শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর- ২০৪/৪ (২০ ওভার)
কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৬৬/৮ (২০ ওভার)
কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) সেই এক রোগ। শুরুটা ভালো করেও খেলা থেকে হারিয়ে যাওয়া। বরুণ চক্রবর্তী শুরুতেই কোহলি আর পাতিদারকে ফিরিয়ে দিল। ভাবলাম নাইটরা হয়তো ধাক্কা দেবে কোহলিদের। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল আর এবি ডে’ভিলিয়ার্সের বিধ্বংসী ব্যাটিং সমস্ত সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিল। গত আইপিএলে ফ্লপ হওয়ার পরও ১৪.২৫ কোটি টাকায় ম্যাক্সওয়েলকে নিয়েছে বেঙ্গালোর। তার সার্থকতা এখন বুঝছে আরসিবি কর্তারা। দুরন্ত ফর্মে রয়েছে ম্যাক্সওয়েল। ৪৯ বলে ৭৮ রানের ইনিংস বেঙ্গালোরের ভিত মজবুত করল। আর এবি ডে’ভিলিয়ার্সের কাছে বয়স শুধুই একটা সংখ্যা। এখনও আগের মতোই ফিট। মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রির সৌজন্যে দুশোর উপর রান তুলল আরসিবি। ওই আসল ফারাকটা গড়ে দিল। ৩৪ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে কেকেআরের কোনও বোলারকেই রেহাই দিল না ডে’ভিলিয়ার্স। বেঙ্গালোর টিমটাকে এবারে অনেক জমাট দেখাচ্ছে। কোহলি কখনও আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়নি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T-20 World Cup) আগে সেই খিদেটাই মেটাতে চাইছে বিরাট।
That’s that from Match No.10.@RCBTweets win by 38 runs to register their third win of the season so far. This is the first time in IPL that the #RCB have won their first 3 games.#VIVOIPL pic.twitter.com/Ei90mgn2iD
— IndianPremierLeague (@IPL) April 18, 2021
কেকেআরের ২জন প্রধান স্পিনার হরভজন সিং আর বরুণ চক্রবর্তী। দুজনে মিলে ৭৭ রান দিয়েছে। বিপক্ষের স্কোর তো ২০০ উঠবেই। চিপকের উইকেটে এই স্কোরটা অনেক। কেকেআরের উচিত ছিল কম ব্যবধানে হারা। পরবর্তীকালে এই বড় ব্যবধানের হারগুলোই ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। প্লে অফে ওঠার ক্ষেত্রে নেট রানরেট গুরুত্বপূর্ণ হয়। এখন থেকে সচেতন না হলে তখন কিন্তু আঙ্গুল কামড়াতে হবে। এই দিকগুলো নিয়ে ভাবা উচিত নাইট টিম ম্যানেজমেন্টের।
মর্গ্যানের ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে আমি একটা কথা বলতে চাই। বরুণ চক্রবর্তীর আরও দুটো ওভার রেখে দেওয়া উচিত ছিল। যাতে ডে’ভিলিয়ার্স এলে আরও দুটো ওভার বোলিং করতে পারে। কিন্তু ডে’ভিলিয়ার্স যখন ক্রিজে এল, তখন বরুণ চক্রবর্তীর একটা ওভার বাকি ছিল। স্কোরটা ১৬০ থেকে ১৮০ রানের মধ্যে হলে লড়ার জায়গায় থাকত কেকেআর। ২০০ পেরিয়ে যাওয়ায় নাইটদের কাজটা কঠিন হয়ে যায়। মর্গ্যানদের দেখে মনে হচ্ছে এখনও পুরো টিমটা ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি। পাহাড়প্রমাণ রান তাড়া করতে হলে নিজেদের ছাপিয়ে যেতে হবে। অগোছালো লাগছে নাইটদের। ব্যাটিংয়েও ভারসাম্য আসেনি। কোনও ব্যাটসম্যানই ফর্মে নেই। শুভমন গিল এখনও ছন্দে ফেরেনি। শুরুতে আক্রমণ চালিয়েও আউট হয়ে গেল। রানা, ত্রিপাঠীরাও বড় রানের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল। ইয়ন মর্গ্যানকে ব্যাটিংয়ে আরও দায়িত্ব নিতে হবে। তবে আমি বলব, দীনেশ কার্তিককে আগে নামানো উচিত। একটু সময় পেলে ইনিংসটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। সেক্ষেত্রে তিন বা চারেই কার্তিককে নামানো উচিত পরের ম্যাচ থেকে।
We’ll just leave this here. ?
3️⃣ wins from 3️⃣! ??#PlayBold #WeAreChallengers #IPL2021 #DareToDream #RCBvKKR pic.twitter.com/LcvP9jXvJZ
— Royal Challengers Bangalore (@RCBTweets) April 18, 2021
রাসেল শেষের দিকে একটা লড়াই চালাল ঠিকই। তবে তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। পাশেও কাউকে পেল না। সাকিব আল হাসান অ্যাটাকিং খেললে রাসেলের কাজটা সুবিধে হতো। আরসিবির স্পিনাররা চিপকের উইকেট থেকে ফায়দা তুলল। চলতি আইপিএলে প্রথমবার ছন্দে দেখলাম যুজবেন্দ্র চাহালকে। রানা আর কার্তিককে ফিরিয়ে কেকেআরকে ঝটকা দিল। নাইটদের এখনও অনেক জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন। ব্যাটিং, বোলিং সব বিভাগেই আরও চৌখস হতে হবে মর্গ্যান-কামিন্সদের। আইপিএল না জেতার জ্বালা রয়েছে আরসিবির। সেই জ্বালাটা বারবার তাড়া করে কোহলিকেও। এবি ডে’ভিলিয়ার্সও দীর্ঘদিন খেলছে আরসিবির জার্সিতে। আইপিএলে জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেলল। ওদের দেখে এবার বোঝা যাচ্ছে ট্রফি জেতার ব্যাপারে কতটা প্রত্যয়ী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর- ২০৪/৪ (ম্যাক্সওয়েল ৭৮, ডে’ভিলিয়ার্স ৭৬, বরুণ চক্রবর্তী ২/৩৯), কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৬৬/৮ (রাসেল ৩১, মর্গ্যান ২৯, জেমিসন ৩/৪১, হর্ষল ২/১৭)। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোর জয়ী ৩৮ রানে। ম্যাচের সেরা- এবি ডে’ভিলিয়ার্স।