আমেদাবাদ: বর্তমান ক্রিকেটে DRS অতি পরিচিত শব্দ। যার পুরো নাম ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম। মাঠের আম্পায়ারের কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দেহ থাকলে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করতেই পারেন অধিনায়ক। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটার। ফিল্ডিং টিমের ক্ষেত্রে ডিআরএসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন উইকেট কিপার। অনেক সময়ই বোলাররা অতি উত্তেজনার বশে অধিনায়ককে ডিআরএস নিতে রাজি করান। অনেক সময়ই তা চূড়ান্ত ভুল সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে লেগ বিফোরের ক্ষেত্রে। আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকে কিপারের। তেইশের বিশ্বকাপ কি ডিআরএস-এর পুরো নাম বদলে দিয়েছে? কেন এই প্রশ্ন! বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরাই শুধু নন, সারা বিশ্বেও ডিআরএসকে ধোনি রিভিউ সিস্টেম হিসেবে বলে থাকেন! তার কারণ, ডিআরএস নেওয়ার ক্ষেত্রে মহেন্দ্র সিং ধোনির দক্ষতা। অনেক ক্ষেত্রেই আম্পায়ার আউট না দিলে দ্রুত ডিআরএস নিতেন এমএস ধোনি। দেখা যেত, ধোনি সঠিক চ্যালেঞ্জ করেছেন। তাঁর বিদ্যুৎগতির স্টাম্পিং তৃতীয় আম্পায়ারের কাজও কঠিন করেছে। অনেক সময় বোলার চাপ দিলেও ডিআরএস নেননি ধোনি। রিপ্লেতে দেখা যেত রিভিউ না নিয়ে ভালোই হয়েছে!
ডিআরএসের ক্ষেত্রে ধোনির সাফল্যের জন্যই ধোনি রিভিউ সিস্টেম-এর আগমন। তেইশের বিশ্বকাপে সেটি যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে ডিসিশন ‘রাহুল’ সিস্টেম। বিশ্বকাপে ভারতকে ভরসা দিয়েছেন কিপার রাহুল। তাঁর ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্নের জায়গা নেই। মুগ্ধ করেছে তাঁর কিপিং। আরও বেশি মুগ্ধ করেছে রিভিউ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা। রোহিত শর্মার ভরসা হয়ে উঠেছেন। বোলাররা আব্দার করলেও ডিআরএসের ক্ষেত্রে রোহিত শর্মা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন রাহুলের সম্মতি মেলার পরই।
তেইশের বিশ্বকাপে অন্তত পাঁচটি ক্ষেত্রে এমন হয়েছে, যখন ডিআরএস নেওয়ার জন্য সকলে প্রস্তুত থাকলেও রাহুলের গ্রিন সিগন্যাল না থাকায় নেওয়া হয়নি। আর সব ক্ষেত্রেই সঠিক প্রমাণিত হয়েছেন লোকেশ রাহুল। শুধু এ ভাবেই নয়। তার আরও অবদান ভুললে চলবে না। গ্রুপ লিগে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন মহম্মদ সামি। তার মধ্যে একটা উইকেট বরং বলা যায় লোকেশ রাহুলের!
শ্রীলঙ্কা ইনিংসের দ্বাদশ ওভার। সামির শর্ট পিচ ডেলিভারিতে পুল শট খেলার চেষ্টা করেন দুষ্মন্ত চামিরা। লেগ সাইডে বল ধরেই আবেদন করেন লোকেশ রাহুল। কেউই কোনও শব্দ শোনেননি! রাহুলের কট বিহাইন্ডের আবেদনে অবাক হয়েছিলেন সতীর্থরাও। রাহুল নিশ্চিত ছিলেন। অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে রাজি করান রিভিউ নেওয়ার জন্য। রিপ্লেতে দেখা যায়, চামিরার গ্লাভসে এতটাই সুক্ষ্ণ ছোঁয়া লেগেছে, স্নিকোমিটার ছাড়া বোঝার সাধ্যি ছিল না। ডিআরএসের ক্ষেত্রে ক্রমশ যেন পারফেক্ট হয়ে উঠছেন রাহুল। তাহলে কি ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম কিংবা ধোনি রিভিউ সিস্টেমের পরিবর্তে ডিসিশন ‘রাহুল’ সিস্টেম বলা যায়?