দোহা : কাতার বিশ্বকাপের মহা আয়োজন শুরু হয় ‘আল-রিলা’ দিয়ে। যার মানে “দ্য জার্নি”। কাতারের সংস্কৃতি, স্থাপত্য, আইকনিক নৌকা ও জাতীয় পতাকা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সেই আদলে তৈরি করা হয় বলটি। বিশ্বকাপে এখনও অবধি ৬০ টি ম্যাচ খেলা হয়েছে এই বল দিয়ে। আগের সকল বিশ্বকাপে ব্যবহৃত বলগুলির থেকে অনেক বেশি আধুনিক ‘আল-রিলা’। সেমিফাইনাল, ফাইনাল ও তৃতীয় স্থানের জন্য লড়াই। এই চারটি ম্যাচে ব্যবহার করা হবে না এই আল-রিলা। রবিবার অ্যাডিডাস প্রকাশ করেছে শেষ চারটি ম্যাচে ঠিক কোন বল ব্যবহার করা হবে। আরও আধুনিক বলে খেলা হবে। বলটির নাম ‘আল-হিম’। অর্থাৎ, ‘দ্য ড্রিম’।
স্বপ্ন নিয়েই বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রেখেছিল ৩২টি দেশ। এখন লড়াই সীমিত ৪টি দলের মধ্যেই। আর্জেন্টিনা, ক্রোয়েশিয়া, ফ্রান্স এবং মরক্কো। শেষ অবধি ট্রফি কোন দেশে যাবে, অপেক্ষা আর একটা সপ্তাহের। সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের জন্য প্রকাশিত বল ‘আল-হিম’ নামটি কাতারের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে। গোধূলির সৌন্দর্য তুলে ধরবে আল-হিম। ঠিক যেভাবে সন্ধে নামার আগে কাতারের লালচে আকাশ সোনালী বালির রঙে মেশে। মুগ্ধকর এক দৃশ্য। বিশ্বকাপও অন্তিম লগ্নে। ১৮ ডিসেম্বর লুসেইল স্টেডিয়ামে স্বপ্নপূরণের চূড়ান্ত ম্যাচ। কাতারের সৌন্দর্য এবং প্রযুক্তির এক অনবদ্য মেল বন্ধন দেখা যাবে ‘আল-হিম’ বলের মধ্যে। ব্যবহার করা হয়েছে ওয়াটার বেসড রং। আল-হিমের সোনালী রং মনে করাবে ফিফা বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি। বলের প্যানেলগুলোর ত্রিকোণ আকার ও উজ্জ্বল লাল রঙা আভা, কাতারের জাতীয় পতাকা ও স্থাপত্যের কথা বলবে।
আল-রিলা ও আল-হিমের মধ্যে প্রযুক্তিগত বিশাল কোনও পার্থক্য অবশ্য নেই। দুটি বলেরই বাতাসে গতি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ব্যবহৃত অন্য বলগুলোর থেকে বেশি। আল হিমেও ব্যবহার করা হয়েছে “কানেক্টেড বল” টেকনোলজি। এই প্রযুক্তি এ বার বিশ্বকাপে অনেক সূক্ষ্ম সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে সাহায্য করেছে। ব্যবহার করা হয়েছে প্লেয়ার পজিশনিং ডেটা। ভিএআর রেফারিদের কাছে এই ডেটা চলে যায় নিজে থেকে। ফলে যে কোনও সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। বিশ্বকাপ আরও সুন্দরভাবে উপভোগ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে সমর্থকদের কাছে। এখানেই শেষ নয়। ব্যবহার করা হয়েছে বল ট্র্যাকিং ডেটা। সেন্সরের মাধ্যমে জোগাড় করা হয় ডেটা। এই দুই প্রযুক্তি একসঙ্গে কাজে লাগিয়ে সুবিধা হয়েছে খেলার মাঝে অফসাইড ট্র্যাক করতে।
সেন্সর ছাড়াও বলটি তৈরি করা হয়েছে পলিইউরেথ্রিন দিয়ে। রয়েছে মোট ২০টি প্যানেল। আবার ভিতরে রয়েছে সিটিআর কোর। যা বাড়িয়েছে বলটির গতি ও বাতাসে কেটে দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা। তবে এতকিছুর মধ্য়েও অবশ্য় ভিএআর নিয়ে বিতর্কও হয়েছে। বাকি ম্যাচে তা কমবে কী!