দোহা : লিওনেল মেসির সঙ্গে জড়িয়ে অনেক ইতিহাস ও আবেগ। এলএম টেনের এত দিনের স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ জেতার। কাতারে কাপ থেকে এক কদম দূরে দাঁড়িয়ে তিনি। দুরন্ত ছন্দে থাকা মেসিকে নিয়ে সারা বিশ্বে তুমুল উন্মাদনা। তাঁর শহর রোসারিও এ বার মেতে গেল মেসি-বন্দনায়। রবিবার ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা। সারা টুর্নামেন্টে কিলিয়ান এমবাপে, আতোঁয়া গ্রিজম্যানরা চমৎকার পারফর্ম করেছেন। কিন্তু মেসির অবিস্মরণীয় ফুটবলে আচ্ছন্ন ফুটবল বিশ্ব।
কাতার বিশ্বকাপে একের পর এক ধাপ পেরিয়ে অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছেছে মেসির আর্জেন্টিনা। মঙ্গলবার রাতে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়ার পর দেখা গেল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উদযাপন। উৎসবে মেতে উঠেছিল গোটা আর্জেন্টিনা। সেই আমেজ পৌঁছায় সরাসরি মেসির ঠাকুমার বাড়ির সামনেও। হাজার হাজার আর্জেন্টাইন সমর্থকদের “দ্য গ্র্যান্ডমা অফ্ মেসি” অর্থাৎ ‘মেসির ঠাকুমা’ বলে জপ করতে দেখা যায়। খুবই স্বাভাবিক ভাবে আর্জেন্টিনার এবং মেসির এই সাফল্য তাঁর ঠাকুমাকে উৎসর্গ করা হয়।
কাতার বিশ্বকাপে একের পর এক রেকর্ড গড়লেন লিও মেসি। ৫টি গোল এবং ৪টি অ্যাসিস্ট নিয়ে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে আছেন তিনি। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার ১০ গোলের রেকর্ড ভেঙে ১১টি গোল করে বিশ্বকাপের মঞ্চে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গিয়েছেন। এ ছাড়াও রয়েছে বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডটিও। প্রাক্তন জার্মান তারকা লোথার ম্যাথেউসের ২৫টি ম্যাচ টপকে ২৬তম ম্যাচ খেলতে রবিবার ফাইনালে নামতে চলেছেন মেসি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কেরিয়ারে অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এ সব কিছু হয়তো সত্যিই সম্ভব হতো না মেসির জীবনে ঠাকুমার অবদান না থাকলে। ঠাকুমার সম্বন্ধে মেসি এক ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, “ছেলেবেলায় যে ক্লাবের হয়ে খেলতাম, সেই ক্লাবটি আমার থেকে বয়সে এক বছরের বড় ছিল। আমার বয়স তখন ৪। ওই ক্লাবের দরকার ছিল একজন প্লেয়ারের। আমি খুব ছোট থাকায় কোচ আমাকে দলে নিতে অনিচ্ছুক ছিলেন। তখন আমার ঠাকুমা কোচকে জোর করাতে আমাকে দলে নিয়ে নেন তিনি। সেই থেকে আমার ফুটবলের যাত্রা শুরু।”
১৯৯৮ সালে মেসির ঠাকুমা সেলিভা অলিভেরা মারা গিয়েছেন। কিন্তু ফুটবল জগতে তাঁর কৃতিত্বের জন্য হয়তো চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন তিনি। মেসির করা প্রত্যেকটি গোলের পর দু’হাতের আঙুলগুলো আকাশের দিকে ওঠে। ঠাকুমার উদ্দেশ্যে প্রতিবার শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি।