এমি মার্টিনেজ। বাজপাখি নামেও ডাকা হয়। কেরিয়ারে অনেক গোলই বাঁচিয়েছেন। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ের সেই সেভ! বাঁ পায়ে কোলো মুয়ানির শট আটকে, তখনই যেন বিশ্বকাপ ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করে নেন। আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী এই গোলকিপার নিজেও জানেন সেই সেভের গুরুত্ব। বাঁ পায়ের যে জায়গা দিয়ে শট বাঁচিয়েছেন, সেখানে করিয়েছেন সেই সেভের ট্যাটু। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হার, প্রত্যাবর্তন, ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতা, সতীর্থ লিও মেসির সঙ্গে মাঠের বাইরে রসায়ন। তিনদিনের কলকাতা সফরে রিষড়ায় একটি অনুষ্ঠানের মাঝে TV9Bangla Sports-কে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বজয়ী এই কিপার। এমির মুখোমুখি আমাদের প্রতিনিধি কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিশ্বকাপ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে কোলো মুয়ানির সেই শট সেভ নিয়ে কী বলবেন?
বড় মুহূর্ত। এরকম সেভ হয়তো আগেও অনেক করেছি। তবে সেই মুহূর্তে সেভটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ম্যাচের তখন কিছু সময় বাকি। গোল খেলে বিশ্বকাপ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারতো। টাইব্রেকারেও একটা সেভ করেছি। আমাদেরও একটা কাউন্টার অ্যাটাক ছিল। লাওতারো মার্টিনেজের হেডার গোলে ঢুকলে তখনই হয়তো আমাদের জয় নিশ্চিত হয়ে যেত। প্রবল চাপের পরিস্থিতি ছিল। বিশ্বকাপ জেতার পর সেই সেভটা নিয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছিল।
মাঠে লিও মেসির সঙ্গে আপনার সু-সম্পর্ক কার্যত সকলেরই জানা। মাঠের বাইরে মেসির সঙ্গে রসায়ন কী?
আমরা খুবই ভালো বন্ধু। দু-জনই পেশাদার ফুটবলার। তবে মাঠের বাইরে আমাদের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে মিল রয়েছে। আমরা খুব ভালো ফ্যামিলি ম্যান। দু-জনকেই খুব কম বয়সে আর্জেন্টিনা ছাড়তে হয়েছিল। নিজেদের স্বপ্ন তাড়া করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। মেসির কেরিয়ারে বিশ্বকাপ ছাড়া সবই ছিল। দেশের পাশাপাশি ওর জন্য সেরা ট্রফিটা জিততে পেরে খুবই আনন্দিত। মেসির জন্য গোল বাঁচানো আমার কাছে গর্বের বিষয়।
আপনি হয়তো জানেন, আন্তর্জাতিক ফুটবলে মেসির নেতৃত্বের অভিষেক হয়েছিল এই শহরেই। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন হল, মেসিকে কলকাতা সফর নিয়ে কী বলবেন?
আমি ভারত এবং কলকাতাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি। এই মুহূর্তে রিষড়ায় বসে আছি। সকলে যে ভাবে আমাকে দেখছে, অনেকে জানলা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে, আমার খুবই ভালো লাগছে। এটা পুরোপুরি ভিন্ন অভিজ্ঞতা। আশা করছি, মেসি ও বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনা দলকে নিয়ে এখানে ফের আসবো এবং ম্যাচও খেলব।
প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হার। অনেকেই হয়তো প্রত্যাশা করেনি, আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিততে পারে। ড্রেসিংরুমে কোচ লিওনেল স্কালোনি এবং অধিনায়ক লিও মেসি সকলকে কী বার্তা দিয়েছিলেন?
সত্যি বলতে, কোনও বার্তাই নয়। ম্যাচের পর দশ মিনিট আমরা কেউ কোনও কথা বলতে পারিনি। এমনকি হোটেলে ফিরেও সকলে শান্ত ছিলাম। কিছু বলার ভাষা খুজে পাচ্ছিলাম না। পরদিন ট্রেনিং সেশনে কোচ আমাদের বলেন, অতীত ভুলে সামনের ম্যাচগুলো জেতো।
সময় খুবই কম, আপনার কাছে শেষ প্রশ্ন। ভবিষ্যতে মেসির কাছে আপনার কী প্রত্যাশা থাকবে?
ও নতুন ক্লাবে যাচ্ছে। কিছুদিন আগেই আমরা একসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচ খেলেছি। বরাবরের মতোই পারফরম্যান্সে সবাইকে মুগ্ধ করেছে। মেসি আজীবন ম্যাজিশিয়ানই থাকুক, এর বেশি কিচ্ছু চাই না।