জুরিখ: নভেম্বর-ডিসেম্বর জুড়ে মধ্যপ্রাচ্যে এ বার বসছে বিশ্বকাপের আসর। ২২তম বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে কাতার। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের থেকে এ বারের বিশ্বকাপের (Qatar World Cup 2022) পুরস্কারমূল্য বাড়ানো হয়েছে। কাতারের গরমের সঙ্গে ফুটবলাররা যাতে মানিয়ে নিতে পারেন, সেই কারণে কোনও কসুর রাখেনি আয়োজকরা। কাতারের যে আটটি স্টেডিয়ামে ম্যাচ হবে সেগুলি একাধিক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো হয়েছে। এ বারের বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে ৩২টি দেশ। ফিফা (FIFA) পুরো টুর্নামেন্টের জন্য মোট ৪৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুরস্কার রেখেছে। চ্যাম্পিয়নরা পাবে ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। একটা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে ফিফার প্রচুর খরচ হয়। ঢালাও খরচ করেও প্রচুর আয় করতে চলেছে ফিফা। কীভাবে জানেন? সেই তথ্য তুলে ধরা হল TV9 Bangla-র এই প্রতিবেদনে।
ফিফা প্রতি বিশ্বকাপের জন্য চার বছরের চক্রে হিসেব একত্রিত করে। সম্প্রতি প্রকাশিত ২০১৫-১৮ চক্রের জন্য, ফিফা ৬.৪ বিলিয়ন রাজস্ব আদায় করেছে। ২০২১ সালে কোনও বিশ্বকাপ হয়নি। গত বছর ফিফা পেয়েছে মোট ৭৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বকাপ আয়োজন করার জন্য পুরস্কারমূল্যের পাশাপাশি বিভিন্ন খাতেও খরত করতে হয় ফিফাকে। যার মধ্যে রয়েছে- আয়োজক দেশের বিশ্বকাপ আয়োজনের কমিটিকে অর্থ প্রদান করা। বিভিন্ন দলের ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফদের যাতায়াত এবং থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা। বিশ্বকাপের পর আয়োজক দেশে ফুটবলের বিকাশে পরিকাঠামোগত সহযোগিতাও করা।
১) টিভি রাইটস – ফিফার সর্বাধিক আয় হয় বিশ্বকাপ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন টুর্নামেন্টের জন্য টিভি সম্প্রচার স্বত্ত্ব বিক্রি করা থেকে। চার বছরের শেষ চক্রে ফিফা যে ৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে, তার মধ্যে টিভি স্বত্ত্ব থেকেই এসেছিল ৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২) মার্কেটিং রাইটস – ফিফার বিভিন্ন ইভেন্টে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে একাধিক গ্লোবাল ব্র্যান্ড। বিভিন্ন বড় ব্র্যান্ডগুলি ফিফার ডেভেলপমেন্ট ও সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি ফান্ডের পার্টনার হয়। এই ভাবেই ফিফার নন-প্রফিট ক্ষেত্রে লগ্নি করে থাকে সংস্থাগুলি। আন্তর্জাতিক স্তর থেকে তৃণমূলস্তর অবধি ফুটবলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফিফার সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করে থাকে বিভিন্ন সংস্থা। ফুটবল বিশ্বকাপ দেখেন প্রচুর দর্শক।
৩) টিকিট বিক্রি এবং হসপিটালিটি – ফিফার অধীনস্থ সংস্থার মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করেও প্রচুর আয় হয় ফিফার। ২০১৫-১৮ চক্র অবধি টিকিট বিক্রি বাবদ ফিফা পেয়েছিল ৭১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২১ সালে আরব কাপ দেখেছিলেন মোট ৬ লক্ষ দর্শক। ফলে, সেখান থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কাতার বিশ্বকাপের জন্য ৩ মিলিয়ন টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর দাম ছিল ১০০ ডলার থেকে ১১০০ ডলার অবধি। এর থেকেই পরিস্কার এ বারের কাতার বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রি থেকেও রেকর্ড লাভ হতে চলেছে ফিফার।
৪) ব্র্যান্ডিং এবং লাইসেন্সিং – ব্র্যান্ড লাইসেন্সিং থেকেও ফিফার আয় হয়। এর মধ্যে সব চেয়ে পরিচিত হল ইলেকট্রনিক আর্টস সিরিজ। এর সঙ্গে ফিফার ২০ বছরের পার্টনারশিপও রয়েছে। সেখান থেকে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করার সুযোগ রয়েছে ফিফার। প্রতি বছর ওই গেমস প্রস্তুতকারক সংস্থা বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ফিফাকে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে দিয়ে থাকে। মার্চেন্ডাইজ, রিটেল ও গেমিং এর ব্র্যান্ড লাইসেন্সিং থেকে ফিফা গত বছর ১৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আদায় করেছে। ২০১৫ সালে ফিফার একাধিক আধিকারিক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হওয়ার জেরে, ক্ষতিপূরণ বাবদ মার্কিন বিচার বিভাগ থেকে ফিফা ২০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছিল।