কিছুদিন আগেও মোহনবাগানকে ঠিক মোহনবাগানের মতো লাগছিল না। গত বারের চ্যাম্পিয়ন। বছর শেষে হারের হ্যাটট্রিক, কলিঙ্গ সুপার কাপে গ্রুপ পর্বেই হার। হতাশা ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোতেই নজর ছিল। আন্তোনিও লোপেজ হাবাস দায়িত্ব নিতেই মেজাজে ফিরতে থাকে মোহনবাগান। ডার্বিতে ড্রয়ের পর হায়দরাবাদকে হারিয়ে জয়ে ফেরা। এরপর গোয়ার মাঠে অনবদ্য জয়। ঘরের মাঠে আজ নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে মোহনবাগান। কিন্তু হাবাসের টিমের মন্ত্র যে, একটা গোল খেলে আরও বেশি করে দেব! পিছিয়ে পড়েও নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডকে ৪-২ ব্যবধানে জয় মোহনবাগানের। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
ম্যাচের মাত্র ৬ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে মোহনবাগান। ফের বিতর্কিত পেনাল্টি। তবে মোহনবাগান সমর্থকদের মধ্যে প্রবল বিশ্বাস ছিল, ঘুরে দাঁড়ানো শুধু সময়ের অপেক্ষা। প্রথমার্ধের অ্যাডেড টাইমে সমতা এবং লিড। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের সামনে থেকে গোলে শট। অনবদ্য গোলে সমতা ফেরান লিস্টন কোলাসো। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মতো সিউউউউ সেলিব্রেশন করতে চেয়েছিলেন। হাফ সেলিব্রেশন করলেন। গ্যালারিকে তাতালেন। তবে এক গোলে তৃপ্তি হয় নাকি! হাবাসের টিমের হয় না। ২ মিনিটের মধ্যেই কামিংসের গোলে ২-১ লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মোহনবাগান।
দ্বিতীয়ার্ধে নতুন খেলা। ম্যাচের ৬ মিনিটে টমি ইউরিচের পেনাল্টি গোলেই এগিয়ে গিয়েছিল নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড। সমতা ফেরানোর গোলও করলেন টমি ইউরিচ। এর আগে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধেও গোল করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এই ফুটবলার। ৫০ মিনিটে টমি সমতা ফেরালেও মোহনবাগানের আত্মবিশ্বাসে একবিন্দু চিড় ধরেনি। ২ মিনিটের মধ্যেই দিমিত্রি পেত্রাতোসের গোলে ফের লিড নেয় মোহনবাগান। গোয়া ম্যাচে যেমন থাইফাইভ সেলিব্রেশন করেছিলেন, ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে একই সেলিব্রেশন দিমির। সেই গোলের সেলিব্রেশন শেষ হতে না হতেই আবারও গোল। এ বার সাহাল আব্দুল সামাদ। শেষ অবধি ৪-২ স্কোরলাইনে জয়ের হ্যাটট্রিক। পয়েন্ট টেবলে দ্বিতীয় স্থানে উঠল মোহনবাগান।
ফেরান্দোর সময় প্রশ্ন উঠেছিল রিজার্ভ বেঞ্চ নিয়ে। হাবাস বুঝিয়ে দিলেন তাঁর রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি। শুরুতেই নামিয়েছিলেন দুই তরুণ ফুটবলার অভিষেক সূর্যবংশী এবং দীপেন্দু বিশ্বাস। এই দু-জন কেমন খেলেছেন! একটা মুহূর্তই যথেষ্ঠ তা বোঝাতে। দ্বিতীয়ার্ধে যখন এই দু-জনকে তুলে নিলেন, সন্তানের মতো জড়িয়ে ধরলেন হাবাস। মোহনবাগানে আরও স্বস্তি, ফের মাঠে নামেন আনোয়ার আলি। ডার্বিতে চোট পেয়েছিলেন। জয়ের হ্যাটট্রিকের পর বলাই যায়, চ্যাম্পিয়নরা ফের ট্রফির দৌড়ে।