বিরাট কোহলিকে কে না পছন্দ করেন! ব্যাটার বিরাট কোহলিকে প্রতিপক্ষ টিম সমীহ করেই চলে। সেটা অস্ট্রেলিয়াই হোক না কেন। একদিকে যেমন ভালোবাসা তেমনই অজি সমর্থকরা বিরাটকে উত্যক্ত করতেও ছাড়েন না। অজি প্লেয়ারদের মতো সমর্থকরাও চাইতেন, বিরাটের উইকেট দ্রুত পড়ুক। নয়তো পরিস্থিতি বিপদসীমা ছাপিয়ে যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কেরিয়ারের শুরুর দিকে বিরাটকে নিয়ে সমর্থকরা নানা ভাবে উত্যক্ত করতেন। আর বিরাট কোহলিও ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন। একদিকে যেমন ব্যাট হাতে জবাব দিতেন, তেমনই মুখেও। প্লেয়ারদের পাশাপাশি ছাড় পেতেন না সমর্থকরাও। একবার এই কারণেই বিরাটের উপর প্রচণ্ড রাগ হয়েছিল বীরেন্দ্র সেওয়াগের। এতটাই রাগ হয়েছিল যে বিরাটকে চড় মারারও ইচ্ছে হয়েছিল তাঁর। একটি সাক্ষাৎকারে বীরেন্দ্র সেওয়াগ নিজেই সে কথা বলেছেন। ঘটনা কী হয়েছিল?
বীরেন্দ্র সেওয়াগ ২০১৭ সালে এক ইন্টারভিউতে এই কথা বলেছিলেন। ঘটনাটি ২০১১-১২ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের। বিরাট তখন ভারতীয় টেস্ট দলে নতুনই বলা যায়। সেওয়াগ অভিজ্ঞ প্লেয়ার। দু-জনেই দিল্লি থেকে উঠে এসেছেন। তবে সেওয়াগ অনেকটাই সিনিয়র। বীরেন্দ্র সেওয়াগ ব্যাট হাতে যতটাই আগ্রাসী, তেমনই ততটাই শান্ত। সারাক্ষণ হাসি-খুশি মেজাজে থাকেন। সাধারণত, মেজাজ হারাতে দেখা যায়নি। যদিও বিরাটের উপর মেজাজ হারিয়েছিলেন। তা কিন্তু পারফরম্যান্সের কারণে নয়।
ইন্ডিয়া টুডে-তে সেই সাক্ষাৎকারে দর্শকাসনে ছিলেন বেশ কিছু পড়ুয়াও। তাঁদের একজন জিজ্ঞেস করেন, স্যার আপনাকে সবসময়ই মজা করতে দেখা যায়, কিন্তু কখনও এমন কি হয়েছিল যে, কোনও প্লেয়ারের উপর আপনি প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলেন এবং মনে হয়েছিল দুটো দিয়ে দিই? তাঁর প্রশ্নের উত্তরেই বীরেন্দ্র সেওয়াগ বলেন, ‘হ্যাঁ, একবার বিরাট কোহলির উপর প্রচণ্ড রাগ হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ায় খেলছিলাম আমরা। বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করছিল বিরাট। অজি গ্যালারি থেকে ওকে আঙুল (মিডল ফিঙ্গার) দেখানো হয়।’
বিরাটও সে সময় প্রচণ্ড রাগী ছিলেন। গ্যালারির এই আচরণ মেনে নেননি। বিরাটও পাল্টা দেন। আম্পায়ারও এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। সেওয়াগ করেন, ‘ম্যাচ রেফারি ওকে জরিমানা করেছিল। আমি রেগে গেছিলাম কারণ, সেই সিরিজে একমাত্র বিরাট কোহলি দুর্দান্ত পারফর্ম করছিল। পার্থ টেস্টে বিরাট ৭৫ রান করেছিল। আমার ভয় ছিল, ওর আচরণের জন্য ওকে না ব্যান করা হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা পরের ম্যাচে আরও চাপে পড়তাম। ওকে পরে বুঝিয়েছিলাম, এরকম আচরণ কোরো না যে তোমাকে নির্বাসিত হতে হয়। তোমার জন্য টিমের ক্ষতি হতে পারে।’
সে-বার প্রথম দু-টেস্টে বড় ইনিংস আসেনি বিরাটের ব্যাটে। পার্থে দু-ইনিংসে ৪৪ ও ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন। অ্যাডিলেডে শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। দ্বিতীয় ইনিংসে ২২ রান করেন। ভারত সিরিজ হারলেও শেষ ম্যাচে তরুণ বিরাট কোহলির সেঞ্চুরি বিশেষ প্রাপ্তি।