম্যাচ। শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৩০ রান! স্ট্রাইকে রমনদীপ। অন্তত পাঁচটি ছক্কা প্রয়োজন। প্রথম বলে সিঙ্গল নেওয়ার অপশন থাকলেও লাভ হত না। স্পেলের প্রথম ৩ ওভারে ২৩ রান দেওয়া রহমান দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ইয়র্কার দেন। বাকি চার বলে ৩০ সম্ভব ছিল না। এর জন্য নো-বল, ফ্রিট দরকার। তৃতীয় ডেলিভারিতে বাউন্ডারি মারেন রমনদীপ। যদিও হাল ছেড়ে দিয়েছেন ততক্ষণে। জয়ের কাছে পৌঁছেও ২০ রানে হার। সেমিফাইনালেই বিদায় ভারতের। রমনদীপ শেষ বলে আউট হন। ৩৪ বলে ৬৪ রান করেন নাইট তারকা।