সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলকে এ দিন সংবর্ধনা দিল ভবানীপুর ক্লাব। অনুষ্ঠানে সন্তোষ ট্রফি জয়ী কোচ সঞ্জয় সেন-সহ উপস্থিত ছিল চ্যাম্পিয়ন বাংলা দল। তবে রবি হাঁসদা এবং ইসরাফিল দেওয়ান উপস্থিত থাকতে পারেননি ক্লাবের প্র্যাক্টিস থাকায়। রবি হাঁসদা সদ্য আইএসএলের ক্লাব মহমেডানে যোগ দিয়েছেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভবানীপুর ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে চ্যাম্পিয়ন বাংলা দলকে তিন লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। কোচ-ফুটবলারদের প্রত্যেককে ঘড়িও দেওয়া হয়।
ক্লাবের এই অনুষ্ঠানে সঞ্জয় সেন এবং বাংলা দলের ফুটবলাররা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ভবানীপুর ক্লাবের কর্ণধার স্বপনসাধন (টুটু) বোস, প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য, শিশির ঘোষ, কম্পটন দত্ত, অতনু ভট্টাচার্য, দেবজিৎ ঘোষ, শিল্টন পাল, আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত, মোহনবাগান সহ-সভাপতি কুণাল ঘোষ, আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত, মহামেডান সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ রাজু, কার্যনির্বাহী সভাপতি কামারউদ্দিন প্রমুখ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সন্তোষ জয়ী বাংলার কোচ সঞ্জয় সেন বলেন, ‘আমি শুধু নিজের কাজটা সৎভাবে করেছি। আমি মনে করি, সৎভাবে নিজের কাজটা করে গেলে একদিন না একদিন ফল পাওয়া যায়। দেখুন, আগে যে সব বাংলা টিম সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তাদের সঙ্গে এবারের টিমের কোনও তুলনা চলে না। কারণ, আগে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের প্লেয়াররা রোভার্স-ডুরান্ড খেলে সন্তোষ ট্রফি খেলতে যেত। কিন্তু এখন আর মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের প্লেয়ারদের সন্তোষ ট্রফিতে পাওয়া যায় না। আইএসএল-আই লিগ খেলা প্লেয়ারদেরও না। তাই আগের বত্রিশবার সন্তোষজয়ী বাংলা টিমের চেয়ে এবারের বাংলা টিমের কাজ অনেক বেশি কঠিন ছিল।’
সঞ্জয় সেন আরও যোগ করেন, ‘আড়াই মাসের সাধনার ফল এই সন্তোষ ট্রফি জয়। চল্লিশ জনের মধ্যে থেকে ঝাড়াইবাছাই করে বাইশ জনকে নির্বাচিত করেছিলাম। ছেলেদের একটাই কথা বলব- আগামী এক-দু’মাস তোমরা এ রকম অনেক সংবর্ধনা পাবে। কিন্তু দেখো, তোমাদের মাথা যাতে ঘুরে না যায়। সন্তোষ ট্রফি জয়ের পরের দিন ব্রেকফাস্ট টেবিলে ছেলেদের বলেছিলাম, কলকাতায় ফেরার পর তোমাদের জীবন বদলে যাবে। ভাবিনি, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে নবান্ন থেকে ডাক আসবে।’
অনুষ্ঠানে ভবানীপুর ক্লাবের কর্তা সৃঞ্জয় বোস বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে সন্তোষ ট্রফি জয়ী প্লেয়ারদের চাকরি দিলেন, তা নজিরবিহীন ঘটনা। সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের ন’জন ফুটবলার গত দু’মরসুম মিলিয়ে ভবানীপুর ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। তার মধ্যে এবারই চার ফুটবলার ভবানীপুর ক্লাবের ছিলেন। গত বছর সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার ফলাফল খারাপ হয়েছিল। সেটা হতেই পারে। কিন্তু সে সময় যাঁরা ব্যর্থতার জন্য ভবানীপুর ক্লাবকে দায়ী করেছিলেন, এই সাফল্য তাঁদের জন্যও জবাব।’
অনুষ্ঠানে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রথম হওয়া সহজ। গুরুত্বপূর্ণ হল, পরবর্তী পরিচর্যাটা। যত দিন না ভারতীয় টিমে বাংলার সাত জন প্লেয়ার থাকবে, তত দিন ভারতীয় ফুটবল এগোবে না। কিন্তু সমস্যা হল, কলকাতা লিগে আবার এগারো জন ফুটবলারের মধ্যে সাত জন বাইরের প্লেয়ার খেলে। তা হলে কী করে উন্নতি হবে? আইএফএ-কে বলব, কলকাতা লিগ আপনারা যে রকম বিদেশি মুক্ত করেছেন, তেমনই কলকাতা লিগে শুধুমাত্র বাংলার প্লেয়ার খেলানোর বন্দোবস্ত করুন।’