দোহা: উপরের দুটি ছবিই ভাসছে চোখের জলে। তবে পার্থক্য রয়েছে। একটি স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণার, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না। পাশের ছবিটি প্রবল লড়াই করে সাফল্যের আনন্দাশ্রু। উরুগুয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ এইচ-এর শেষ ম্যাচে আলাদা আলাদা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুটি দলই জিতল। পয়েন্টও সমান। তবে গোলপার্থক্যই গড়ে দিল চলতি বিশ্বকাপে দুটি দলের ভাগ্য। পিছিয়ে পড়েও দুরন্ত কামব্যাক করে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগালকে ২-১ হারিয়ে এবং উরুগুয়ের সঙ্গে গোল করায় এগিয়ে থাকায় নকআউটে পৌঁছে গিয়েছেন হিউং মিন সনরা। আল জানৌব স্টেডিয়ামে তখন চোখের জলে মাঠ ছাড়তে দেখা গেল লুইস সুয়ারেজ, এডিনসন কাভানি, দিয়োগো গোডিনদের। ডাগ আউটে বসে ফুঁপিয়ে কাঁদলেন সুয়ারেজ। সম্ভবত এটাই তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। ২০০২ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ল প্রথম বিশ্বকাপজয়ীরা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কনফেডারেশনের তিনটি দল, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া উঠে গেল নকআউটে।
পর্তুগাল আগেই নকআউটে পা রেখেছিল। মরণ-বাঁচন ম্যাচ ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার। ম্যাচের প্রথম থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করে পর্তুগাল। যার জেরে ম্যাচের ৫ মিনিটেই গোল আসে তাঁদের ঝুলিতে। দিয়োগো দালতের ক্রস থেকে দারুণ গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে দেন রিকার্ডো হোর্তা। গোল হজম করে ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ম্যাচের ২৫ মিনিটেই সমতায় ফেরে তারা। কিম ইয়ংয়ের গোলে ১-১ ব্যবধানে বিরতিতে যায় দুটি দল। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে জমে উঠেছিল লড়াই। বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে পর্তুগালকে হারাতেই হত। ম্যাচের সংযুক্তি সময়ে আসে সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত। ওয়াং হি চ্যানের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়েন হিউং মিন সনরা।
জিতেও আল জানৌব স্টেডিয়ামে ঘানা-উরুগুয়ে ম্যাচের দিকে চেয়েছিল দ: কোরিয়া। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল ঘানা। ম্যাচের ১৮তম মিনিটে কুদুসকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ঘানা। কিন্তু গোল করতে পারেননি আন্দ্রে আয়ু। উল্টে ২৬ মিনিটে জিওর্জিয়ান ডি আরাসকেইটার গোলে এগিয়ে যায় উরুগুয়ে। ৩২ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন জিওর্জিয়ান। দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে উরুগুয়ে। কিন্তু সাফল্য ধরা দেয়নি। নকআউটে যেতে আর একটি গোলের প্রয়োজন ছিল সুয়ারেজদের। শেষ পর্যন্ত স্কোরলাইন এক রইল। দক্ষিণ কোরিয়ার থেকে গোল করায় পিছিয়ে থেকে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় সুয়ারেজদের।