চেন্নাই: এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটে ক্রমশ ডালপালা মেলছে দুটো আলোচনা। এক, রোহিত শর্মা কি সাদা ক্রিকেটে আর নেতৃত্ব দেবেন না? বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর থেকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি ভারতীয় টিমের নেতাকে। আগামী বছর জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। নেতা হিসেবে কি তরুণ কাউকে খুঁজে নেবে বিসিসিআই? নাকি, রোহিতকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেতা রেখে দেওয়া হবে। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের চুক্তি বাড়ানোর পর সেই সম্ভাবনার পাল্লা ক্রমশ ভারী হচ্ছে। আর দুই? এইচপি, এমআই, জেবি— এ সব শুনেছেন? তা হলে বুঝতে অসুবিধা হবে না লড়াইয়ের মঞ্চে কারা মুখোমুখি। আর যুদ্ধ ঘিরেই দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে ক্রিকেট দুনিয়া। কেউ এইচপি-র পাশে, কেউ জেবি-র সঙ্গে। যত সময় গড়াচ্ছে, ততই ঘোলাটে হচ্ছে আরবসাগরের জল। তারই মধ্যে এক নামী প্রাক্তন ক্রিকেটার আবার জেবির পাশে দাঁড়িয়ে পড়লেন। যা অস্বস্তি আরও বাড়াচ্ছে। বিস্তারিত রইল TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
কে এই এইচপি? হার্দিক পান্ডিয়া। যাঁকে গুজরাট থেকে আইপিএল সবচেয়ে বড় ট্রেডে তুলে নিয়েছে এমআই অর্থাৎ মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ২০১৫ সালে যে নীল জার্সিতে শুরু করেছিলেন সফর, সেখানেই ফিরেছেন আবার। রোহিত শর্মার পরবর্তী ক্যাপ্টেন হিসেবে দেখা হচ্ছে তাঁকে। গুজরাট টাইটান্সকে গত দুটো আইপিএলে একবার চ্যাম্পিয়ন, একবার রানার্স করেছেন। হার্দিককে যে কারণে বিকল্প মুখ হিসেবে ধরা হচ্ছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। এমআই-এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আর এইচপি-র স্বপ্নের বৃত্তে তৃতীয় পক্ষও হাজির। তিনি জেবি। যাঁর পুরো নাম জসপ্রীত বুমরা। হার্দিক আবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে ফেরায় যিনি এই মুহূর্তে কোণঠাসা। রোহিতের পর নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছিল বুমরাকেই। প্রজেক্টও করা হচ্ছিল তাঁকে। হার্দিকের মতোই আইপিএলে মুম্বইয়ের হয়েই উত্থান বুমরার। তফাত শুধু, হার্দিক ক্লাব ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু বুমরা যাননি। সেই তাঁকেই বঞ্চিত করে হঠাৎই হাওয়া ঘুরে গিয়েছে হার্দিকের দিকে। তাঁকে নেতা করার গল্প শুনে গোঁসা হয়েছে বুমরার। যা সঙ্গত বলেই মনে করছেন অনেকে।
যেমন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। ভারতের প্রাক্তন ওপেনার কিন্তু যুক্তি দিয়ে বোঝাচ্ছেন, হার্দিক ফেরায় কেন বুমরার রাগ হয়েছে? কেন তিনি মেনে নিতে পারছেন না ফ্র্যাঞ্চাইজির সিদ্ধান্ত? কেন ইগোতে লেগেছে তাঁর? শ্রীকান্তের স্পষ্ট কথা, ‘সাদা হোক আর লাল বল, বুমরাই বিশ্বের সেরা বোলার। ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর জন্য কিন্তু সর্বস্ব উজাড় করে দিয়েছিল ও। ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পঞ্চম টেস্টে ওই নেতৃত্ব দিয়েছিল। সেই ছেলেটার এখন কেমন লাগতে পারে? রাগ, ইগো বলা যেতেই পারে। ওর ভীষণ খারাপ লেগেছে, এটা বলা যেতেই পারে। ওর মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক, আমি যে টিমের হয়ে দীর্ঘদিন সর্বস্ব দিলাম, তারাই আমাকে বঞ্চিত করল। যে ছেলেটা টিম ছেড়ে চলে গিয়েছিল, তাকেই আবার ফিরিয়ে নেওয়া হল। পুরো ব্যাপারটা যে ওর সঙ্গে ঠিক করা হয়নি, সেটা মনে হতেই পারে বুমরার।’
দিন কয়েক আগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে আনফলো করে দিয়েছিলেন বুমরা। ‘নীরবতার খোলসে থাকি’ বলে বার্তাও দিয়েছিলেন। বোঝাই যাচ্ছে, হার্দিকের ফেরা হজম করতে পারছেন না বুমরা। বুমরা কি এমআই ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন? কোথাকার জল কোথায় গড়ায়, দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে ক্রিকেট দুনিয়া।