ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে সফল দল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এখনও অবধি ৬ বার ফাইনালে উঠে পাঁচ বারই চ্যাম্পিয়ন। শুরুটা হয় কচ্ছপের গতিতে। এই কাহানি প্রতিবারেরই। গত বার যদিও হতাশার পারফরম্যান্স হয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। দশ দলের আইপিএলে লাস্ট বয় হয়েছিল মুম্বই। তবে গত বার তাদের কাছে ছিল ‘বিনিয়োগ’। একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কেউ বা খেলার সুযোগ পেয়েছেন, অনেকে শুধুই দলের সঙ্গী। সব মিলিয়ে নতুন প্রজন্ম তৈরি করছিল রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এ বার তারই অনেকটা ফল পাওয়া যাচ্ছে। তা সে তিলক ভার্মা, নেহাল ওয়াদেরার পারফরম্যান্স হোক কিংবা আকাশ মাধওয়াল! অধিনায়ক রোহিত শর্মা এ বারও ধারাবাহিক নন। কিন্তু টিম ঠিক এগোচ্ছে। শেষ মুহূর্তে প্লে-অফ নিশ্চিত। এলিমিনেটরে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে ৮১ রানের বিশাল জয়। তার চেয়েও স্বস্তির তরুণদের পারফরম্যান্স। গুজরাট টাইটান্স গত বার অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন। এ বারও ধারাবাহিক। গত ম্যাচে চিপকে হার মাত্র ১৫ রানের ব্যবধানে। এ বার ঘরের মাঠে ফাইনাল নিশ্চিতের লক্ষ্যে নামছে তারা। দু-দলের মাঝে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন একজন। মহম্মদ সামি। টাইটান্সের পেসার। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে গুজরাট টাইটান্স বনাম মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচ প্রিভিউ TV9Bangla Sports-এ।
স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন সামি। পাওয়ার প্লে-তে তাঁর পারফরম্যান্স লা-জবাব। এ বারের মরসুমে ১৫ ম্যাচে ২৬ উইকেট। ইকোনমি ৭.৬৬। এর মধ্যে ১৫টি উইকেটই নিয়েছেন পাওয়ার প্লে-তে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে পাওয়ার প্লে-তে উইকেট না পেলেও ২ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ৮ রান! আর মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে টাইটান্স জার্সিতে পারফরম্যান্স! এ যেন উলটপূরান। গত মরসুমে এক বারই মুখোমুখি হয়েছিল মুম্বই-গুজরাট। ৪ ওভারে ৪২ রান দিয়ে কোনও উইকেট পাননি সামি। এ মরসুমে দু-বার মুখোমুখি হয়েছে। ঘরের মাঠে ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিলেও উইকেট পাননি। ওয়াংখেড়েতে ৫৩ রান এসেছে সামির ৪ ওভারে। তিন বারের সাক্ষাতে দু-বার হার। এ বার আমেদাবাদে জয়। সামির পারফরম্যান্সের ওপর টাইটান্সের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করবে। পার্পল ক্যাপের তালিকায় শীর্ষে থাকা সামিই হয়তো মুম্বই ব্যাটারদের টার্গেট। তাঁকে পরাস্থ করা গেলে লড়াইটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। সামির কাছে এটাই চ্যালেঞ্জ।
জশ লিটল ফেরায় টাইটান্সের পেস অ্যাটাক আরও শক্তিশালী হয়েছে। যদিও তাঁকে খেলানোর সুযোগ কম। দুই আফগান লেগস্পিনার রশিদ খান ও নুর আহমেদ ধারাবাহিক ভালো পারফর্ম করছেন। লিটলকে খেলাতে হলে দাসুন শানাকা কিংবা ডেভিড মিলারের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে। লিটল খেললে শানাকার বাদ পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। ব্যাটিং নিয়ে টাইটান্সের তেমন চিন্তার জায়গা নেই বললেই চলে। সিএসকের বিরুদ্ধে রান তাড়ায় পিছিয়ে পড়লেও তরুণ ওপেনার শুভমন গিল বিধ্বংসী ফর্মে রয়েছেন। টানা দু-ম্যাচে শতরান করেছিলেন। সিএসকের বিরুদ্ধেও ভরসা দিয়েছেন। তিনি ক্রিজে থাকা অবধি জয়ের প্রবল সম্ভাবনা ছিল টাইটান্সের। অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া অবদান রাখতে পারলে চাপ বাড়বে মুম্বইয়ের।
মুম্বই শিবিরে তরুণদের পারফরম্যান্স ‘আকাশ’ ছোঁয়া। বিশেষ করে বলতে হয় আকাশ মাধওয়ালের কথা। গত ম্যাচে মাত্র ৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট! অভাবনীয় পারফরম্যান্স এই পেসারের। অভিষেক মরসুম। ৭ ম্যাচে ১৩ উইকেট। এর মধ্যে টানা দু ম্যাচে ৪ এবং ৫ উইকেট। তবে চিপকের পরিবেশ, পরিস্থিত, প্রতিপক্ষর সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। ব্যাটিংয়ে গ্রিন, টিম ডেভিড, স্কাইদের সঙ্গে রোহিত শর্মার রান পাওয়া জরুরি। তবে যাই হোক না কেন, মেগা লড়াইয়ে দু-দলের ভাগ্য যেন সামির পারফরম্যান্সেই।