ভারত ৩০০-৬
শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়
একটা টেস্ট জিততে গেলে কোনও একজনকে একটা বড় রান করতে হয়। আর কুড়িটা উইকেট তুলতে হয় বোলারদের। চিপকের প্রথম দিন প্রথম শর্তটা পূরণ করে ফেলেছে ভারত। রোহিত শর্মার ১৬১ রানের ইনিংস। সেই সঙ্গে অজিঙ্ক রাহানের ৬৭। এটা বলাই যায় যে, ইংল্যান্ড শিবিরে ধীরে ধীরে ঢুকে পড়ছে চাপটা। ক্রিজে এখনও ঋষভ পন্থ রয়েছে। কাল যদি ৩৫০-৪০০ তুলে ফেলতে ভারত, তা হলে কিন্তু জো রুটের টিম প্রবল চাপ নিয়েই প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামবে।
That’s Stumps on Day 1 of the 2nd @Paytm #INDvENG Test! @ImRo45‘s 161 & @ajinkyarahane88‘s 67 guide #TeamIndia to 300/6. ??@RishabhPant17 & debutant @akshar2026 will resume the play on Day 2.
Scorecard ? https://t.co/Hr7Zk2kjNC pic.twitter.com/scONdNQl2W
— BCCI (@BCCI) February 13, 2021
কেন চাপটা থাকবে? যে পিচে বল প্রথম দিন সকাল থেকেই বনবন করে ঘুরছে, সেখানে বিদেশি টিমগুলোর পক্ষে দারুণ কিছু করে দেখানো শুধু কঠিন নয়, অসম্ভবও। চিপকের এই পিচে জো রুট কী করে, তার অপেক্ষায় থাকব। চিপকের ঘূর্ণি পিচ ছাড়াও দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন আরও দুটো ব্যাপার নিয়ে দিনভর আলোচনা হল। এক, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম সেঞ্চুরি করা রোহিত শর্মা। দুই, টেস্টে এই প্রথম শূন্য করা বিরাট কোহলি।
আরও পড়ুন: রোহিতের সেঞ্চুরিতে চাপ কাটাচ্ছে ভারত
রোহিতকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। অস্ট্রেলিয়া সফরের সময়ই বলেছিলাম, রোহিতকেই ওপেন করানো হোক। ওর মধ্যে এমনিতেই একটা আগ্রাসী ব্যাপার আছে। ক্রিজে যতক্ষণ থাকে বিপক্ষের বোলারদের মাথায় উঠতে দেয় না। চিপকে সেটাই দেখলাম। যেটা সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হয়েছে, প্রথম টেস্টে জো রুট সুইপ শট দিয়ে ভারতীয় বোলারদের তছনছ করেছিল। দ্বিতীয় টেস্টে রোহিত সেটাই শুরু করেছিল। স্পিনের বিরুদ্ধে সুইপ যেমন একটা স্ট্র্যাটেজিক শট, তেমন ঝুঁকিরও। বলের লাইন মিস করলেই কিন্তু আউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোহিত টাইমিংয়ের উপর খেলে। যে কারণে ওর শটগুলো এত আকর্ষণীয় হয়, নিখুঁত হয়। রোহিত যেই মইন আলি, জ্যাক লিচদের সুইপ মারতে শুরু করল, ইংল্যান্ড বোলাররা কার্যকারিতা হারাল। ২৩১ বলে রোহিতের ১৬১ রানের ইনিংসটা দর্শনীয় যেমন, শিক্ষনীয়ও তেমন। ঘূর্ণি পিচে কীভাবে স্পিন সামলাতে হয়, সেটা যেন দেখাল রোহিত। ও যদি আর একটু থাকত ক্রিজে, দিনের শেষে ভারত আরও ভালো জায়গায় থাকত।
আরও পড়ুন: India vs England 2nd Test, Day 1 LIVE Score: দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষ
মইনের বলে বিরাটের আউটটা নিয়ে দেখলাম ট্রেন্ডিং চলছে। লোকে কখনও সখনও ভুলে যায় যে, বিরাটও মানুষ। ভুল ওরও হয়। এমন নয় যে, বিরাট রোজ রান করবে। ব্যাটসম্যান বিরাট অফফর্মের মধ্যে আছে, তা কিন্তু নয়। আগের ইনিংসেই ৭২ করেছে। ফর্মে না থাকলে চিপকের পঞ্চম দিন ওই রকম একটা ইনিংস খেলা যায় না। আজ ও সেট হওয়ার আগেই আউট হয়েছে। এটা ভুললে চলবে না, মইনের বলটা কিন্তু দারুণ ছিল। ক্লাসিক অফস্পিন ডেলিভারি যাকে বলে। বলটা ডিপ করেছে, মাটিতে পড়ে আবার টার্ন করেছে। বিরাট ড্রাইভ করতে যাওয়ায় ব্যাট-প্যাডের মাঝখান দিয়ে ঢুকে গিয়েছে।
অনেকেই জানতে চাইছে, এই টেস্টে কী হবে? ক্রিকেটে ভবিষ্যদ্বাণী চলে না। কিন্তু গতিপ্রকৃতি যা দেখছি, তাতে এটুকু বলাই যায় যে, প্রথম দিনের শেষে ভারতের এই ৩০০ রান কিন্তু ৫০০-র কাছাকাছি। ইংল্যান্ডকে ভারতীয় বোলারদের সামলাতে হবে। এই টেস্টে রুটদের কিন্তু অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদবদের সামলাতে হবে। অক্ষরের বোলিংয়ের যা ধরন, তাতে চিপকে ওর হিরো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বাকি কাজটা অশ্বিন আর কুলদীপ শেষ করুক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ৩০০-৬ (রোহিত ১৬১, রাহানে ৬৭, পন্থ ব্যাটিং ৩৩, লিচ ২-৭৮, স্টোন ১-৪২, রুট ১-১৫)।