স্পেন- ৫ (সারাবিয়া ৩৮’, অ্যাজপিলিকুয়েতা ৫৭’, ফেরান টোরেস ৭৬’, মোরাতা ১০০’,ওয়ার্জাবাল ১০৩’)
ক্রোয়েশিয়া- ৩ ( পেদ্রি আত্মঘাতী ২০’, ওর্সিচ ৮৫’, প্যাসালিচ ৯০’+২’)
কোপেনহেগেনঃ চলতি ইউরোর(EURO 2021) সেরার সেরা ম্যাচ বললেও অত্যুক্তি হয়না। রূদ্ধশ্বাস উপমাও বড্ড ক্লিশে যেন এই ম্যাচের জন্য। কোপেনহেগেনের পার্কেন স্টেডিয়াম সোমবার ইউরোর যে ম্যাচ দেখল, তার জন্যই বোধ হয় ফুটবল (FOOTBALL)অন্য খেলার থেকে কয়েক যোজন এগিয়ে থাকবে। ক্রোয়েশিয়ার(CROATIA) সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে লড়াইয়ে ৫-৩ গোলে ম্যাচ জিতল স্পেন(SPAIN)। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচের ফলাফল ছিল ৩-৩। আর একস্ট্রা টাইমে ম্যাচ গড়ালে আরও ২ গোল দিয়ে ম্যাচ জিতে নিল স্পেন। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল বিশ্বকাপের রানার্সরা(RUNNERS)।
এদিন ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত কেমন ছিল দেখে নেব একনজরে-
২০’- অবাক করার মত ঘটনা ইউরোর মঞ্চে। অবিশ্বাস্য আত্মঘাতী গোল হজম করল স্পেন। পেদ্রি মাঝমাঠ থেকে একটি লম্বা ব্যাকপাস দেন। পা দিয়ে সেই ব্যাকপাস রিসিভ করতে গিয়েই বিপত্তি ঘটালেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক সিমোনে। পা ফসকে বল জড়াল স্পেনের জালে। ১-০ গোলে এগিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া।
৩৮’– দুরন্ত কাউন্টার অ্যাটাক স্পেনের। ক্রোয়েশিয়ার বক্সে তখন স্প্যানিশ আর্মাডার ঝড়। গায়ার শট ক্রোট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ কোনমতে বাঁচালেও শেষরক্ষা হয়নি। ফিরতি বলে গোল করে স্পেনকে সমতায় ফেরালেন সোরাবিয়া। চলতি ইউরোয় দ্বিতীয় গোল।
*প্রথমার্ধে খেলার ফল ১-১*
৫৭’– আবার গোল স্পেনের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ক্রোয়েশিয়ার বক্সের ডানদিকে আক্রমণ শানাচ্ছিল স্পেন। যার ফল এল ম্যাচের ৫৬ মিনিটে। পেদ্রির পাস টোরেসকে। সেখান থেকে দুরন্ত ক্রস। স্প্যানিশ রাইটব্যাক অ্যাজপিলিকুয়েতা তখন ডিফেন্স ছেড়ে ক্রোয়েশিয়ার বক্সে। টোরেসের ক্রস থেকে গোল করে স্পেনের হয়ে ব্যবধান বাড়ান। ২-১ এগিয়ে গেল স্পেন।
৬৭’– গোলের সুবর্ণ সুযোগ ক্রোয়েশিয়ার। দুরন্ত সেভ সিমোনের। সমতায় ফিরতে ব্যর্থ ক্রোটরা।
৭৬’– এক টোরেসের পাস থেকে আরেক টোরেসের গোল। পরিবর্ত হিসেবে নেমে পাও টোরেসের লম্বা পাস ফেরান টোরেসকে। সামনে শুধু ক্রোয়েশিয়ার ভার্দিওল। তাঁকে টপকে দুরন্ত গোল ফেরান টোরেসের। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।
৮৫’– ব্যবধান কমাল ক্রোয়েশিয়া। স্প্যানিশ বক্সে কাট করে ঢুকে শট মদ্রিচের। সিমোনে প্রথমে বল বাঁচালেও, ফিরতি বলে প্রথমে বাডমিরের শট প্রতিহত হয়। ফের আরেকটি ফিরতি বলে গোল ওর্সিচের। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার ওর্সিচের বল গোললাইনের ভেতর থেকে ক্লিয়ার করেন। খেলার ফল ৩-২।
৯০’+ ২’– দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইমে ফের নজর কাড়লেন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা ওর্সিচ। তাঁর ক্রস থেকেই হেডে গোল প্যাসালিচের। সমতায় ফিরল ক্রোয়েশিয়া। খেলার ফল ৩-৩।
*নির্ধারিত সময় শেষ। খেলা গড়াল এক্সট্রা টাইমে*
১০০’– ইউরোর গ্রুপ ম্যাচে একের পর এক সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করে সমর্থকদের কাছে চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন মোরাতা। এদিন জ্বলে উঠলেন একস্ট্রা টাইমে।ড্যানিয়েল ওলমোর নিখুঁত ক্রস ক্রোট ডিফেন্ডারকে টপকে প্রথমে বুক দিয়ে বল নামিয়েই বাঁপায়ে বুলেটের গতিতে জোরালো শট মোরাতার। এগিয়ে গেল স্পেন। খেলার ফল ৪-৩।
১০৩’– ক্র্যামারিকের শট সিমোনে প্রতিহত করার পর দুরন্ত কাউন্টার অ্যাটাক স্প্যানিশ আর্মাডার। মোরাতার পাস ডানদিক ধরে দৌড়নো ওলমোকে। ফের ওলমোর নিখুঁত ক্রস। যেখান থেকে গোল করতে ভুল করেননি ওয়ার্জাবাল। ৫-৩ গোলে এগিয়ে গেল স্পেন।
*একস্ট্রা টাইমের প্রথমার্ধের খেলা শেষ*
দ্বিতীয়ার্ধে দুটি দলই গোলের সুযোগ তৈরি করলেও কেউ গোলের মুখ খুলতে পারেনি দুই গোলকিপারের সৌজন্যে।
অবশেষে ৫-৩ গোলে জয় পেয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল স্পেন। স্পেনের বিরুদ্ধে ক্রোয়োশিয়ার রেকর্ড বরাবরই খারাপ। এই নিয়ে ৯ বার মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। ৫ বারই স্পেনের কাছে হার হল মদ্রিচদের। এদিন আবার ম্যাচের আগে ক্রোয়োশিয়া শিবিরে এসে পৌঁছয় দুঃসংবাদ। করোনায় আক্রান্ত দলের সেরা স্ট্রাইকার পেরিসিচ। এদিন গোলের মুখ খুলতে ক্রোয়েশিয়া ভুগল পেরিসিচের অভাবে।
অন্যদিকে পরিবর্ত হিসেবে ওলমোকে মাঠে নামিয়ে বাজিমাত করলেন স্প্যানিশ কোচ এনরিকে। ওলমোর পাস থেকেই এদিন একস্ট্রা টাইমে দুটি গোল হয় স্পেনের।