গোয়াঃ বলিউডের (Bollywood) অনেক হরর বা থ্রিলার হিট ছবির ফর্মূলা একটাই। দ্বিতীয়ার্ধ যেন টানটান থাকে। ‘দ্য এন্ড’ কার্ড আসার আগে যেন দর্শক মন ভরে তৃপ্তি পায়।অর্থাৎ দ্বিতীয়ার্ধে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ভরিয়ে দাও ক্লাইম্যাক্স। আইএসএলে শেষ দুটো এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal) ম্যাচে তো সেই ফর্মূলাই। লাল হলুদ সমর্থকরা প্রথমার্ধ দেখে যখন প্রথম জয়ের স্বাদ আস্বাদনের স্বপ্নে বুঁদ হচ্ছে, দ্বিতীয়ার্ধে তখনই স্বপ্নের ফানুস চুপসে যাচ্ছে। সৌজন্যে ডিফেন্সের চরম ভুল। রবিবাসরীয় কেরালা ব্লাস্টার্স (Kerala Blasters)ম্যাচেও তাইই হল।
FULL-TIME | #KBFCSCEB@JeaksonT‘s first #HeroISL goal rescues a point for @KeralaBlasters #HeroISL #LetsFootball pic.twitter.com/iIUHjNWqNk
— Indian Super League (@IndSuperLeague) December 20, 2020
প্রথমার্ধ কড়চা
ম্যাচের মাত্র চোদ্দ মিনিটে পিলকিংটন (Pilkington), রফিকের (Mohammed Rafique) দুরন্ত পাসিং ফুটবল। কেরালা ডিফেন্সে ঢুকে রফিকের দুরন্ত শট। ক্লিয়ার করতে গিয়ে কোনের আত্মঘাতী গোল। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। মেজাজ ফিরতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গলের। রফিক এদিন শুরু থেকেই যেন উইংয়ের গা বেয়ে ছারখার করে দিচ্ছিলেন প্রতিপক্ষর ডিফেন্স। এরপর কিন্তু লাল হলুদ ঝড় ম্যাচ জুড়ে। কখনও মাঘোমা (Maghoma)-পিলকিংটন, কখনও হাওবাম-জাইরু, কখনও বা পিলকিংটন রফিক। মাঘোমার পাস থেকে পিলকিংটন মিস করলেেন ম্যাচে গোল করার অন্যতম সহজ সুযোগ। এরপর কখনও মাঘোমা, কখনও হাওবাম মিস করলেন গোলের সুযোগগুলো। তবে তিনকাঠির তলায় এদিন নজড় কাড়লেন কেরালা ব্লাস্টার্সের অ্যালবিনো গোমস।
দ্বিতীয়ার্ধ কড়চা
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ল কেরালা ব্লাস্টার্সের প্রতি আক্রমণ। কখনও কখনও আবার লাল হলুদের আক্রমণকে ছাপিয়ে। নিশু কুমার, কোনেদের ঘনঘন আক্রমণে একসময় প্রায় জেরবার ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স।এরপর ফের আক্রমণ এসসি ইস্টবেঙ্গলের। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে ফের গোলের সুযোগ হাতছাড়া রফিকের। ৭১ মিনিটে দেবজিৎ (Debjit Majumder) ম্যাজিক। ফুটবলমহল কেন তাঁকে নাম দিয়েছে ‘সেভজিৎ’, দেখিয়ে দিলেন। সাহাল আব্দুল সামাদের হেড থেকে পাওয়া বল জর্ডান মারে যখন ইস্টবেঙ্গলের জালে জড়ানো প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছেন, তখনই ভরসার হাত ফের একবার ম্যাচে বাঁচিয়ে দিল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে আধওঠা অবস্থায় দারুন সেভ দেবজিতের।
ম্যাচের ৮৪ মিনিটে রফিককে তুলতেই,ইস্টবেঙ্গলের উইং দিয়ে পাল্টা আক্রমণ কিবু ভিকুনার (Kibu Vicuna) দলের। কেরালার আক্রমণের ঝড়ে অতিষ্ট ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স। তবুও থামেনি মাঘোমাদের পাল্টা চাপ।
ইনজুরি টাইমে স্বপ্ন শেষ
ছন্দ কাটল দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইমে। ফের একবার স্বপ্ন ভাঙল ফাউলারের। পেরেইরার কর্নার থেকে সাহালের ক্রশ। তাতে মাথা ছুঁইয়ে ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়ালেন জিকসন (Jeakson Singh)। ম্যাচে ফেরার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলের।
১-১ গোলে ড্র হল এসসি ইস্টবেঙ্গল বনাম কেরালা ব্লাস্টার্স ম্যাচ। টানা 6 ম্যাচে জয়ের মুখ দেখল না রবি ফাউলারের (Robbie Fowler)দল। তবে ড্র করে ১০ নম্বরে উঠে এল লাল হলুদ ব্রিগেড। ম্যাচ দেখার পর তো ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা কলকাতার শীতে হয়ত কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর কবিতা ধার করে আওড়াচ্ছেেন, ‘আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের জয় কবে আসবে সুপর্ণা?’