কৌস্তুভ গাঙ্গুলি
ফাতোরদা: এটিকে মোহনবাগান আর মুম্বই সিটি এফসি। শনিবারের সন্ধ্যায় ফাতোরদায় মেগা দ্বৈরথ। একদিকে রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামস অপর দিকে লে ফন্ড্রে, ওগবেচে। হাবাসের মস্তিষ্ক বনাম লোবেরার ম্যাচ রিডিং। একেই বলে সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর। সমস্ত ক্যাচলাইন তৈরি। শুধু মাঠে বল গড়ানোর অপেক্ষা। একটা দলের কাছে প্রথমবার আইএসএল জয়ের হাতছানি। আরেকটা দলের কাছে বদলার ম্যাচ। প্রথম বার আইএসএলে নেমেই বাজিমাতের সুযোগ। ফাইনালে নামার আগে তেতে রয়েছে দুই শিবিরই।
সবুজ-মেরুনের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু একজনই-রয় কৃষ্ণা। বাগান জনতার আশা-ভরসার যে একটাই নাম। শেষ চার ম্যাচ গোল নেই হাবাসের প্রাণভোমরার। ডার্বির পর আর গোল পাননি। ফাইনালে গোল করে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে মরিয়া রয় কৃষ্ণা। গত আইএসএলে ১৫ গোল করেছিলেন। সেখান থেকে এ বার মাত্র এক ধাপ দূরে। গতবারের রেকর্ড স্পর্শ করার পাশাপাশি গোল্ডেন বুট জেতার সুবর্ণ সুযোগ। মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে দুটো সাক্ষাতের একটাতেও গোল পাননি রয় কৃষ্ণা। মৌর্তাদা ফল, আহমেদ জাহুদের রক্ষণ ভেঙে গোল করতে মুখিয়ে ফিজির তারকা ফুটবলার।
আরও পড়ুন:কাতারেই হবে সুনীলদের বাকি ম্যাচ
মার্সেলিনহো যোগ দেওয়ার পর এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণ অনেক শক্তিশালী হয়েছে। রয় কৃষ্ণা-ডেভিড উইলিয়ামস-মার্সেলিনহো ত্রিফলাতে ভরসা করেই আক্রমণের ঘুঁটি সাজাচ্ছেন হাবাস। মুম্বই সিটি এফসির ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আহমেদ জাহু অনেক বড় চেহারার ফুটবলার। এমনকি রক্ষণেও বড় চেহারার মৌর্তাদা ফল রয়েছেন। এর আগে সেই জোনেই আটকে গিয়েছিলেন রয় কৃষ্ণা, মার্সেলিনহোরা। পেনিট্রেটিভ জোনে আরও সচল হতে এই ত্রিফলার উপর নির্ভর করেই আক্রমণের ছক সাজিয়ে রেখেছেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। প্লে মেকার মার্সেলিনহোকে ফ্রি খেলাতে চান বাগানের স্প্যানিশ কোচ। কারণ মার্সেলিনহো অনেকটা জায়গা জুড়ে খেললে তবেই গোলের জন্য ঠিকানা লেখা বল পাবেন রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামস। আপফ্রন্টে রয় কৃষ্ণা-ডেভিড উইলিয়ামস জুটিও হাবাসের অন্যতম সেরা অস্ত্র।
Our Gaffer becomes the first Coach in #HeroISL history to have his side feature in 3️⃣ finals! ?❤️
Let’s hope he can add another piece of silverware to his cabinet! #ATKMohunBagan #Mariners #JoyMohunBagan #IndianFootball #MCFCATKMB pic.twitter.com/RpXOZhWPhK
— ATK Mohun Bagan FC (@atkmohunbaganfc) March 12, 2021
মুম্বই সিটি এফসির আক্রমণ থামাতে রক্ষণে বাড়তি নজর দিচ্ছেন হাবাস। ব্যথা নিয়েও নর্থইস্টের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন সন্দেশ ঝিঙ্গান। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ফাইনালেও হাবাসের রক্ষণে ভরসা তিরি-সন্দেশ জুটি। ২২ ম্যাচে ১৫ গোল হজম করেছে এটিকে মোহনবাগানের রক্ষণ। তবে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে দুটো ম্যাচেই গোল হজম করতে হয়েছিল হাবাসের দলকে। শনিবারের ফাইনালে তাই বাড়তি সতর্ক থাকছেন তিরি, সন্দেশরা। সেট পিসে ভয়ঙ্কর বোমাসরা। ৩৭ গোলের মধ্যে ২০ গোলই সেট পিস থেকে করেছেন আহমেদ জাহুরা। এমন কি মুম্বইয়ের উইংও যথেষ্ট শক্তিশালী। বিপিন সিং, রাওলিন বর্জেসদের আটকাতেও প্রীতম-শুভাশিসদের বিশেষ দাওয়াই দিয়েছেন হাবাস।
আরও পড়ুন:টিম থেকে বাদ পড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন পৃথ্বী
লেনি রডরিগেজ আসার পর এটিকে মোহনবাগানের মাঝমাঠ অনেক শক্তিশালী হয়েছে। শনিবার মাঝমাঠেই খেলার দখল নিতে চান হাবাস। কারণ মুম্বইয়ের মিডফিল্ডে রয়েছেন হুগো বোমাস, আহমেদ জাহু, রেইনিয়ার ফার্নান্ডেজের মতো ফুটবলাররা। এরই সঙ্গে বিপিন সিংদের সাপ্লাই লাইন কেটে দেওয়ার ছকও সাজিয়ে রাখছেন হাবাস। কোচ সের্জিও লোবেরা এর আগে এফসি গোয়াকে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকিট দিয়েছেন। পোড় খাওয়া স্প্যানিশ কোচ রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামসদের দুর্বলতাও নোটবুকে তুলে রেখেছেন। তবে মুম্বই সিটি এফসির প্রধান অস্ত্রই তাদের আক্রমণভাগ। সুযোগসন্ধানী অ্যাডাম লে ফন্ড্রে, ওগবেচেরা তিন কাঠির সামনে বিপজ্জনক। হাবাস-লোবেরা দ্বৈরথে কে শেষ হাসি হাসে সেটাই এখন দেখার।