মুম্বই: বয়সটা নেহাতই একটা সংখ্যা আইপিএলের (IPL) মঞ্চে সকলের চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করে দিচ্ছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের দীনেশ কার্তিক (Dinesh Karthik)। গত মরসুমে কিং খানের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) হয়ে খেলেছিলেন কার্তিক। মরসুমের মাঝপথে ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। ইওন মর্গ্যান নেন তাঁর জায়গা। ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়েও ব্যাট হাতে খুব একটা সুফল পাননি ডিকে। কিন্তু আগের মরসুমের কার্তিক আর এ বারের কার্তিককে মেলানো বেশ কঠিন। এ বারের আইপিএলের নিলাম আসর থেকে তাঁর পুরনো দল আরসিবি (RCB) ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেয় দীনেশকে। আর বেগুনি জার্সি ভুলে সকলকে চমকে দিয়ে ৩৬-এর কার্তিক রীতিমতো আগুন ঝরাচ্ছেন আরসিবির জার্সি গায়ে চাপিয়ে।
২০২১ সালে কেকেআরের হয়ে ১৭টি ম্যাচে খেলে কার্তিক করেছিলেন মোট ২২৩ রান। আর চলতি আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে মাত্র ৬টি ম্যাচে খেলেই কার্তিকের ঝুলিতে এসেছএ ১৯৭ রান। ফলে এই পরিসংখ্যানটাই বলে দিচ্ছে, এই ডিকে যেন ২.০ ভার্সন। আর শুধু তাই নয়, কেকেআরকে যে দীনেশ জেতাতে পারতেন না, সেই তিনিই কিনা এ বারের আইপিএলের সেরা ফিনিশারের তকমাটা হাসতে হাসতে নামের পাশে পেয়ে গিয়েছেন।
চলতি মরসুমে কার্তিকের ব্যাটে ধারাবাহিকভাবে রান আসছে। আরসিবি তাঁকে যে দায়িত্বটা দিয়েছে, সেটা তিনি বেশ ভালো ভাবে পালন করছেন। শনিবার রাতে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ঋষভ পন্থের দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ৩৪ বলে ডিকের ৬৬ রানের নট আউট ইনিংসটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল আরসিবির জন্য। এই ইনিংসের সুবাদে ম্যাচের সেরার পুরষ্কারও গিয়েছে ডিকের ঝুলিতে। ২০১৯ সালের পর থেকে জাতীয় দলে আর ডাক পাননি তামিলনাড়ুর ছেলে দীনেশ। তবে এই আইপিএল শুরুর আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, আবারও একবার দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন তিনি। তাই আইপিএলের মঞ্চটাকেই তিনি বেছে নিয়েছেন নিজের প্রতিভা দেখানোর জন্য। কথায় বলে, ‘পুরনো চাল ভাতে বাড়ে’- সেই ভাবেই ডিকে চলতি আইপিএলের প্রতিটা ম্যাচে নিজের জাত চেনাচ্ছেন। পাশাপাশি এই ধারাবাহিক পারফম্যান্সের জন্য নির্বাচকদেরও নীরবে একটা ইঙ্গিত দিয়ে রাখছেন।
কোনও রাখঢাক না করেই জাতীয় দলে ফিরতে চাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন ডিকে। পন্থের দিল্লির বিরুদ্ধে ম্যাচের সেরার পুরষ্কার নিয়ে দীনেশ বলেন, “আমার লক্ষ্য সত্যিই অনেক বড়। আমি সেই কারণে কঠোর পরিশ্রমও করে চলেছি। আমার লক্ষ্য আমার দেশের হয়ে বিশেষ কিছু করা। আমার এই সফরের অংশ এই ইনিংসটা। ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার আমি সবটাই করছি। এটা জানতে পেরে ভালো লাগছে যে, মানুষ আমার মধ্যে ধীরস্থিরভাব খুঁজে পেয়েছে। পজিশন এবং স্থিরতা হল সত্য়ি বলতে কী কঠোর অনুশীলনের ফল।” কার্তিকের ফ্যানেরা তাঁর দুরন্ত পারফরম্যান্সে মুগ্ধ। এ বার এই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে টুর্নামেন্ট শেষ করাটাই আসল কাজ ডিকের। তারপর তো সময়ই বলবে, তাঁর ওপর ভাগ্যদেবী প্রসন্ন হন কিনা।
আরও পড়ুন: IPL 2022: ‘বিশেষ দিনে বিশেষ শতরান’ পেয়ে আপ্লুত লোকেশ রাহুল