অভিষেক সেনগুপ্ত
এক যুগের অপেক্ষা। ২০১১ সালে ভারতের মাটিতে হয়েছিল বিশ্বকাপ। দ্বিতীয় বার ওয়ান ডে ফরম্যাটে বিশ্বজয়ের স্বাদ পেয়েছিল ভারত। অপেক্ষা তার আগেই মিটতে পারতো। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছিল ভারত। একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারকে নিয়ে দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা অধ্যায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দীর্ঘ এক যুগ পর ফের ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ। রোহিতের নেতৃত্বে ভারত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে, এমনটাই বিশ্বাস। আমেদাবাদে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর TV9 Bangla Sports-কে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যা বললেন।
দেশ এবং বাঙালির গর্ব সৌরভ। ২০১১ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সেই টিম ইন্ডিয়া কার্যত সৌরভেরই হাতে গড়া। বিশ্বজয়ের সেই টিমে সৌরভের তরুণ আবিষ্কাররাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে সুযোগ দিয়ে টিমে জায়গা পাকা করার রাস্তা গড়ে দিয়েছিলেন। বীরেন্দ্র সেওয়াগ, জাহির খান, হরভজন সিং, যুবরাজ সিংরাও সৌরভের ছায়ায় বেড়ে উঠেছিলেন। সেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যে চ্যাম্পিয়ন চিনতে পারেন, এর উদাহরণ অনেক আগেই পাওয়া গিয়েছে। এ বারের বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে সৌরভ বলছেন, ‘এই টিম ফেভারিট। আমার মনে হচ্ছে ভারত চ্যাম্পিয়ন হবে।’
তেইশের বিশ্বকাপে শুরুতে হোঁচট খেতে পারত ভারতীয় দল। চেন্নাইতে উদ্বোধনী ম্যাচে সাময়িক প্যানিক বাটনে চাপ পড়েছিল। পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র ২০০ রান তাড়া করতে নেমে ২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ভারত। যদিও বিরাট কোহলি এবং লোকেশ রাহুলের অনবদ্য পার্টনারশিপ ভারতকে সহজ জয় এনে দেয়। দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে রোহিতের মারকাটারি ব্যাটিং। সদ্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একপেশে জয়। রোহিত, বিরাট, রাহুল এবং পাকিস্তান ম্যাচে শ্রেয়স আইয়ারও ছন্দে ফেরেন। বোলিং আক্রমণ শুরু থেকেই ভরসা দিচ্ছে। সৌরভের কথায়, ‘ভারত ঠিক সময় পিক করেছে। টানা তিন ম্যাচে জয়। খুব ভালো এগচ্ছে। রোহিত দারুণ ব্যাট করছে।’
বিশ্বকাপ শুরুর আগে অন্যতম ফেভারিট মনে করা হচ্ছিল পাকিস্তানকেও। কয়েক সপ্তাহ আগেও আইসিসি ওডিআই ক্রমতালিকায় শীর্ষস্থানে ছিল পাকিস্তান। ওডিআই ব্যাটারদের তালিকায় শীর্ষে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। প্রথম দু-ম্যাচ জিতে দারুণ ছন্দেও ছিল পাকিস্তান। ভারতের বিরুদ্ধে এ ভাবে হারবে, সেটা হয়তো কেউ প্রত্যাশা করেনি। পুরোপুরি একপেশে ম্যাচ। সৌরভও অবাক পাকিস্তান টিমের মানসিকতায়। সৌরভের কথায়, ‘এই পাকিস্তান টিমকে পুরো অচেনা লাগছে। আমাদের সময়ের পাকিস্তানের সঙ্গে এই টিমের কোনও তুলনাই হয় না। এই টিমের ব্যাটিং বড্ড ভঙ্গুর। বাকি ম্যাচে কী করবে জানি না। অনেক বদলের জায়গা রয়েছে।’
ভারতের বিরুদ্ধে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে পাকিস্তান। শুরুটা দুর্দান্ত হয়। ১৫৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে। সেখান থেকে ভারতীয় বোলারদের দাপট। ৩৬ রানে বাকি ৮ উইকেট তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া। বুমরা, কুলদীপ, জাডেজা, হার্দিক সিরাজের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ। ১৫৫-২ থেকে ১৯১ রানেই অলআউট পাকিস্তান। ভারত ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয়। টিম ইন্ডিয়ার লক্ষ্য এ বার টুর্নামেন্টের পরবর্তী ম্যাচে।