কলকাতা: স্বপ্নের উড়ান কতজন যশস্বী জয়সওয়ালের (Yashasvi Jaiswal) মতো ভরতে পারেন? ছেলেবেলাতে ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রথমে ইন্দোরে মামার বাড়িতে চলে যান যশস্বী। সেখানে শুরু হয় তাঁর ক্রিকেটের পাঠ। শুরুতে অবশ্য ব্যাটিংয়ে নয় বল হাতে ভেল্কি দেখাতে চেয়েছিলেন যশস্বী। ইন্দোরের এক ক্রিকেট কোচ জীতু তোমর সেই সময় যশস্বী ব্যাটিং স্কিল দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তিনিই যশস্বীকে বুঝিয়েছিলেন লেগস্পিনে পড়ে না থেকে নিজেকে ব্যাটিংয়ে মুক্ত বিহঙ্গ হতে। কোচের কথায় ব্যাটিংয়ে মন দেন যশস্বী। ছোট্ট ছোট্ট পথ পেরিয়ে এখন সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছেন যশস্বী। এ বার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জাদুকরী ইনিংস উপহার দিলেন তিনি। দেশের মাটিতে টেস্ট কেরিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। ক্রিকেট মহল যে কারণে তাঁর জন্য বার বার বলছে, ‘যশস্বী ভব।’
নিশ্চিতভাবে ছেলের জন্য গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে যশস্বীর মা-বাবার। একসময় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে মায়ানগরীতে পাড়ি দেন যশস্বী। দিন কাটাতে ও পেট চালাতে একটা ছোট্ট দোকানের কাজে যোগ দেন। আর সময় পেলেই ক্রিকেটে বুঁদ থাকতেন তিনি। থাকতেন আজাদ ময়দানের তাঁবুতে। আলো, পাখা ছিল না সেখানে। এক ঘুপচি ঘরে কাটত দিন-রাত। ছিল না কোনও শৌচাগারও। এক সময় ক্রিকেট অনুশীলন হওয়ার পর আজাদ ময়দানে ফুচকাও বিক্রি করেছেন যশস্বী। দিন-রাত এক করে পরিশ্রম করেছেন, আর ক্রিকেটকেই ধ্যান জ্ঞান মেনেছেন যশস্বী। আজ তার ফল পাচ্ছেন। সাফল্য পাওয়ার পর হাওয়ায় গা ভাসাননি যশস্বী। ২ কামরার ভাড়ার ঘর ছেড়ে মুম্বইয়ে ৫ BHK ফ্ল্যাট কিনেছেন। যে কষ্ট অতীতে তিনি ও তাঁর পরিবার ভোগ করেছিল, তা আর যাতে না করতে হয় তা নিশ্চিত করেছেন যশস্বী।
অনেক কাঠ খড় পোড়ালে সাফল্য ধরা দেয়। তা যশস্বীর থেকে ভালো কেউ বোঝেন না। তাঁর ওপর টিম ম্যানেজমেন্ট যেমন আস্থা রাখছে, তার প্রতিদানও দিচ্ছেন যশস্বী। দেশ-বিদেশের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা যে কারণে তাঁকে ভারতের ভবিষ্যৎের সুপারস্টার তমকাও দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশাখাপত্তনম টেস্টে যশস্বী জয়সওয়াল ২০৯ রান করেছেন। তিনি ছাড়া আর কোনও ভারতীয় ক্রিকেটার হাফসেঞ্চুরিও করতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে ৩৯৬ রান তুলেছে ভারত। এ বার দেখার ইংল্যান্ডকে বুমরা-মুকেশ-অশ্বিনরা কত রানে আটকাতে পারেন।