পারথ: মার্নাস লাবুশেন ঝড় পারথের মাঠে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হোম সিরিজের প্রথম টেস্টে চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া। আর তা এল লাবুশেনের জন্যই। ইতিহাস তৈরি করলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ২০৪ করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৪ রানে নট আউট থেকে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন মার্নাস লাবুশেন। ব্যাট হাতে জাদু দেখিয়ে বললেন, “এই মুহূর্তগুলো দামি। টেস্ট ক্রিকেটে এমন কিছু এর আগে কখনও করতে পারিনি। নিজের জন্য গর্ব হচ্ছে।”
ক্রিকেট ইতিহাসে লাবুশেন অষ্টম ক্রিকেটার, যিনি একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ডবল সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন। তাঁর আগে এই মাইলস্টোন ছুঁয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডগ ওয়াল্টার্স ও গ্রেগ চ্যাপেল। লাবুশেন নাম লেখালেন এলিট লিস্টে। ওয়াল্টার্স ও চ্যাপেলে ছাড়া এই গোল্ডেন লিস্টে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিসের ব্রায়ান লারা ও লরেন্স রোয়ির নাম। আছেন প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার সুনীল গাভাসকর, ইংল্যান্ডের গ্রাহাম গুচ ও শ্রীলঙ্কার উইকেট কিপার-ব্যাটসম্যান কুমারা সঙ্গকারা।
লাবুশেনের জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লার্কসড্রপ নামে একটি ছোট্ট শহরে। ২০০৪ সালে বাবার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া পৌঁছন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ইন্সটিটিউট অব স্পোর্টস থেকে ক্রিকেট শেখা শুরু। পরে সুযোগ পান কুইসল্যান্ড টিমের বয়সভিত্তিক দলে। ২০১৪-১৫ সালে অ্যাডিলেড ওভালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। ২৮ বছরের এই অজি তারকার অস্ট্রেলিয়ার ওয়ান ডে টিমে অভিষেক হয় ২০২০ সালে। ম্যাচ ছিল মুম্বইয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে, বিরাট কোহলির টিমের বিরুদ্ধে। ২৭ ম্যাচে মোট ৮০৪ রান করেছেন তিনি। ওয়াংখেড়ের ম্যাচে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তোলেন তিনি। নাথান লিয়ঁর বলে আউট হয়েছিলেন ভারতের বরুণ অ্যারন। লাবুশেন দুরন্ত ক্লোজ-ইন ক্যাচ নিয়েছিলেন বরুণের। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে আলোচনা চলেছিল লাবুশেনের ক্যাচটা নিয়ে।
টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম থেকে সফল লাবুশেন। ২০১৮ তে পাকিস্তান সফরে দিয়ে শুরু। ২৯ ম্যাচে মোট তাঁর রান ২৮৪৭। দলের টপ অর্ডারে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার তিনি। পারথে প্রথম ইনিংসে মাঠে নেমে ২০৪ রানের এক অনবদ্য ইনিংস উপহার দেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে তখন দলের রান ১৮২ রান। ২ উইকেট পড়ে গিয়েছে। প্রথম ইনিংসের মতোই মাঠে নেমে তাক লাগালেন আবার। করলেন নট আউট ১০৪ রান। এ যেন ঠান্ডা মাথা ও অভিজ্ঞতার এক চমৎকার মিশ্রণ। তাঁর ব্যাটিংয়ের সুবাদেই ৪৯৮ রানের টার্গেট দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
শনিবার আলজারি জোসেফের বাউন্সারে ব্যাট ছুঁয়ে হেলমেটে লেগে ক্যাচ ওঠে। কিন্তু আম্পায়ারের নো-বল ডাকায় অপরাজিত থাকেন তিনি। পরে লাবুশেন বললেন, “অবশ্যই আমি ভাগ্যের জোরে বাউন্সারটা থেকে বেঁচেছি। জোসেফের বলে গতি ছিল, বলটা ছিটকে গেছে।”