কলকাতা: ইডেন গার্ডেন্স এবং কলকাতা ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক ইতিহাসের সাক্ষী। ভারত-অস্ট্রেলিয়া সেই টেস্টই বা ভোলা যায় কী করে! অস্ট্রেলিয়ার অশ্বমেধের ঘোড়া আটকে গিয়েছিল ভারতের কাছে। স্থান ইডেন গার্ডেন্স। সেই ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচের ২২ বছর কেটে গেল। ফলো অন খেয়ে দ্রাবিড়-লক্ষ্মণ জুটির সেই ঐতিহাসিক ব্যাটিং ভারতীয় ক্রিকেটে মিথ হয়ে গিয়েছে। স্টিভ ওয়ার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছিল সৌরভের ভারত। দ্রাবিড়-লক্ষ্মণ জুটিতে উঠেছিল ৩৭৬ রান। ভারতকে ফলো অন করায় অস্ট্রেলিয়া। এরপরই ইডেনের বাইশ গজে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ভিভিএস লক্ষ্মণ আর রাহুল দ্রাবিড়। ভারতের ২৩২ রানে ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে দ্রাবিড়-লক্ষ্মণ জুটির সেই বিধ্বংসী ব্যাটিং। ভারতের স্কোরকে ৬০০-র উপর নিয়ে যান। ২৮১ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন লক্ষ্মণ। ৪৫২ বলে ২৮১ রানের ইনিংসে সাজানো ছিল ৪৪টা চার। অন্য দিকে, ৩৫৩ বলে ১৮০ রান করেন ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ রাহুল দ্রাবিড়। বিস্তারিত TV9Bangla-য়।
২০০১ সালের ওই সিরিজে ০-১ পিছিয়ে থেকেও ২-১ জিতেছিল ভারত। ওই ইডেন টেস্টে মাঠের বাইরের ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলেন হেমাঙ বাদানি। চতুর্থ দিনে দ্রাবিড়-লক্ষ্মণ জুটিকে আউটই করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। সারা দিন পিচ আঁকড়ে ছিলেন। সেই ঘটনার কথা মনে করে হেমাঙ বাদানি লেখেন, ‘তৃতীয় দিনের পরই আমাদের জামা কাপড় গোছানো হয়ে গিয়েছিল। আগে ভাগেই হোটেল থেকে সুটকেস নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিমানবন্দরে। ঠিক ছিল, ম্যাচ শেষ হওয়ার পর আমরা মাঠ থেকে সোজা চলে যাব বিমানবন্দরে। কিন্তু সে দিন দ্রাবিড়-লক্ষ্মণ জুটিকে আউটই করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। আমরা ক্রিকেটের পোশাক পরেই হোটেলে সারাক্ষণ বসেছিলাম। রাত ৯টা অবধি জামা কাপড় বদলাতে পারিনি। কেউ কেউ তো ওই পোশাকেই হোটেলের রেস্তোরাঁয় ডিনার সারে।’
ওই ম্যাচে ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৫৭ রান তোলে। ভারতকে ফলো অন করাতে গিয়ে পাল্টা চাপে পড়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ভারত ডিক্লেয়ার দেওয়ার পর ২১২ রানে শেষ হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নেন হরভজন সিং। প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। তার মধ্যে ছিল একটা হ্যাটট্রিকও। এই টেস্ট ঘিরে আরও অনেক ঘটনাও রয়েছে। ম্য়াচের আগে থেকেই জমে উঠেছিল মৌখিক লড়াই। টসের আগে অজি অধিনায়ক স্টিভ ওয়াকে দীর্ঘ সময় মাঠে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় দেরী করে নামেন। এই নিয়ে বিতর্কও হয়েছিল। সৌরভ ইচ্ছাকৃত দেরী করেছেন, এমনটাও বলা হত। যদিও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে সৌরভ জানিয়েছিলেন, ব্লেজার খুঁজে পেতে দেরী হতেই নামতে পারছিলেন না।