কলকাতা: সেই মাহি-মুহূর্তের ছবি আনাচেকানাচে ঘুরছে গ্যালারির। হলুদ জার্সিতে আট থেকে আশি, তরুণ থেকে তরুণী। যেন স্রেফ একজনের জন্যই উপচে পড়ছে গ্যালারি। হোক না লখনউ, হোক না লোকেশ রাহুলের ডেরা, আইপিএল আর কবে অন্য কাউকে খুঁজেছে। তিনি যখন হাজির, সব আলো তাঁর। তিনি যেন হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা। বিকেল থাকতেই তাই একানা স্টেডিয়াম উঠল ভরে। সেই চেনা মুখ মাঠে নামতেই গ্যালারিতে শুরু উৎসব। এই উৎসব কি এ বারই শেষ? ৪৩এর নায়ক আর কত দিনই বা খেলবেন! আর্তি যেন আকাশ ছুঁয়ে ফেলছে ক্রমশ। ‘অভি না যাও ছোড় কর’ প্ল্যাকার্ডে ভরে একানা।
ক্রিকেটার যদি শিল্পী হন, মেয়াদ এমনিতেই বেড়ে যায়। সচিন তেন্ডুলকরের ক্ষেত্রে হয়েছে। মহেন্দ্র সিং ধোনির ক্ষেত্রেও এই নিয়মের ব্যতিক্রম নেই। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁঝ বাড়ছে। অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিনোদনের মিশেল অবিশ্বাস্য। রোজ নামছেন মাঠে। ঋতুরাজ গায়কোয়াড়কে ক্যাপ্টেন করে তুলতে। আর নিজে শুধু উইকেটকিপারের দায়িত্ব পালন করে থেমে যাচ্ছেন না। ব্যাট হাতেও ঝলসে উঠছেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে শেষ চার বল খেলতে নেমে হার্দিক পান্ডিয়াকে মেরেছিলেন তিনটে ছয়। ওই ইনিংসটাই ফারাক গড়ে দিয়েছিল। ভারতীয় টিমের ক্যাপ্টেন পর্যন্ত স্বীকার করে নিয়েছিলেন, ধোনি ওই ইনিংসটা না খেললে ম্যাচটা হারতে হত না।
এ বারের আইপিএলেও ধোনি যেন পর্যটন কেন্দ্র খুলে বসেছেন। যেখানে যাচ্ছেন, ম্যাচের পারদ আকাশ ছুঁয়ে ফেলছে। একানা স্টেডিয়ামও তার ব্যতিক্রম নন। ধোনি আসছেন, ধোনি নামবেন, ধোনি খেলবেন— আর কী চাই! আইপিএলের ৩৪তম ম্যাচ। এক তরুণী দেখালেন, এই ম্যাচও ধোনি। তাঁর জার্সি নম্বর ৭। ৩+৪= ৭ই তো হয়! শুধু একটা ম্যাচ দিয়ে ধোনিকে বিচার করা যাবে কি? না, কখনওই নয়। বোর্ডের মতো ভিন্টেজ ধোনিও জানেন, তিনি মাঠে আছেন মানে আইপিএলের টিআরপি হাই।
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, এ বারই কি ধোনি-শো শেষ? মাহির ঘনিষ্ঠমহল বলছে, এই আইপিএলের পরই হয়তো অবসর নিয়ে ফেলবেন। কিন্তু দেশের জনতা কী বলছে? দেশ জুড়ে নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করে দিয়েছে। তার মধ্যেও ধোনির কাছে ঠিক যাচ্ছেন ভক্তরা। প্রিয় নায়ক অবসরে যান, তাঁরা চাইবেন কেন?