কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়
বিতর্কে কখনও দেখা গিয়েছে তাঁকে? না। কখনও কোনও জটিলতায় থেকেছেন? না। এমনকি, খুব বেশি কথা বলতে শোনা গিয়েছে? না। যিনি এমন, সেই তিনিই কিনা যাবতীয় বাঁধ ভেঙে ফেললেন। যাঁকে এতদিন সহনশীল মনে হয়েছে, সেই তিনি কিনা বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন। এই তিনি হলেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। আশঙ্কা সত্যি হল, ভারতীয় টেস্ট টিম থেকে বাদ পড়লেন বাংলার উইকেটকিপার। কার বিরুদ্ধে? আর কেউ নন, সরাসরি বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে! বলে দিলেন, কথা দিয়েও কথা রাখেননি সৌরভ। কী কথা দিয়েছিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। তিনি যখন আছেন, তখন টিম থেকে বাদ পড়বেন না ঋদ্ধি। বাস্তবের ছবিটা অন্য রকম। যা পরিস্থিতি, তাতে ভারতীয় টেস্ট টিমে ঋদ্ধির পক্ষে ফেরা শুধু কঠিন নয়, হয়তো অসম্ভবও। আর তার পরই তোপ দাগলেন তিনি।
কী বলেছিলেন সৌরভ? শনিবার বিকেলে সিএবির ক্লাব হাউসে দাঁড়িয়ে ঋদ্ধি বলে দিলেন, ‘কাঁধে অস্ত্রোপচারের পর আমি টিমে নিয়মিত ছিলাম না। পন্থকে যখন নিউজিল্যান্ড সিরিজে ছুটি দেওয়া হয়েছিল, আমি খেলেছিলাম। ঘাড়ের ব্যথা নিয়েও ৬১ করেছিলাম। দাদি বলেছিল, যতদিন আমি আছি, তোকে কিছু ভাবতে হবে না। দাদির কথা শুনে খুব স্বাভাবিক ভাবেই মনোবল বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সাউথ আফ্রিকা সিরিজের পর যখন উল্টো হল, তখন সত্যিই হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। একটা সিরিজে কী এমন হল? আমার বয়স কি হঠাৎই বেড়ে গেল নাকি?’
শনিবার বিকেলে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট সিরিজের টিম ঘোষণার সময় ঋদ্ধি কেন বাদ, এই প্রশ্নের মুখে অবধারিত ভাবে পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছিল, ঋদ্ধিকে নিয়ে তিনিও ধোঁয়াশায়। ভারতীয় টিমের কোচ রাহুল দ্রাবিড়ই বাংলার কিপারকে বলে দিয়েছিলেন, টিমে আর তাঁকে ভাবা হবে না। চাইলে অবসর নিয়ে নিতে পারেন। ঋদ্ধি বলছেন, ‘এখন আর বলতে বাধা নেই, রাহুল ভাই আমাকে বলেছিল, ভবিষ্যতে আমাকে আর ভারতীয় টিমের জন্য ভাবা হবে না। ঘুরিয়ে হয়তো অবসর নিতে বলেছে। তবে এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যত দিন শরীর দেবে, খেলব।’ সঙ্গে জুড়ছেন, ‘অনেকেই এমন আছে, যাদের বয়স হয়েছে, তবু খেলছে। নির্বাচকরা হয়তো ভেবেছেন, আমাকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে দেখে নেওয়া উচিত। নতুন প্রতিভা দেখে নিতে চাইছে হয়তো।’
চেতন শর্মা বলেছেন, রঞ্জি খেলে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে আবার টিমে ফিরতে পারবেন বাদ পড়া ক্রিকেটাররা। ঋদ্ধি কিন্তু চাঁচাছোলা। ‘আমি এ বছর রঞ্জি খেলব না। অনেকেই পরিবারের কারণে ব্রেক নিয়েছে। আমি তা-ই নিয়েছি। তবে ভারতীয় টিমে যারা খেলে, তাদের সবাই যে যখন ফ্রি থাকে, তারা রঞ্জি খেলে। সেই কারণেই হয়তো চেতন শর্মা রঞ্জি খেলার কথা বলেছেন। একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত, রঞ্জি আমি এই বছর খেলছি না। আগামী বছর খেলব না, তা তো বলিনি। বাংলা যদি নকআউটে ওঠে আমি খেলতেও পারি।’
আরও পড়ুন: Wriddhiman Saha: ঋদ্ধিমানের ভবিষ্যৎ কী? রঞ্জি খেলার পরামর্শ দিচ্ছে বোর্ড