শারজা: মরুশহরে আসার আগে অতি বড় নাইট সমর্থকরাও ভাবেননি এমনটা হতে পারে। ভোল পাল্টে পুরো অন্য কেকেআরকে দেখা গেল আমিরশাহিতে (UAE)। সাত নম্বর থেকে লিগ শেষে উঠে এল চার নম্বরে। এখানেই শেষ নয়, টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট আরসিবিকে ছিটকে দিল টুর্নামেন্ট থেকে। আজ রাতে সামনে দিল্লি। কার্যত সেমিফাইনাল মর্গ্যানদের (Eoin Morgan) সামনে।
জয়ের ছন্দে থাকা কেকেআর শিবিরে এখন একটাই হাতিয়ার। আত্মবিশ্বাস। সেটাকে কাজে লাগিয়েই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন নারিনরা। দিল্লির দৌড় থামিয়ে দিলেই লাস্ট ল্যাপ। মহাষ্টমীর সন্ধ্যায় যখন রাজপথে নামবে বাঙালি, তখনই শারজার ২২ গজে কলকাতার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ঝাঁপাবেন ভেঙ্কটেশ, রাহুলরা। চেন্নাইয়ের কাছে হেরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে দিল্লি। কিন্তু নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটাররা একরাশ আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করেই মাঠে নামবেন। চলতি আইপিএলে ঋষভ পন্থ, শ্রেয়স আইয়াররা যতই ছন্দে থাকুন, নাইটরা মোটেই পিছিয়ে নেই। নারিন দেখিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনে এখনও তিনি জ্বলে ওঠেন। শারজার উইকেটে স্পিনাররা বাড়তি সাহায্য পাচ্ছেন। এটাই কেকেআরের প্লাস পয়েন্ট। এলিমিনেটরের ম্যাচ খেলায় চেনা ২২ গজেই নামবেন মর্গ্যানরা। তবে একই সঙ্গে সতর্ক নাইট শিবির থাকছে ব্যাটিং বিভাগ নিয়ে। দিল্লির বোলিং বিভাগ যথেষ্ট শক্তিশালী। নর্টজে, আবেশ খান, রাবাদা, অক্ষর প্যাটেলরা যে কোনও সময় ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। শুরুটা ভালো করলে, পরের কাজটাও সহজ হয়ে যাবে ব্যাটারদের কাছে। তাই ভেঙ্কটেশ আইয়ার-শুভমন গিল জুটি পাওয়ার প্লে-তেই বড় রান তুলতে তৈরি। আরসিবির বিরুদ্ধে রান পাননি রাহুল ত্রিপাঠী, নীতীশ রানারা। দিল্লির বিরুদ্ধে রানে ফিরতে প্রস্তুত দুই ব্যাটারই।
দিল্লি ক্যাপিটালসকে লিগের শেষ ম্যাচে হারিয়েছিল কেকেআর। বড় ম্যাচে সবসময়ই ফ্যাক্টর হয়ে ওঠেন সুনীল নারিন। আজ দিল্লিকে উড়িয়ে মহাষ্টমীর রাতকে আরও রঙিন করে দিতে তৈরি কার্তিক-মাভিরা।
গত কয়েক বছর ধরে নাইট শিবিরে শুধুই হতাশা। এবং বিতর্ক বাড়িয়েছে ক্যাপ্টেন্সি বদল। দীনেশ কার্তিক কখনও, কখনও ইয়ন মর্গ্যান। দায়িত্ব যেই নিন না কেন, সাফল্য কেউই দিতে পারেননি। এই মরসুম কেকেআরের কাছে ‘শেষ সুযোগ’ হতে চলেছে। যদি মর্গ্যান ট্রফি দিতে পারেন কেকেআরকে তাহলে আগামী মরসুমের মেগা নিলামের জন্য টিম ম্যানেজমেন্ট অন্য রকম ভাবে দল সাজানোর পরিকল্পনা করবে। রিটেনশন পলিসি তখন বদলানোর কথা ভাববেন শাহরুখ খানরা। কিন্তু তিরে গিয়ে যদি তরী ডোবে, তাহলে কেকেআরের পুরো খোলনলচেই পাল্টে যেতে পারে।
ইয়ন মর্গ্যান এই মরসুমে একেবারেই রানের মধ্যে নেই। কিন্তু তিনি নেতা এবং ব্যাটসম্যান দুটো ভিন্ন ধারার জোয়ার কেকেআরে তুলেছেন। নিজে রান না পান, বুদ্ধিদীপ্ত ক্যাপ্টেন্সি টিমকে সাফল্য দিচ্ছে। তবে হাত আর একটা ম্যাচ। ফাইনালে যদি উঠতে হয়, তাহলে ঋষভ পন্থের দিল্লিকে টেকনিক্যালি ও ট্যাকটিক্যালি হারাতে হবে। যে কাজ বেশ কঠিন। রিকি পন্টিং কিন্তু নারিন-বরুণ টোটকা খুঁজে বের করা শুরু করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ISL 2021: পুজোর মধ্যেই গোয়ায় চুটিয়ে অনুশীলন লাল-হলুদের