দোহা : ঠিক কীভাবে এই রাত টাকে মনে রাখবে ক্যামেরুন (CAMEROON)! ব্রাজিলকে হারানোর গর্ব, নাকি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়? আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্রাজিলকে (BRAZIL) হারানোর কীর্তি ক্যামেরুনের। একই সঙ্গে বিদায়ও। ব্রাজিলের নকআউট আগেই নিশ্চিত হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অবশ্যই অপরাজিত থেকে নকআউটে নামা। পরীক্ষায় ফেল ব্রাজিল। একের পর এক সুযোগ নষ্ট। ঠিক কতগুলো গোল দিতে পারত ব্রাজিল! সুযোগ এবং সাফল্য এক নয়। ব্রাজিল একঝাঁক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ। ক্যামেরুন হাতে গোনা সুযোগ পেল। তাতেই ইতিহাস। অ্যাডেড টাইমে ব্রাজিল বধের ইতিহাস লিখলেন আবুবাকার। জি গ্রুপ থেকে ব্রাজিলের পাশাপাশি নকআউটে জায়গা করে নিল সুইৎজারল্যান্ড। বিস্তারিত রিপোর্ট TV9Bangla-য়।
ক্যামেরুন ১ (আবুবাকার ৯০+২’)
ব্রাজিল ০
অতি জনপ্রিয় একটা ওয়েব সিরিজ, ভারতে যেটা মানি হায়েস্ট নামে পরিচিত। এই সিরিজে একটি দৃশ্যে দেখা গিয়েছে নেইমারকেও। যাই হোক, বিষয় সেটা নয়। তবে এই সিরিজের একটা দৃশ্য ভোলার নয়। এর প্রধান চরিত্র ‘এল প্রোফেসর’ সতীর্থদের একটা বিষয় বোঝানোর ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে প্রশ্ন করেছিলেন, বিশ্বকাপে ব্রাজিল বনাম ক্য়ামেরুন ম্যাচ হলে তাঁরা কাকে সমর্থন করবে! ব্রাজিলের সমর্থকরা নিঃসন্দেহে ক্যামেরুনকে সমর্থন করবে না। কিন্তু যাঁরা ব্রাজিলের সমর্থক নন! একজন তাচ্ছিল্যের সুরেই মন্তব্য় করেছিলেন, এই ম্যাচে ব্রাজিল ছাড়া কে জিতবে! কিন্তু মন থেকে চাইবেন, অঘটন হোক এমন মন্তব্যও এসেছিল। বাকিরাও জানান, তাঁরাও মনে মনে তথাকথিক দুর্বল দল, আন্ডারডগ ক্যামেরুনকেই সমর্থন করবেন। কথাটা ভুল নয়। শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ হলে নিরপেক্ষ ফুটবল প্রেমীরা দুর্বল দলকেই সমর্থন করে থাকেন। লুসেইলে ব্রাজিল বনাম ক্যামেরুন ম্যাচেও কি সেটাই হয়েছিল? বিশ্বকাপের ম্যাচ ওয়েব সিরিজটির মতো সাজানো কোনও গল্প নয়। তবে সেটা যেন বাস্তব হয়ে উঠল। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্রাজিলকে হারাল ক্য়ামেরুন। এর জন্য ক্যামেরুনের যেমন কৃতিত্ব রয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি দায় ব্রাজিলের। মোট ২১টি শট, এর মধ্যে ৭টি লক্ষ্যে। এত সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে আর কাকেই বা দায়ী করা যায়! অন্যদিকে, ক্যামেরুন লক্ষ্যে ৩টি শট নিয়েছে, যার একটি থেকে গোল এবং ঐতিহাসিক জয়।
ম্যাচে আগে এক বার হলুদ কার্ড দেখেছিলেন ভিনসেন্ট আবুবাকার। অ্যাডেড টাইমে ঐতিহাসিক গোলের পর জার্সি খুলে উচ্ছ্বাসে মাতলেন। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড তথা রেড কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হল। তাঁর কোনও খেদ নেই। মুখে গর্বের হাসি নিয়েই মাঠ ছাড়লেন। পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারানো, আর কী চাই! ক্যামেরুন জিতলেও তাদের ভরসা করতে হত অন্য ম্যাচের ফলের উপর। সার্বিয়া বনাম সুইৎজারল্যান্ড ম্যাচটি ড্র হলে কিংবা সুইৎজারল্যান্ড হারলে, তবেই ক্যামেরুনের সম্ভাবনা থাকত। স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ নাটকীয় জয় সুইৎজারল্যান্ডের।
সুইৎজারল্যান্ড ৩ (শাকিরি ২০’, এমবোলো ৪৪’, ফ্রলার ৪৮’)
সার্বিয়া ২ (মিত্রোভিচ ২৬’, লাওভিচ ৩৫’)
ম্যাচের ২০ মিনিটে সুইৎজারল্যান্ডকে এগিয়ে দিয়েছিলেন জার্দান শাকিরি। কিন্তু ৬ মিনিটের মধ্যেই সমতা ফেরান মিত্রোভিচ। ৩৫ মিনিটে দুসান লাওভিচের গোলে এগিয়ে যায় সার্বিয়া। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে সুইৎজারল্যান্ডের হয়ে সমতা ফেরান ক্য়ামেরুনে জন্মানো ব্রেল এমবোলো। জন্মভূমি ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে গোল করে সেলিব্রেশন করেননি এমবোলো। এ দিনও সমতা সুইৎজারল্যান্ডের হয়ে সমতা ফিরিয়ে ক্যামেরুন শিবিরে আশা জাগিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রেমো ফ্রলারের গোলে এগিয়ে যায় সুইসরা। শেষ অবধি ৩-২ ব্য়বধানে জয়। ব্রাজিলের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গোল পার্থক্য়ে দ্বিতীয় স্থানে থেকে নকআউটে সুইৎজারল্য়ান্ড।