কলকাতা : সবার স্কুল জীবনে এমন অনেক কিছু লুকিয়ে থাকে, যা প্রকাশ্যে এলে যে কেউ চমকে যায়। এও তেমনই এক ঘটনা। নানা স্মৃতিতে ঘিরে থাকে স্কুল জীবন। মজার ঘটনাও কম থাকে না তাতে। জীবনের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে সে সব হারিয়ে গেলেও এক-একসময় ফিরে আসে। সেলিব্রিটিদের স্কুল জীবনেও এমন অনেক ঘটনা থাকে। যেগুলো হয়তো প্রকাশ্যে আসে না। কখনও সেই ঘটনা যেমন অনাবিল আনন্দ বয়ে আনে, তেমনই কিছুটা আক্ষেপও থাকে। মনে হয়, এমনটা বোধ হয় না করলেই হত। আচ্ছা ভারতীয় ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) স্কুল জীবনেও কি এমন ঘটনা রয়েছে? অবশ্যই। তেমন ঘটনা বলতে বলতেই সৌরভের মুখে মুচকি হাসি। এক সময়ের দাপুটে অধিনায়ক। বর্তমানে বোর্ড সভাপতি (BCCI)। ক্রিকেট জীবনে শোয়েব আখতার, ব্রেট লি-দের মতো এক্সপ্রেস বোলারদের দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন। কিন্তু অঙ্কের টিচারের বাউন্সারে একেবারেই ‘সেট হতে’ পারছিলেন না।
আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন। আগামী ৮ জুলাই ৫০ পূর্ণ করবেন বাঙালির অন্যতম প্রিয় নায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। জন্মদিনে নিজের শহরে থাকতে পারবেন না। আজই চলে যাচ্ছেন আয়ারল্যান্ডে। কাল থেকে ডাবলিনে শুরু হচ্ছে ভারত-আয়ারল্যান্ডের দু’ম্যাচের টি২০ সিরিজ। এরপর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট এবং সাদা বলে জোড়া সিরিজ রয়েছে ভারতের। সে কারণেই যাচ্ছেন বোর্ড সভাপতি সৌরভ। নিজের শহরে আগে ভাগেই ৫০ তম জন্মদিন পালন হল তাঁর। সেখানেই সৌরভের স্কুল জীবনের নানা মজার কথা উঠে এল। আগাম জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে ছিলেন তাঁর স্কুলের অঙ্কের টিচার। তিনিই শোনালেন কিশোর সৌরভের কীর্তির কথা। যার ফলে বাংলার মাস্টারমশাই আতঙ্কে থাকতেন।
অঙ্কের টিচার স্মৃতির ঝাঁপি খুলতে যে প্রসঙ্গ বেরিয়ে এল। সেভেন থেকে টেন পর্যন্ত স্কুলে সৌরভের বন্ধুদের একটা গ্রুপ ছিল। ক্লাস রুমে এক সঙ্গে বসতেন তাঁরা। বাংলার ক্লাস একেবারেই মন দিয়ে করত না সৌরভের গ্রুপ। ক্লাসরুমকে তখন ‘আড্ডাঘর’ বানিয়ে ফেলতেন। বাংলার টিচার কাশলে, সৌরভরাও তাঁর নকল করতেন। হাসলে তাঁরাও হাসতেন। নিয়মিত এমন ঘটনায় তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন বাংলার শিক্ষক। একদিন বাংলার টিচার হঠাৎই সৌরভকে পড়া ধরেন। স্বাভাবিক ভাবেই অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়েন জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। সে সময় মোক্ষম জবাব দিয়েছিলেন বাংলার টিচার। বলেন-‘আমি হাসলে তুমি হাসো, আমি কাশলে তুমি কাশো, আমি কাঁদলে তুমি কাঁদো, কিন্তু আমার ভাবনার সঙ্গে তোমার কোনও মিল নেই।‘
কিশোর বয়সের সেই ঘটনা তখন মজার মনে হলেও, এখন সৌরভ উপলব্ধি করতে পারেন হয়তো ঠিক করেননি। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সৌরভ বলেন, ‘আমি তখন ক্লাস ইলেভেনে পড়ি। গাড়ি ড্রাইভ করে যাচ্ছিলাম। হঠাৎই রাস্তায় বাংলার টিচারকে দেখতে পাই। গাড়ি দাঁড় করিয়ে স্যার বলে ডেকে উঠি।‘ সৌরভের ডাকে সাড়া দেননি বাংলার টিচার। বরং, অন্য ঘটনা ঘটে। সৌরভই জানালেন- ক্লাস সেভেন থেকে টেন, বাংলার টিচারকে এত বিরক্ত করেছিলেন যে, বাংলার টিচার সৌরভকে দেখে পড়িমড়ি করে ছুটে অন্য গলিতে পালিয়ে যান। পুরনো ঘটনার আতঙ্ক থেকেই যে বাংলার টিচার এমনটা করেছিলেন, আন্দাজ করেছিলেন সৌরভ।