নয়াদিল্লি : সালটা ২০০৬। বিরাট কোহলি (Virat Kohli) তখন রঞ্জি ট্রফিতে খেলতেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বাবাকে হারান বিরাট। কোহলির কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল তাঁর বাবার চলে যাওয়া। ১৭ বছর আগে এক রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে খেলার সময় বিরাটের বাবা প্রেম কোহলি মারা যান। অপূরণীয় ক্ষতির পরও, পরের দিনই কোহলি পৌঁছে যান মাঠে। দিল্লির হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলার জন্য। বাবা মারা যাওয়ার পরের দিন কর্নাটকের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে কোহলি করেছিলেন ৮০ রান। ভারতের তারকা ক্রিকেটার ইশান্ত শর্মা (Ishant Sharma) সেই দিনটির স্মৃতিচারণা করেছেন। বিরাট কোহলির সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের কথা কারও অজানা নয়। সদ্য ইশান্ত জানিয়েছেন যখন বিরাটের বাবা মারা গিয়েছিল, তারপরও তিনি রঞ্জি ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন সেই সময় তাঁর মনের অবস্থা কেমন ছিল। বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
বিরাট কোহলি ও ইশান্ত শর্মা একসঙ্গে রঞ্জি ট্রফিতে খেলতেন। তখন থেকেই তাঁদের বন্ধুত্ব। খুব কাছ থেকে ইশান্ত দেখেছেন বিরাটকে। কোহলির ভালো ও খারাপ সময় — সবই দেখেছেন ইশান্ত। সম্প্রতি BeerBiceps ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইশান্ত তুলে ধরেছেন বিরাটের সবচেয়ে কঠিন একটা দিনের কথা। যে দিন বিরাট তাঁর বাবাকে হারিয়েছিলেন। সে দিন সকালে বিরাট-ইশান্ত কর্নাটকের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে খেলেছিলেন। শুধু তাই নয়, বাবা মারা যাওয়ার পরের দিনও বাড়িতে থাকেননি বিরাট। তিনি চলে যান মাঠে।
সেই দিনের কথা বলতে গিয়ে ইশান্ত জানান, তিনি তাঁর আগে কখনও বিরাটকে কাঁদতে দেখেননি। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর কোহলিকে অঝোর ধারায় কাঁদতে দেখেছিলেন তিনি। ইশান্ত জানান, রঞ্জি ট্রফিতে তখন খেলার সময় প্যাটেল নগর থেকে ফিরোজশাহ কোটলায় তিনি ও বিরাট একসঙ্গে যেতেন। যে দিন কোহলির বাবা মারা যান, সে দিন তিনি ভীষণ চুপচাপ ছিলেন। তা দেখে ইশান্ত প্রশ্ন করেন, তিনি এত কেন গম্ভীর রয়েছেন? বিরাট কোনও উত্তর দেননি। সেই সময় তাঁদের সঙ্গে মাঠে যাচ্ছিলেন ভিডিয়ো অ্যানালিস্ট। তিনিই ইশান্তকে জানান বিরাটের বাবা তার আগের দিন রাতেই মারা গিয়েছেন। যা শুনে ইশান্ত একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, বাবার মৃত্যুর পরদিনই কেউ ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছে তা তিনি ভাবতেও পারেননি। ইশান্ত জানান, তিনি নিজেকে সেই জায়গায় দেখার কল্পনাও করতে পারেন না। তাঁর কথায়, ‘বিরাটের জায়গায় সে দিন আমি থাকতে হয়তো কোনও ভাবেই মাঠে যেতে পারতাম না।’
বিরাটের বাবা স্বপ্ন দেখতেন তাঁর ছেলে দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলবে। ভারতের জার্সি গায়ে চাপিয়ে তিনি বিরাটের খেলা দেখে যেতে পারেননি। বাবা মারা যাওয়ার ২ বছর পর, ২০০৮ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় বিরাটের। ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে বিশ্ব ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত করেন। কোহলি শুধু জাতীয় দলে ব্যাটার হিসেবে পারফর্ম করেছেন তেমনটা নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটে তিনি নেতৃত্বও দিয়েছেন। সেই ২০০৮ সাল থেকে এখনও অবধি একের পর এক দুরন্ত ইনিংস উপহার দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রিকেটার হয়ে উঠেছেন বিরাট।