কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়
মেলবোর্নে চলছে ভারত-পাকিস্তান (India vs Pakistan) ম্যাচ। রবিবারের দুপুর থেকে চরম উত্তেজক ম্য়াচে আটকে ক্রিকেট দুনিয়া। রোহিত শর্মা বনাম বাবর আজমদের ম্যাচের উত্তেজনা যেন কিছুটা হলেও আছড়ে পড়েছিল সিএবিতে (CAB)। বিসিসিআই থেকে অপসারিত হয়েছেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) কি আবার ফিরবেন সিএবির প্রশাসনে? প্রেসিডেন্ট পদেই দেখা যাবে তাঁকে? কয়েক দিন যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে ময়দান, তার উত্তর মিলল রবিবার বিকেল পাঁচটার পর। সৌরভ প্রেসিডেন্ট হলেন না বাংলা ক্রিকেট সংস্থার। বিরোধীহীন ভাবেই আবার সিএবির ক্ষমতায় থাকল শাসক গোষ্ঠী।
দিনভর নাটক চলেছে সিএবিতে। দুপুর একটাতেই সিএবিতে ঢুকে যান সৌরভ। তখন থেকেই মনে হচ্ছিল, সৌরভ কি তবে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন দেবেন? কর্তাদের ভিড়, তীব্র চাপানউতোড়, ময়দানি রাজনীতির স্রোত— অনেক কিছুই চলল সারা দিন। কিন্তু বিকেল পাঁচটার পর সৌরভেরই জয় হল কার্যত। তিনি নিজে প্রেসিডেন্ট না হলেও তাঁর দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় হলেন সিএবির নতুন কমিটির প্রেসিডেন্ট। ভাইস প্রেসিডেন্ট হলেন অমলেন্দু বিশ্বাস। অমলেন্দু আবার এসএফআই নেতা ময়ূখ বিশ্বাসের বাবা। অমলেন্দুকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করা নিয়ে অনেকে বিরোধিতা করেছিলেন। সে সব টপকে তিনিই ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। সচিব নরেশ ওঝা, কোষাধ্যক্ষ প্রবীর চক্রবর্তী এবং গত বারের মতোই এ বারও যুগ্মসচিব দেবব্রত দাস।
সৌরভ আগাম বলে দিয়েছিলেন, আমি নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছি। তাও কেন বিরোধীশূন্য সিএবিতে প্রেসিডেন্ট পদে এলেন না তিনি? সৌরভকে যাঁরা চেনেন, তাঁদের বক্তব্য হল, মহারাজের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল বিরোধী শূন্য করা। তা-ই করতে পেরেছেন তিনি। বিরোধীরা প্যানেল জমা দেয়নি, তাই নির্বাচনে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সৌরভ। কিন্তু এর পিছনে অন্য যুক্তিও কাজ করছে। সৌরভ যদি রাজ্য ক্রিকেট সংস্থায় প্রেসিডেন্ট হতেন, তা হলে আগের ছ’বছর ও এ বারের তিন বছর মিলিয়ে মোট ন’বছর সিএবির প্রশাসনিক পদে থাকতেন। যার ফলে সিএবির প্রশাসনে আর আসতে পারতেন না। ক্রিকেট প্রশাসক সৌরভের ক্ষেত্রে যা মোটেও উজ্জ্বল সিদ্ধান্ত হত না। বোর্ডে আবার ফিরতে হলে, কিংবা অন্য কোনও অঙ্ক মেলাতে এই ‘লাইফলাইন’ এখনই শেষ করে দিতে চাননি সৌরভ। প্রেসিডেন্ট না হলেও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে সিএবির প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন সৌরভ, এমনও শোনা যাচ্ছে।
সব মিলিয়ে যা দাঁড়াল, মনোনয়ন জমা না দিয়েও সিএবির নির্বাচনে জয় হল মহারাজেরই! শুধু তাই নয়, সিঁড়িভাঙা অঙ্ক দিয়ে তিনি আগামী দিনে বোর্ডে ফেরার রাস্তাও খোলা রাখলেন।