AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Buddhadeb Bhattacharya: অম্বর রায়ের সঙ্গে খেলা থেকে সৌরভের জন্য লড়াই, বুদ্ধবাবুর ক্রিকেট প্রেম ‘অমর’

Indian Cricket-Sourav Ganguly: সব ভালোর মাঝেও একটা অধ্যায় আজীবন কাঁটা হয়ে থাকবে। গ্রেগ চ্যাপেল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পছন্দেই ভারতের কোচ হয়ে এসেছিলেন গ্রেগ। কিন্তু ভালোর বদলে খারাপই হয়েছিল বেশি। টিম কম্বিনেশনে একাধিক পরিবর্তন, সৌরভকে নেতৃত্ব থেকে সরানো, ২০০৭ ওয়ান ডে বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডেই বিদায়। এবং সর্বোপরি সৌরভকে টিম থেকেই বাদ!

Buddhadeb Bhattacharya: অম্বর রায়ের সঙ্গে খেলা থেকে সৌরভের জন্য লড়াই, বুদ্ধবাবুর ক্রিকেট প্রেম 'অমর'
Image Credit: X
| Updated on: Aug 08, 2024 | 8:14 PM
Share

বাঙালির কাছে সব খেলার সেরা ফুটবল। কিন্তু সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য প্রেমটা যেন ভাগ হয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় ক্রিকেটের আইকন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বিশ্ব ক্রিকেটেরও। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া এবং ফিরে আসা। বিশ্বক্রিকেটে সেরা প্রত্যাবর্তন হিসেবে ধরা হয় সৌরভের ফেরাকেই। সকলে গর্ব করে বলতে পারেন, এ ভাবেও ফিরে আসা যায়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায় যেমন মাঠে লড়াই করেছেন, তেমনই মাঠের বাইরে শতশত ক্রিকেট প্রেমী। তাঁদের মধ্যে একজন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আজ প্রয়াত হয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ক্রিকেট প্রেম কি সৌরভের জন্যই?

প্রশ্নটা হয়তো ভুল। লেখালেখি, রাজনীতির বাইরে বুদ্ধদেববাবু ছিলেন ক্রিকেট প্রেমীও। কৈশোরে নিজেও ক্রিকেট খেলেছেন। সেটা নিতান্তই ভালোবাসা থেকে। তবে চোখের সমস্যার পর থেকে ক্রিকেট খেলাটা শুধু দেখায় পরিণত হয়েছে। আর সেটার নেপথ্যে যেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে অনেকবারই এক ফ্রেমে দেখা গিয়েছে। সেটা নতুন নয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতীয় দলের ক্রিকেটার এক মঞ্চে আসতেই পারেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী একজন ক্রিকেটারের জন্য পার্লামেন্ট অবধি লড়াই পৌঁছে দিচ্ছেন? এটা এমনিই হতে পারে না।

ভারতীয় ক্রিকেটে সৌরভের শুরুটা ছিল স্বল্পমেয়াদী। সেই ১৯৯২ সালে। অস্ট্রেলিয়ায় বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপে ওয়ার্ল্ড সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে আন্তর্জাতিকে অভিষেক। জায়গা পাকা হয়নি। ভারতী ক্রিকেট থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন। আরও পরিশ্রম, লড়াই শেষে ১৯৯৬ সালে লর্ডসে সেই ঐতিহাসিক টেস্ট অভিষেক। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে তাঁর কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায় ক্যাপ্টেন্সি। ভারতীয় ক্রিকেটের অন্ধকার সময়ে নেতৃত্ব নিয়েছিলেন সৌরভ। আলোয় ফিরিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটকে। শিখিয়েছিলেন, বিদেশের মাটিতেও কীভাবে লড়াই করতে হয়, জিততে হয়।

সব ভালোর মাঝেও একটা অধ্যায় আজীবন কাঁটা হয়ে থাকবে। গ্রেগ চ্যাপেল। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পছন্দেই ভারতের কোচ হয়ে এসেছিলেন গ্রেগ। কিন্তু ভালোর বদলে খারাপই হয়েছিল বেশি। টিম কম্বিনেশনে একাধিক পরিবর্তন, সৌরভকে নেতৃত্ব থেকে সরানো, ২০০৭ ওয়ান ডে বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডেই বিদায়। এবং সর্বোপরি সৌরভকে টিম থেকেই বাদ!

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে টিম থেকে বাদ দেওয়ার পর গর্জে উঠেছিল বাংলা। সৌরভকে পুত্রস্নেহে ভালোবাসতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এই অন্যায় তিনি মেনে নেবেনই কেন! তৎকালীন পুর ও নগরোন্নয়ণ মন্ত্রী সৌরভের প্রিয় অশোক দা (অশোক ভট্টাচার্য) এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। রাজ্যের প্রাক্তন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ফোনে টিভি নাইন বাংলাকে বললেন, ‘বুদ্ধদা ক্রিকেট শুধু দেখতেন নয়, ক্রিকেটটা বুঝতেন। নিজে খেলেছেন। অম্বর রায়ের (বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার) সঙ্গে খুবই ভালো বন্ধুত্ব ছিল, তার সঙ্গেও খেলেছেন। পরে তো সৌরভের সঙ্গে খুবই ভালো সম্পর্ক হয় বুদ্ধদার। যতই ব্যস্ত থাকুন, খেলা দেখার সুযোগ না পেলে স্কোর জিজ্ঞেস করতেন, খোঁজ নিতেন।’

শিলিগুড়ির ঐতিহ্য়বাহী কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম তৈরির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, জানালেন অশোক ভট্টাচার্য। বলেন, ‘সে সময় আমি মন্ত্রী ছিলাম না। স্টেডিয়াম তৈরির জন্য টাকা প্রয়োজন। বুদ্ধদাকে বললাম। উনিই সব ব্য়বস্থা করে দিয়েছিলেন। কল্যাণীর মাঠটাও বুদ্ধদাই উদ্বোধন করেছিলেন। আমার এখনও মনে আছে, বলে শট মেরেছিলেন বুদ্ধদা। আমিও পাশে ছিলাম।’

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর ক্রিকেট প্রেম প্রসঙ্গে সৌরভ আসবে না তা আবার হয় নাকি! সৌরভ টিম থেকে বাদ পড়ার পর কী হয়েছিল, সে কথাই জানালেন অশোক ভট্টাচার্য। ‘বুদ্ধদাকে বিষয়টা বলতেই, শরদ পওয়ারকে (ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি) ফোন করেন বুদ্ধদা। সৌরভকে কেন বাদ দেওয়া হল, এ নিয়ে জানতে চান।’ আরও নানা কথাই উঠে আসছিল তাঁর কথায়। প্রাক্তন মন্ত্রী শেষে যোগ করলেন, ‘খেলার বিষয়ে কোনও সময় বুদ্ধদার থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়নি। সব সময়ই পাশে থেকেছেন।’