কলকাতা: খেতাবের আড়ালে সব সময় কি আক্ষেপ লুকিয়ে থাকে? ট্রফি, বিশ্বকাপ, দলগত সাফল্য হোক আর ব্যক্তিগত, এই আক্ষেপ কি ফিরে ফিরে আসে? যত বড় প্লেয়ারই হোন না কেন, কেউই সব জিততে পারেন না। সব মাইলফলক পার করা হয় না। পা পড়ে না সমস্ত পাহাড় চূড়ায়। এই তালিকায় পেলে-মারাদোনা থেকে ডন ব্র্যাডম্যান-সচিন তেন্ডুলকর, রজার ফেডেরার-সেরেনা উইলিয়ামসরাও আছেন। থাকবেন পরবর্তী প্রজন্মের মহাতারকারা। ঠিক যেমন আছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরেছিলেন ব্রাজিলের মাটিতে। কোপা আমেরিকা জিতে কাটিয়েছিলেন ট্রফি না জেতার অভিশাপ। কাতার বিশ্বকাপ জিতে কিংবদন্তিদের তালিকায় পাকাপাকি লিখিয়ে ফেলেছেন নাম। সেই তাঁর আক্ষেপ কী? বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
টিস্যু পেপারে প্রাথমিক চুক্তিপত্রে সই করে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন ১১ বছরের মেসি। ফুটবলের ইতিহাসে সেই গল্প অমর। বার্সার যুব অ্যাকাডেমি থেকে দ্রুত জায়গা করে নিয়েছিলেন প্রথম দলে। রোনাল্ডিনহোর মতো তারকা ধীরে ধীরে জায়গা করে দিয়েছিলেন পরবর্তী তারকাকে। বার্সার হয়ে হোক আর আর্জেন্টিনা, যা ট্রফি জিতেছেন, ফুটবলের ইতিহাসে আর কেউ জেতেননি। ১০বার লা লিগায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ২বার ফরাসি লিগ সঙ্গে কোপা আর বিশ্বকাপ। সঙ্গে সাতবার ব্যালন ডি’অর। প্রাপ্তির শো-কেসে মেসির ‘নেই’ বলে কিছু নেই। তবু আক্ষেপের অজানা কাহিনি রয়ে গিয়েছে।
তখন মাত্র ১৮ বছর বয়স তাঁর। ২০০৬ সাল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছিল বার্সা। উল্টো দিকে আর্সেনাল। প্রেম-কবিতার শহর প্যারিসে ম্যাচ। ফাইনালে মেসির সে দিন নামা হয়নি। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে। ম্যাচটাতে পিছিয়ে পড়েও ২-১ জিতেছিল বার্সা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের সেলিব্রেশনে যেতে চাননি মেসি। এতটাই মন খারাপ হয়েছিল তাঁর। সেদিনের কথা মনে পড়লে মেসি এখনও বলেননি, ‘এখন ভাবলে খারাপ লাগে। সেলিব্রেশনে যাওয়া উচিত ছিল আমার। আসলে কত বড় একটা ঘটনা ক্লাব ঘটিয়ে ফেলেছিল, বুঝতেই পারিনি বোধহয়। অন্তত বেঞ্চে গিয়ে বসা উচিত ছিল। কিন্তু এত মন খারাপ হয়েছিল যে, কিছুই ভালো লাগছিল না।’
মেসির সেরা গোল? ২০০৯ সালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল ছিল। ওই ম্যাচে হেডে করা গোলটার কথা তুলে ধরেন। মেসি ফ্রি কিক থেকে দর্শনীয় গোল করেন, বিপক্ষের ফুটবলারদের কাটিয়ে অবলীলায় গোল করে দেন তৃপ্তি। তখন ম্যাজিশিয়ান মনে হয় তাঁকে। কিন্তু মেসি এই সব গোল নয়, সেরা গোলের তালিকায় রেখেছেন একটি হেডে করা গোলকে। তাঁর কথায়, ‘রিও ফার্দিনান্দের মতো ডিফেন্ডার থাকা সত্ত্বেও আমি হেডে গোল করছি, ভাবাটাই কঠিন। তেমনটাই ঘটেছিল। সে দিন দেখেছিলাম, কেউ আমাকে মার্কিং করেনি। জাভির বলটা উড়তেই দেরি করিনি। গোলটা সব দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টিমের জন্য, আমার জন্য। যে কারণে ওটাকেই সেরার তালিকায় রেখেছি।’